Busy Park Street at Christmas, heavy police surveillance:বড়দিন উপলক্ষে কলকাতার পার্কস্ট্রিট আবারও মেতে উঠেছে আলোর রোশনাই ও উৎসবের আনন্দে। শহরের অন্যতম জনপ্রিয় এই এলাকায় বড়দিনের দিন মানুষের ঢল নেমেছে। রাস্তায় সাজানো আলোকমালা, হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলির জমজমাট পরিবেশ এবং রাস্তার ধারে সাজানো ক্রিসমাস ট্রি গোটা এলাকা উৎসবের এক অনন্য রূপ দিয়েছে। তবে এই বিশাল ভিড় সামাল দিতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কলকাতা পুলিশ এবার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।লালবাজারের সূত্র অনুযায়ী, বড়দিনের দিন পার্কস্ট্রিট এবং চিড়িয়াখানার মতো ভিড়ভাট্টা এলাকায় প্রায় ২০০০ অতিরিক্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। শহরের প্রতিটি থানার পুলিশ বাহিনীও ভিড় সামাল দিতে রাস্তায় রয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, “নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৮ জন উপ-নগরপাল, ৩০ জন সহকারী নগরপাল, ২৭ জন ইনস্পেক্টর এবং ২৫০ জন সাব-ইনস্পেক্টর মোতায়েন করা হয়েছে। পার্কস্ট্রিটে ১১টি নজরমিনার বসানো হয়েছে।”
এছাড়া, ৪০টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে মহিলা পুলিশ মোতায়েন রয়েছেন। সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং হাজার হাজার সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি করা হচ্ছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পার্কস্ট্রিটসহ তিনটি জায়গায় কুইক রেসপন্স টিম মোতায়েন রয়েছে।উৎসবের দিনগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘উইনার্স টিম’ এবং মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, মধ্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষত যেখানে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেশি, সেখানে সাদা পোশাকের পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।গত কয়েক সপ্তাহে শহরতলি ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড এবং জঙ্গি ধরপাকড়ের ঘটনার কারণে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কারণে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বাড়ায় কলকাতা পুলিশ নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, “বড়দিন এবং বর্ষবরণ উপলক্ষে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।”পার্কস্ট্রিটে ভিড় জমিয়েছেন শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজন। এক স্থানীয় বাসিন্দা রূপা দত্ত বলেন, “প্রতি বছর বড়দিনের দিন পার্কস্ট্রিটে আসা আমাদের পরিবারের একটি ঐতিহ্য। এখানে আলো, সঙ্গীত, এবং খাবারের পরিবেশ সত্যিই অসাধারণ। পুলিশি ব্যবস্থাপনা খুব ভালো হয়েছে, আমরা নিরাপদ বোধ করছি।”
বিদেশি পর্যটকদের মধ্যেও পার্কস্ট্রিটের এই উৎসবের আনন্দ বিশেষভাবে জনপ্রিয়। একজন পর্যটক লিন্ডা স্মিথ বলেন, “কলকাতার বড়দিন উদযাপন খুবই প্রাণবন্ত। এত ভিড়েও কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা দেখলাম না। পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংসনীয়।”বড়দিনের এই উৎসব স্থানীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। রেস্তোরাঁ, হোটেল, এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য এই সময়টি অত্যন্ত লাভজনক। বিশেষ করে, পার্কস্ট্রিটের রেস্তোরাঁগুলিতে আগে থেকেই বুকিং সম্পূর্ণ হয়ে গেছে।স্থানীয় ব্যবসায়ী অমল বসু জানান, “বড়দিন আমাদের ব্যবসার জন্য সেরা সময়। পার্কস্ট্রিটে ভিড় বাড়লে আমাদের বিক্রিও বাড়ে। পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকা ভালো হলে এই সময়ে ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালানো যায়।”