Anubrata-Kajal team up again to recover the bomb! বীরভূম জেলার রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর এলাকা অনুব্রত-কাজল গড়ে ফের উদ্ধার হল বিপুল সংখ্যক তাজা বোমা। রবিবার সকালে মারগ্রাম থানার অন্তর্গত তপন গ্রামের সেচ ক্যানালের পাশের এক চাষের জমি থেকে প্লাস্টিকের বালতিতে রাখা প্রায় ৬-৭টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। সকালে চাষের কাজে বেরিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বোমাগুলি দেখতে পান, এরপর সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় মারগ্রাম থানার পুলিশকে।
খবর পেয়েই বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকা ঘিরে ফেলে এবং সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়। দ্রুত ঘটনাস্থলে CID-র বম্ব স্কোয়াডকে খবর পাঠানো হয়, যাতে বোমাগুলি নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই ঘটনাকে ঘিরে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে, বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটায় তাঁরা উদ্বিগ্ন।এই ঘটনার পরেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বারবার বীরভূমের এই অংশে কেন এত পরিমাণ বোমার হদিস মিলছে? এর আগেও একাধিকবার এই এলাকায় বোমা উদ্ধার হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন এখনও পর্যন্ত এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ পুরোপুরি রুখতে ব্যর্থ।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রায়ই শুনি এখানে-ওখানে বোমা মেলে, কিন্তু দোষীরা ধরা পড়ে না। আমরা সাধারণ মানুষ, চাষবাস করি, এই আতঙ্কের মধ্যে আর কতোদিন থাকব?” অন্যদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “কী উদ্দেশ্যে এই বোমাগুলি রাখা হয়েছিল এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”বীরভূম জেলা বরাবরই রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে উত্তপ্ত থাকে। একাধিকবার তৃণমূল ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে দাঙ্গা এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগেই একই জেলায় অন্য একটি জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল। ফলে, এই ঘটনায় রাজনৈতিক যোগ আছে কি না, সে বিষয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। এক বিরোধী নেতা কটাক্ষ করে বলেন, “এই বোমাগুলি কারা মজুত করছে, তা সবাই জানে, কিন্তু পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। এটা নতুন কিছু নয়।” যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “এটি বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। আমাদের দলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই।”
বোমা উদ্ধারের এই ঘটনা সাধারণ মানুষের জীবনে একটা বড় প্রভাব ফেলছে। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং চাইছেন, প্রশাসন দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নিক। অনেকের বক্তব্য, এলাকার কিছু দুষ্কৃতী বারবার এই ধরনের বেআইনি কাজ করে চলেছে এবং প্রশাসন যথেষ্ট কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেই বারবার এই ঘটনা ঘটছে। একজন প্রবীণ গ্রামবাসী বলেন, “এই এলাকায় আমরা শান্তিতে থাকতে চাই, কিন্তু বারবার বোমা উদ্ধার হলে কীভাবে নিশ্চিন্তে থাকব?”CID-র বোম্ব স্কোয়াড দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এই বোমাগুলি কারা রেখেছে এবং এর পিছনে কোনও বড় ষড়যন্ত্র আছে কি না। পুলিশের এক আধিকারিক জানান,
“এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এর পেছনে বড় চক্রান্ত থাকতে পারে। আমরা তদন্ত করছি, দোষীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।” তবে সাধারণ মানুষ এই ঘটনায় কতটা স্বস্তি পাবেন, তা সময়ই বলবে।এই ঘটনা আবারও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বীরভূমের একাধিক জায়গায় নিয়মিত এই ধরনের ঘটনা ঘটায় মনে করা হচ্ছে, পুলিশ যথাযথ নজরদারি চালাচ্ছে না। বিশেষ করে, রাজনৈতিক দাঙ্গা এবং গোলাগুলির আশঙ্কা বরাবরই থাকে এই জেলায়। অতীতে এমন ঘটনা ঘটার পরেও প্রশাসন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।এই ঘটনার পর প্রশাসন কিছুদিনের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলেও, দীর্ঘমেয়াদী কোনো পরিকল্পনা করা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সাধারণ মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা যতদিন থাকবে, ততদিন এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে। স্থানীয়দের একটাই দাবি, প্রশাসন যেন এবার শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং রাজনৈতিক রঙ না লাগিয়ে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেয়।