At the end of the day, fate gave Ahela a tool : “জ্যোতিষ কথাতে পাথর পরলে নাকি ভাগ্য বদলানো যায়। কিন্তু আদৌ কি তা সত্যি? তবে হ্যাঁ, পাথর পড়লে ভাগ্য বদলাক আর না বদলাক, তাতে কি? এখন তো দেখা যাচ্ছে, পাথর না পরেই বদলে যাচ্ছে ভাগ্য!” — ঠিক এই ভাবনাটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সারা রোমানিয়া সহ বিশ্বের নানা কোণায়, এক আশ্চর্য সত্য ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর। ঘটনাটি একেবারে সিনেমার মতো — রোমানিয়ার এক সাধারণ গৃহবধূ, যাঁর নাম স্থানীয় প্রশাসনের গোপনীয়তার কারণে এখনও প্রকাশ করা হয়নি, নিজের বাড়ির দরজার নিচে বাতাস ঢোকা আটকাতে যে পাথরটি রেখে দিয়েছিলেন, সেই পাথরই একদিন তাঁর জীবন ও রোমানিয়ার ইতিহাসে লিখে দিল এক নতুন অধ্যায়। ৩.৫ কেজি ওজনের, লালচে রঙের সেই পাথরটি দিনের পর দিন পড়ে ছিল অবহেলায়, অথচ সেই অবহেলিত পাথরটি একদিন বিশ্লেষণ করে জানা গেল, সেটি কোনও সাধারণ পাথর নয়, বরং এটি একটি বিরল রত্ন—প্রাকৃতিক রুবি! রত্নবিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে বলেন, এই রুবিটি আনুমানিক ৩৮ থেকে ৭০ মিলিয়ন বছর পুরনো, আর তার বাজারদর প্রায় ১.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় দাঁড়ায় প্রায় ৯ কোটি টাকা! তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল, এত বড় মূল্য জানার পরেও ওই মহিলা সেই রুবিটি বিক্রি করেননি। বরং তিনি নিঃস্বার্থভাবে সেটিকে তুলে দিয়েছেন রোমানিয়া সরকারের হাতে। সরকার সেটিকে ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে ঘোষণা করে রোমানিয়ার জাতীয় জাদুঘরে
স্থান দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত পুরনো ও বিশাল ওজনের রুবি সচরাচর পৃথিবীর কোথাও আর মেলে না। এই আবিষ্কারের ফলে রোমানিয়ার খনিজ ইতিহাসে নতুন আলো পড়েছে, এবং দেশের ঐতিহ্যশালী সংগ্রহশালার মানও অনেকটা বেড়েছে। রত্নটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে খনিজ বিশেষজ্ঞ ডঃ আন্দ্রে ভাসিলেস্কু বলেন, “এটি শুধু একটি রুবি নয়, এটি প্রকৃতির এক জীবন্ত দলিল। এর মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর গঠন প্রক্রিয়া এবং ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি।” সরকারও মহিলার এই উদার মানসিকতা ও দেশপ্রেমের প্রশংসা করেছে। তাঁকে দেওয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা ও একটি বিশেষ পুরস্কার, যাতে ভবিষ্যতেও মানুষ নিজের দেশের স্বার্থে এই ধরনের উদাহরণ স্থাপন করতে উৎসাহ পায়। রোমানিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, “এই মহিলার মনোভাব সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি চাইলে এটি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা অর্জন করতে পারতেন, কিন্তু তিনি জাতীয় ঐতিহ্যকে বেছে নিয়েছেন। আমরা তাঁকে সম্মান জানাই।” এই ঘটনার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, “এটাই প্রকৃত দেশভক্তি”, আবার অনেকে বলছেন, “কোনও জ্যোতিষ বা টোটকা নয়, ভাগ্য বদলের আসল চাবিকাঠি হল সততা ও ভালোবাসা।” ঘটনাটি অনুপ্রেরণার নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছে। আমাদের দেশে বহু মানুষ রত্ন ও পাথরের উপর বিশ্বাস রাখেন। কেউ কেউ রত্ন পরে ভাগ্য ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রোমানিয়ার এই ঘটনাটি দেখিয়ে দিল, পাথরের আসল ক্ষমতা শুধু শরীরে ধারণ করলেই নয়, তার মধ্যে নিহিত ইতিহাস ও মূল্য বুঝতে পারলেই জীবনের

চাকা ঘুরে যেতে পারে। সংবাদমাধ্যমের তরফে আমাদের ‘খবর বাংলা’ প্রতিনিধির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ঐ মহিলা। অনুবাদক মারফত তিনি বলেন, “আমি জানতাম না এই পাথর এতটা মূল্যবান। যখন জানতে পারলাম, তখন মনে হল এটা আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, বরং আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিই, এটিকে সবার জন্য তুলে দিতে হবে।” তাঁর এই বক্তব্য শুনে আবেগে ভেসেছেন অনেকেই। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কাছে এই ঘটনা একটি অনন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে গবেষণা, প্রেজেন্টেশন এবং সমাজচেতনা গঠনের কাজ শুরু করেছেন। এমনকি রোমানিয়ার কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল ইতিমধ্যেই মহিলার জীবন ও পাথরের রহস্য নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করে দিয়েছে। গবেষকরা বলছেন, পাথরটির আসল মূল্য ঠিক কত, তা এখনই বলা কঠিন। কারণ এটির মধ্যে নানা খনিজ উপাদান ও পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্ব রয়েছে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। রোমানিয়ার ‘ন্যাশনাল হেরিটেজ বোর্ড’ এর মতে, এই পাথর এখন শুধু রোমানিয়ার নয়, বরং গোটা ইউরোপের জন্য এক ঐতিহাসিক সম্পদ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকেই তাঁদের ঘরের কোণায় পড়ে থাকা জিনিসগুলির দিকে নতুন করে নজর দিতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, “আমাদের বাড়িতেও হয়তো এমন কিছু লুকিয়ে আছে, যার খবরই আমরা জানি না।” সোশ্যাল মিডিয়াতে হ্যাশট্যাগ #DestinyStone ও #RubyFromDust এখন ট্রেন্ডিংয়ে। বাংলার মানুষরাও এই ঘটনার তুলনা করছেন নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে। বাংলা লোককথায় বহুবার উঠে এসেছে, “পড়ে থাকা জিনিস কখনও হালকা করে দেখা যায় না।” সেই কথাই যেন বাস্তব হয়ে উঠল রোমানিয়ার এই ঘটনায়। রত্নের খোঁজ, সততা, দেশপ্রেম আর ভাগ্য—সব মিলে এক অপূর্ব গল্পের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে শিক্ষা পাওয়া যায় যে, প্রত্যেক জিনিসের মধ্যে একটা গল্প থাকে। কখনও তা ধরা পড়ে, কখনও থেকে যায় অজানা। তবে “দিনশেষে অবহেলার পাথরও বদলে দিতে পারে ভাগ্য”—এই সত্যিটা আজ প্রমাণিত।