An old Congress worker rides a bicycle on his way to Kumbh:-পূর্ব বর্ধমানের কালনার সিমলন গ্রামের ৭৪ বছর বয়সী কংগ্রেস কর্মী প্রভাত দাস সাইকেলে চেপে মহাকুম্ভের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। তবে তার চূড়ান্ত লক্ষ্য পাঞ্জাব, যেখানে কৃষকরা তাদের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ২২ জানুয়ারি নিজের সাইকেলে কংগ্রেসের পতাকা উড়িয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেন। শনিবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে পৌঁছে দক্ষিণা কালী মন্দিরে রাত কাটিয়ে রবিবার সকালে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খন্ড সীমান্তের দিকে রওনা হন। তার লক্ষ্য, ২৬ ফেব্রুয়ারি মহাকুম্ভে পৌঁছে পবিত্র শাহী স্নানে অংশ নেওয়া। কিন্তু তার আসল উদ্দেশ্য আরও বৃহত্তর—তিনি চান পাঞ্জাবে গিয়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এবং পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের সুবিধা-অসুবিধার বার্তা আন্দোলনকারীদের কাছে পৌঁছে দিতে।
প্রভাত দাস একজন সমাজসেবকও বটে। তিনি কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য এক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আছেন। পাশাপাশি, ভারতের গণতন্ত্র রক্ষা এবং তথ্য জানার অধিকার রক্ষার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করাও তার অন্যতম লক্ষ্য। এর আগেও তিনি বড়ো পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। রাহুল গান্ধীর ‘পাহাড় থেকে সাগর’ পদযাত্রায় তিনি কোহিমা থেকে কিশানগঞ্জ পর্যন্ত হাঁটেন। তবে পারিবারিক কারণে তাকে ফিরে আসতে হয়েছিল এবং মুম্বাই পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি—সে আক্ষেপই এবার পূরণ করতে চান তিনি।
প্রভাত দাসের এই যাত্রা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে। তার এই উদ্যোগে অনেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ চন্দ্র বলেন, “প্রভাতবাবুর এই বয়সে এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমাদের সকলের উচিত তার থেকে শিক্ষা নেওয়া।” অন্যদিকে, স্থানীয় কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, “প্রভাত দাস কংগ্রেস দলের সম্পদ। তার এই প্রচেষ্টা আমাদের সকলের জন্য গর্বের বিষয়।”
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব প্রভাত দাসের এই পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শান্তি চাল বলেন, “ওঁর কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু দেখছি না। কালনাবাসী জানেন, তৃণমূল সরকারের রাজত্বে কালনার কতটা উন্নয়ন হয়েছে, কালনার কত মানুষ জনহিতকর প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। সেই কারণে কালনাবাসীর ভোটে তৃণমূলের প্রার্থীদের জয় হয়েছে।”
প্রভাত দাসের এই যাত্রা ভবিষ্যতে আরও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তার এই উদ্যোগ অন্যান্য সমাজসেবীদের অনুপ্রাণিত করতে পারে এবং কৃষকদের অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। এছাড়া, তার এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে।
সামগ্রিকভাবে, প্রভাত দাসের এই সাইকেল যাত্রা একটি অনন্য উদাহরণ। তার এই উদ্যোগ আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করে এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে। তার এই যাত্রার সফলতা কামনা করি।