Another new virus after Corona!:-করোনা মহামারির আতঙ্ক এখনও মানুষের স্মৃতিতে দগদগে। সেই আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও নতুন এক ভাইরাসের দাপটে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। চিনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছড়িয়ে পড়েছে এই নতুন ভাইরাসের খবর। নতুন ভাইরাসের নাম – ‘হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস’ (HMPV)। করোনার মতোই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে সারা পৃথিবীর জন্য।
এই ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ২০০১ সালে। তবে সম্প্রতি চিনে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের মতোই এই ভাইরাসেও সংক্রমিতরা ভুগছেন জ্বর, কাশি, সর্দি এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যায়। এর সঙ্গে রয়েছে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস এবং শ্বাসজনিত অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি। বিশেষত যেসব শিশু এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের জন্য এই ভাইরাস মারাত্মক হতে পারে।
চিনের হাসপাতালে ইতিমধ্যেই রোগীদের ভিড় লেগে রয়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ লাইন পড়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই ভাইরাসটি রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাসের (RSV) সঙ্গে যুক্ত। করোনার মতোই, এই ভাইরাসও দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে এবং ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু ঘটেছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। যদিও চিন সরকার এই বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য এখনও প্রকাশ করেনি।HMPV সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে সরাসরি সংস্পর্শে আসা, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে নির্গত ড্রপলেট, বা ভাইরাসযুক্ত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করার মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই নতুন ভাইরাস মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। কলকাতার এক ভাইরোলজিস্ট ডঃ অনিরুদ্ধ ঘোষ বলছেন,

“এই ভাইরাসও শ্বাসতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। তাই করোনা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই এটি ছড়াতে পারে। প্রাথমিক স্তরে এটি ঠান্ডা লাগা বা সাধারণ ফ্লু-এর মতো মনে হলেও, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিদের জন্য এটি গুরুতর হয়ে উঠতে পারে।”চিনে ইতিমধ্যেই জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। একাধিক হাসপাতালে আলাদা ইউনিট খোলা হয়েছে এই রোগীদের চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও, স্কুল এবং জনসমাগমস্থলগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে এখনও কোনো সতর্কবার্তা জারি হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কারণে এই ভাইরাস যে কোনো মুহূর্তে ভারতে প্রবেশ করতে পাএই ভাইরাস যদি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা আরও এক নতুন মহামারির রূপ নিতে পারে। করোনার সময়কালে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে চাপ দেখা গিয়েছিল, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।করোনা মহামারি আমাদের শিখিয়েছে যে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। HMPV ভাইরাস এখনো পর্যন্ত শুধুমাত্র চিনে সীমাবদ্ধ থাকলেও, এটি যে কোনো সময় আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, মানুষকে সচেতন করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, এবং সরকারি নির্দেশাবলীর প্রতি সতর্ক থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।