Sunday, May 11, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যকাশ্মীরের ঘটনায় বনগাঁয় প্রতিবাদ মিছিল বিজেপি এবং বামেদের

কাশ্মীরের ঘটনায় বনগাঁয় প্রতিবাদ মিছিল বিজেপি এবং বামেদের

BJP and Left hold protest march in Bangaon over Kashmir incident:-কাশ্মীরের পাহেলগাঁওতে ঘটে যাওয়া নৃশংস জঙ্গি হামলায় যখন গোটা দেশ শোকস্তব্ধ, ঠিক তখনই উত্তর ২৪ পরগনার শান্তশিষ্ট শহর বনগাঁ যেন হঠাৎই রাস্তায় নেমে এলো ক্ষোভের আগুন নিয়ে—বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একদিকে যখন বিজেপি নেতৃত্বে শহরের রামনগর রোড মুখ থেকে শুরু হয় উত্তাল প্রতিবাদ মিছিল, অন্যদিকে বামফ্রন্টের সিপিএমও বসে নেই, তারাও বেঁধে ফেলে তাদের তরফে আলাদা প্রতিবাদ কর্মসূচি, এই দুই রাজনৈতিক দলের আলাদা আলাদা মিছিল যেন একজোট হয়ে মিশে যায় একটাই বার্তায়—

Screenshot202025 04 2520194741

“জঙ্গি হামলার জবাব চাই”, পাহেলগাঁওতে আইবি অফিসার সহ একাধিক নিরীহ পর্যটককে নিশানা করে সন্ত্রাসবাদীরা যখন গুলি চালায়, তখন শুধু প্রাণ যায়নি, সঙ্গে ছিন্নভিন্ন হয়েছে অনেকের বিশ্বাস, নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা, আর সেইই ক্ষোভ যেন আজ জ্বলে উঠল বনগাঁর বুকে, বিজেপির মিছিলে নেতৃত্বে ছিলেন বনগাঁ উত্তর বিধানসভার বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, তাঁকে ঘিরে ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এবং কর্মীরা, রামনগর রোডের মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিল যায় বাটার মোড় পর্যন্ত, পথ চলতে চলতে জমে ওঠে স্লোগান, “জঙ্গি হামলার জবাব চাই,” “ভারতের মাটি রক্তে রঞ্জিত কেন?” এর মাঝেই এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদদের স্মরণ করা হয়, পাশাপাশি জ্বালানো হয় মোমবাতি, আর প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে পোড়ানো হয় পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা, বিজেপির তরফে বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া জানান, “এই হামলা ভারতের উপর আঘাত, এর পেছনে পাকিস্তানের হাত স্পষ্ট, তাই আজ আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি, দেশবাসী একত্রিত হলে এর যোগ্য জবাব দেওয়া সম্ভব,” শুধু বিজেপি নয়, শহরের আরেক দিক থেকে তখন শুরু হয়েছে সিপিএম পার্টি অফিস থেকে বামেদের প্রতিবাদ মিছিল, তাদের হাতে ব্যানার, লাল পতাকা আর মুখে প্রতিবাদের ভাষা, বনগাঁ শহরের রাজপথ ধরে তারা জানিয়ে দিল, “সন্ত্রাসের রাজনীতি চলতে পারে না, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত কাশ্মীরে পর্যটকদের সুরক্ষা নিয়ে এখনই ভাবা,” তাদের বক্তব্যে আরও উঠে আসে, “আজ বিজেপি সরকার যেভাবে দেশ চালাচ্ছে, তাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট,” দু’টি রাজনৈতিক শিবির, দুটি ভিন্ন মতাদর্শ—

তবু এই একমাত্র ক্ষেত্রে দু’জনেই একসঙ্গে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, এ যেন রাজনীতি ছাড়িয়ে দেশপ্রেমের আবেগ, দুই মিছিলেই ছিল শহরের বিভিন্ন স্তরের মানুষ, কেউ শিক্ষক, কেউ ছাত্র, কেউ ব্যবসায়ী—তাদের কারও কারও চোখে জল, কারও চোখে আগুন, যেন সবাই একজোট হয়ে বলতে চায়, “আমরা আর চুপ থাকব না,” এই মিছিলের রেশ ছড়িয়ে পড়ে বনগাঁ শহরের অলিগলিতেও, বয়স্করাও বলেন, “আমরা অনেক কিছু দেখেছি, কিন্তু এই জঙ্গি হামলা আর পর্যটকদের হত্যা—এটা আমাদের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে,” স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারাও সেদিন রাজপথে দেখা যায়, কেউ হাতে পোস্টার নিয়ে, কেউ চুপচাপ মোমবাতি হাতে, বনগাঁর মতো ছোট শহরে এই ভাবে প্রতিবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে এক নতুন বার্তা, প্রশ্ন উঠেছে—

Screenshot202025 04 2520194721

“আর কত প্রাণ গেলে জবাব আসবে?” বনগাঁর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, “এই প্রতিবাদ শুধুই দলের নয়, এটা জনগণের অভিমত, যেখানে বাম আর ডান একসঙ্গে দাঁড়াচ্ছে, বুঝতে হবে মানুষের আবেগ কতটা গভীর,” পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুই মিছিলই শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে, নিরাপত্তার দিকেও নজর রাখা হয়েছে, এখন প্রশ্ন—এই প্রতিবাদ আদৌ কতটা কানে যাবে কেন্দ্রের বা রাজ্যের প্রশাসনের? পাহেলগাঁও হামলার নেপথ্যে থাকা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কি ত্বরান্বিত হবে? এই হামলায় নিহত পুরুলিয়ার আইবি অফিসার মনীশ রঞ্জনের মৃত্যুর পরও যদি রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল টুইটে সীমাবদ্ধ থাকে, তবে এই মিছিলগুলো যে শুধুই গলা ফাটানো হয়ে রইবে, তা বুঝে নিতে কারও বাকি নেই, বনগাঁর আজকের এই প্রতিবাদ তাই শুধু একটা শহরের নয়, এটা এক রূপক, যেখানে বাংলার মাটি থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এক বলিষ্ঠ আওয়াজ উঠেছে, একটাই দাবি—নিরাপত্তা দাও, জবাব দাও, আর শহীদের আত্মার প্রতি সম্মান জানাও।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments