Anubrata Kajal conflict again!: বীরভূমের রাজনীতিতে যেন ঝড় উঠেছে! ফের একবার প্রকাশ্যে এল অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের মধ্যে চলতে থাকা দ্বন্দ্ব। সম্প্রতি, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ নাম না করেই অনুব্রত মণ্ডলকে নিশানা করে বলেছেন, “তার দিকে ইট ছুড়লে পাটকেল খেতে হবে।” এই মন্তব্য ঘিরে রাজনীতির ময়দানে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেই জয়দেব মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাজল শেখ প্রকাশ্য মঞ্চে নিজের রাজনৈতিক গুরু অনুব্রতকে প্রণাম করেছিলেন। তবে সেই প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, “কাউকে প্রণাম করা মানে তাকে সম্মান জানানো, তার সামনে ছোট হওয়া নয়। কিন্তু কেউ যদি সেই সম্মান নিতে না পারেন, তাহলে তার কিছু করার নেই।”গত দুই বছর ধরে অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকার পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন এবং এরপর থেকেই কাজল শেখের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব যেন আরও বেড়ে গিয়েছে। একসময় বীরভূম জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে একসঙ্গে পথ চললেও এখন তাঁদের মধ্যে টানাপোড়েন চরমে। একে অপরকে পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মতবিরোধ শুধুই ব্যক্তিগত নয়, এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক অভিসন্ধি। কারণ, বীরভূমের রাজনৈতিক ভারসাম্য বদলাচ্ছে, এবং এই দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে বড় কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, কাজল শেখের নেতৃত্বে জেলা পরিষদ বেশ কিছু বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা অনুব্রত মণ্ডলের সমর্থকদের মনে অসন্তোষের সঞ্চার করেছে। এক বাসিন্দার কথায়, “বীরভূমের রাজনীতি আগে একক নেতৃত্বে চলত, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব স্পষ্ট।” আবার অন্য এক ব্যক্তির বক্তব্য, “দলের মধ্যেই যদি এই দ্বন্দ্ব চলতে থাকে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে দল অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়বে।”রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অনুব্রত-কাজল দ্বন্দ্ব শুধু ব্যক্তিগত সংঘর্ষ নয়, বরং এটি বীরভূমের রাজনৈতিক দখলদারিত্বের লড়াই। দীর্ঘদিন ধরে বীরভূমের রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডলের কর্তৃত্ব ছিল অটুট। তবে তাঁর অনুপস্থিতিতে কাজল শেখ নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন। এখন অনুব্রত মণ্ডলের প্রত্যাবর্তনের পর সেই ক্ষমতার ভারসাম্য বদলাচ্ছে। কাজল শেখের সাম্প্রতিক বক্তব্য যেন সেই ক্ষমতা ধরে রাখারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
দলীয় সূত্রের খবর, এই দ্বন্দ্ব ক্রমশই তীব্র হচ্ছে এবং দলের অভ্যন্তরে একাধিক গোষ্ঠী এতে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকে মনে করছেন, দলীয় উচ্চ নেতৃত্বকে দ্রুত হস্তক্ষেপ করতে হবে, নাহলে এই সংঘাত আরও বড় রূপ নিতে পারে। অন্যদিকে, বিরোধীরা এই পরিস্থিতিকে তাদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে এটা স্পষ্ট যে, অনুব্রত-কাজল দ্বন্দ্ব বীরভূমের রাজনৈতিক চিত্রপটকে এক নতুন মোড় দিতে চলেছে।