Blue-eyed dog’s video sparks outrage Netpara: কালো বা বাদামি নয়, একেবারে উজ্জ্বল নীল চোখ, সেই সঙ্গে বাদামি পশমে ঢাকা সুন্দর এক শরীর, মুখটা এতটাই মায়াভরা যেন কোনো শিশু চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে আর চুপিচুপি কিছু বলবে বলে ভাবছে—এইরকম একটা দৃশ্য যখন আপনার চোখের সামনে এসে পড়ে তখন আপনি থেমে যাবেনই, আপনি দেখতেই থাকবেন, আর সারা মন দিয়ে শুধু তাকিয়ে থাকবেন ওই চোখ দুটোর দিকে, যেগুলো যেন কথা বলে, যেগুলো যেন আপনাকে কিছু বোঝাতে চায়, কিছু জিজ্ঞাসা করতে চায়, আর এইভাবেই সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে এক অনন্য কুকুরের ভিডিও। ‘নেচার ইজ অ্যামেজিং’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে এক ঘরের ভিতরে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি কুকুর, দেখতে একেবারে নেকড়ের মতো—গায়ের বাদামি পশম, ঠাণ্ডা চোখ, চুপচাপ ভাব, কিন্তু সেই চোখের রঙ—উজ্জ্বল নীল, যেটা সাধারণ কুকুরের ক্ষেত্রে একেবারেই অস্বাভাবিক এবং একারণেই এই কুকুরটি এক মুহূর্তে জনপ্রিয়তার শিখরে উঠে পড়ে। কুকুরটি ক্যামেরার দিকে সরাসরি তাকিয়ে আছে, যেন তার চোখ দুটো দিয়ে সে কথা বলছে, আর সেই চাহনিতে এমন এক ধরনের আকর্ষণ রয়েছে যা যে কোনও দর্শককে মুগ্ধ করে দেবে। ভিডিওটিতে আরও দেখা গেছে, এক মহিলা তার সামনে দাঁড়িয়ে কুকুরটির সঙ্গে কথা বলছেন, তার হাতে একটি ব্রাশ এবং সেই ব্রাশ দেখিয়ে তিনি সম্ভবত কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন, আর কুকুরটি নিজের মতো করে তাতে সাড়া দিচ্ছে, মাথা নাড়াচ্ছে বা চোখের চাহনি বদলাচ্ছে, যেন তার মধ্যে মানুষের মতোই একটা আবেগ কাজ করছে।
ভিডিওটি পোস্ট হওয়ার পর থেকে লাখ লাখ মানুষ সেটি দেখে ফেলেছেন, হাজার হাজার মানুষ কমেন্ট করেছেন, কেউ লিখেছেন, “এই চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলে মন ভালো হয়ে যায়”, কেউ আবার লিখেছেন, “এ তো মনে হচ্ছে কেউ আমাদের ভেতরের কথা বোঝে, আমাদের মন পড়ে নিতে পারে।” কেউ কেউ তো এই কুকুরটিকে ‘Heavenly Pup’ বলে ডাক দিয়েছেন। নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন এই কুকুরটি সম্ভবত সাইবেরিয়ান হাস্কি জাতের, আবার কেউ বলছেন এটি কোনও মিশ্র জাতের কুকুর যার মধ্যে নেকড়ের জিন রয়েছে। উল্লেখ্য, সাইবেরিয়ান হাস্কি হল একটি শীতল অঞ্চলের কুকুর প্রজাতি, মূলত সাইবেরিয়া ও আলাস্কা অঞ্চলে দেখা যায়। এদের চেহারা নেকড়ের মতো হলেও স্বভাব অনেকটাই শান্ত, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং পরিবারের প্রতি ভীষণ অনুগত। সাধারণত এদের চোখের রং হয় নীল, হালকা বাদামি বা এক চোখ নীল, এক চোখ বাদামি (যাকে বলে হেটেরোক্রোমিয়া)। তবে এই ভিডিওতে যেটি দেখা যাচ্ছে তা এতটাই নিখুঁত, এতটাই স্বাভাবিক এবং সুন্দর যে কেউ কেউ মনে করছেন এটি হয়তো কোনোভাবে ডিজিটালি মডিফাই করা হয়েছে, বা AI-এর সাহায্যে বানানো হয়েছে।

