Complaints of broken new drain, construction with low quality materials : পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার কালীবাড়ি বাজারে ইউ ড্রেন নির্মাণকে ঘিরে শুরু হয়েছে চরম বিতর্ক। ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ড্রেনের কাজ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামিয়া এন্টারপ্রাইজ ও বিশ্বাস লিমিটেড নামে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাজেদুল রহমান ও মনজুরুল ইসলাম এই কাজের দায়িত্বে থাকলেও, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত পাথর, রড এবং অন্যান্য উপকরণ নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে এই অনিয়ম ঢেকে রাখা হচ্ছে।
পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান স্বীকার করেছেন যে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কারণে তিনি সরাসরি কিছু বলতে পারেননি। তবে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। অন্যদিকে, পৌরসভার আরেক প্রকৌশলী খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে নতুন সামগ্রী এনে কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে।
ঠিকাদার সাজেদুল রহমান দাবি করেছেন, তার নামে কাজ হলেও আসলে এই ড্রেন নির্মাণে এমপির পুত্র ইবনুল হাসান শাকিল এবং ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান আরিফ জড়িত। তারা এই কাজ পরিচালনা করেছেন। তবে, শাকিল পলাতক এবং আরিফ দেশের বাইরে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণের ফলে একাধিক স্থানে ড্রেন ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হবে এবং স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় প্রকল্পে কীভাবে এই ধরনের অনিয়ম হতে পারে?

পাবনার ভাঙ্গুড়া একটি ক্ষুদ্র কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভা। এখানে কৃষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসার উপর মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষত বর্ষাকালে। কিন্তু নিম্নমানের ড্রেনের কারণে পানি জমে গিয়ে জলাবদ্ধতার সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে।
এই ড্রেন নির্মাণের অনিয়ম ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে। নিম্নমানের ড্রেন ভেঙে গেলে রাস্তা এবং ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হবে। সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা না থাকলে জনগণের আস্থা কমে যাবে।
স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। এই ধরনের প্রকল্পে জনগণের মতামত এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত। প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে এবং পরে স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করা দরকার। পৌরসভার কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ইউ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পটি শুধু একটি ড্রেন নির্মাণের ঘটনা নয়, এটি আমাদের সিস্টেমের একটি আয়না। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় নির্মিত এই ড্রেন তাদেরই ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে।