BJP’s program in Durgapur prepares the gallows:আজ, আরজি কর মামলার রায় ঘোষণার দিন। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন। মামলাটি শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। ৯ আগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হল থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। সেদিন রাতে হাসপাতালেই ডিউটি করছিলেন ওই চিকিৎসক। এই নির্মম ঘটনা সারা দেশকে শোকস্তব্ধ করে দেয় এবং জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।
দুর্গাপুরে আজকের দিনটি ছিল আরও বিশেষ। বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা চন্ডিদাস বাজারে এক অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করে। তাঁরা রীতিমতো একটি ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করেন এবং “তিলোত্তমার বিচার চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই” এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠেন। দলের যুব মোর্চার জেলা নেতা পারিজাত গাঙ্গুলির নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পরিচালিত হয়। পারিজাত গাঙ্গুলি বলেন, “আমরা চাই এই নির্মম অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ শাস্তি পাক। এটাই আমাদের সমাজের প্রতি ন্যায়বিচার।”
দুর্গাপুর পূর্বের বিজেপি নেতৃত্বের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি জনগণের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চন্ডিদাস বাজারে নির্মিত ফাঁসির মঞ্চ প্রতীকী হলেও এটি জনগণের আবেগের প্রতিফলন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “আমরা আশা করি, আদালত এমন শাস্তি দেবে যা ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।”
এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই, এবং মাত্র দুই মাসের মধ্যেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিচার প্রক্রিয়ার গতি দেখে সাধারণ মানুষ এবং সমাজকর্মীরা আশাবাদী। এই ঘটনার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ হয়েছিল, এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাস্তায়, সর্বত্রই মানুষ আওয়াজ তুলেছিল। অনেকেই বলেন, “তিলোত্তমার জন্য ন্যায়বিচার মানে শুধু অভিযুক্তের শাস্তি নয়, বরং আমাদের সমাজে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া।”
পারিজাত গাঙ্গুলি আরও বলেন, “আমাদের আজকের কর্মসূচি শুধুমাত্র একটি প্রতিবাদ নয়, এটি একটি বার্তা। আমরা চাই প্রশাসন এবং বিচার ব্যবস্থা শক্ত হাতে এই অপরাধীদের শাস্তি দিক।” বিজেপি কর্মীদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। অনেকেই বলছেন, এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ, কারণ এমন ঘটনাগুলি জনগণের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জরুরি।
অন্যদিকে, সমাজকর্মীদের একটি অংশ মনে করেন, এই ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি মানুষের মধ্যে আরও সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে। একটি মহিলা চিকিৎসকের এমন পরিণতি আমাদের সমাজের অন্ধকার দিকটি প্রকাশ করে। সেই সঙ্গে, জনগণের প্রতিবাদই আসল শক্তি, যা প্রশাসনকে বাধ্য করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে।
বিজেপির এই কর্মসূচির পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দারা চান সমাজে নারীদের নিরাপত্তার জন্য আরও কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক। দুর্গাপুরের রাস্তায় আজ সাধারণ মানুষও প্রতিবাদে শামিল হন। একজন মহিলা ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা মেয়েদের নিরাপত্তা চাই। এই ধরনের নির্মম অপরাধ আর যেন না ঘটে।”
শিয়ালদহ আদালতে আজকের রায় কী হবে, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ এবং আশা দুই-ই রয়েছে। অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হলে এটি দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বাড়াবে। তবে, এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে আমাদের সমাজ এবং প্রশাসনের একত্রে কাজ করা প্রয়োজন।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। শুধুমাত্র কঠোর আইন নয়, বরং শিক্ষার মাধ্যমেও সচেতনতা বাড়াতে হবে। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি যেমন একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে, তেমনি এটি আমাদের সবাইকে ভাবতে বাধ্য করেছে যে, আমরা কীভাবে একটি নিরাপদ এবং ন্যায়বিচারসম্মত সমাজ গড়ে তুলতে পারি।