যদিও এখনো পর্যন্ত এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি এবং এটি কোথায় ধারণ করা হয়েছে তাও জানা যায়নি, তবে ভিডিওটি দেখে যে এক অদ্ভুত শান্তি অনুভব করছেন দর্শকেরা, তা স্বীকার করছেন সকলেই। ভিডিওটি ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। কেউ বলছেন এই ভিডিও এক ধরনের থেরাপিউটিক এফেক্ট সৃষ্টি করছে – মানে যারা মানসিক চাপ বা একাকীত্বে ভুগছেন, তারা এই কুকুরটির চোখের দিকে তাকিয়ে একধরনের স্বস্তি বা ভালোলাগা অনুভব করছেন। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, “মানুষের চোখ যেমন আবেগ বহন করে, তেমনই প্রাণীদের চোখও অনেক সময় তাদের মনের কথা প্রকাশ করে দেয়। এই ভিডিওটির কুকুরটির চোখে যে আবেগ, তা সত্যিই অস্বাভাবিক এবং সেটাই মানুষকে আকৃষ্ট করছে।” অন্যদিকে পশুপ্রেমীদের মতে, “এই ধরনের ভিডিও আমাদের শেখায় যে, প্রাণীরাও অনুভব করতে পারে, ভালোবাসতে পারে, তাদের চোখেও প্রেম, কষ্ট, আনন্দ—সব কিছু থাকে, শুধু আমরা অনেক সময় সেটা বুঝতে পারি না।” কুকুরটি নেকড়ের মতো দেখতে হলেও তার আচরণ এতটাই কোমল, শান্ত এবং নিরীহ যে তার প্রতি সহানুভূতি জন্মানো খুবই স্বাভাবিক। সমাজমাধ্যমে এমন ভিডিও ভাইরাল হওয়া এখন সাধারণ ব্যাপার হলেও কিছু কিছু ভিডিও সত্যিই আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই কুকুরটির ভিডিও যেমন, যেটা শুধু মানুষকে বিনোদন দেয়নি, বরং তার চোখের ভাষায় যেন একটা অন্যরকম সংযোগ তৈরি হয়েছে দর্শকের সঙ্গে। ভিডিওটি দেখে অনেকে বলছেন, “আমার মন খারাপ ছিল, কিন্তু এই ভিডিও দেখে মনটা হালকা লাগছে”, আবার কেউ লিখেছেন, “আমি নিজেও একটা হাস্কি নিতে চাই এখন, এমন একটা চোখ চাই যে চোখে আমি প্রতিদিন আমার ভালোবাসা খুঁজে পাব।” পশুপ্রেমী সংগঠনগুলিও এই ভিডিওটির প্রশংসা করেছে এবং বলেছে, “এরকম ভিডিও যদি আরও বেশি মানুষ দেখে, তাহলে কুকুর বা অন্যান্য পোষ্য প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং যত্ন আরও বাড়বে।” তবে অন্যদিকে প্রযুক্তিবিদেরা কিছুটা চিন্তিত – কারণ এই ধরনের অত্যন্ত নিখুঁত এবং বাস্তব ভিডিও যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে মানুষ ভবিষ্যতে বাস্তব এবং কল্পনার মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে না, যেটা একটি বড় সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যাই হোক, এই মুহূর্তে ভিডিওটি মানুষের মন জয় করে নিয়েছে, সারা নেটপাড়া জুড়ে শুধু তারই কথা, সেই নীল চোখ, সেই চাহনি, আর সেই শান্ত আচরণ – সব মিলিয়ে একটা নিরব অথচ গভীর প্রভাব ফেলে দিয়েছে মানুষের মনে। ‘খবর বাংলা’র পক্ষ থেকে আমরা বলব, এই ভিডিও দেখলে মন খারাপ মানুষও একটুখানি হেসে ফেলবে, কারণ এমন চোখ যে শুধু দেখা যায় না, অনুভবও করা যায়।