...
Thursday, April 3, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসদেশআগরায় ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান

আগরায় ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান

An Air Force fighter jet crashed in Agra:উত্তরপ্রদেশের আগ্রার কাছে সোনগা গ্রামে ঘটে গেল এক রোমহর্ষক ঘটনা, যখন ভারতীয় বায়ুসেনার একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঞ্জাবের আদমপুর থেকে মহড়ার জন্য আকাশে উঠেছিল বিমানটি এবং সেটির গন্তব্য ছিল আগ্রা। তবে, বিমানটি যখন সোনগার আকাশে পৌঁছায়, তখনই ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিমানে থাকা দুই সাহসী পাইলট নিজেকে ইজেক্ট করে বিমান থেকে বেরিয়ে আসেন, এবং তার ফলেই প্রাণে বেঁচে যান তারা। আগুনে ভরা বিমানের মাটিতে আছড়ে পড়ার পর এলাকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় দমকলের ইঞ্জিন এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা, যাঁরা পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয়দের সহযোগিতা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোনগা গ্রামের আকাশে প্রথমে এক বিশাল শব্দ শোনা যায়, তার পরে দেখা যায় একটি বিমান তীব্র গতিতে নিচে পড়ছে। বিমানে আগুন লেগে গেলে এলাকাবাসী দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গ্রামবাসী রমেশ যাদব বলেন, “আমরা আকাশে জ্বলতে থাকা বিমান দেখেছিলাম, সেই মুহূর্তে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। সৌভাগ্যবশত, পাইলটরা আগে থেকেই বিমান থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, আর না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত।” স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত এলাকা খালি করার নির্দেশ দেয় এবং ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ চালায়। বায়ুসেনা সূত্রে খবর, এই ধরনের দুর্ঘটনার পিছনে কারিগরি ত্রুটি থাকতে পারে, এবং ঘটনাটির সঠিক কারণ জানার জন্য তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি দুই মাসে দ্বিতীয়বারের মতো মিগ-২৯ বিমান দুর্ঘটনা। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে রাজস্থানের বারমেরে একটি মিগ-২৯ বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল।

এই ধরনের ক্রমাগত দুর্ঘটনা বায়ুসেনার জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিগ-২৯ বিমানগুলি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এবং বায়ুসেনার আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যেও এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। বিমান বাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য পাইলটদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দুর্ঘটনার মূল কারণ খুঁজে বের করা। মিগ-২৯ বিমানগুলির কারিগরি ত্রুটি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।” স্থানীয় মানুষের মধ্যে এই দুর্ঘটনার ফলে প্রচণ্ড আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। বহু মানুষ মনে করছেন, গ্রামের আশপাশে এই ধরনের মহড়া না চালিয়ে তা নিরাপদ অঞ্চলে করা উচিত।

এই ঘটনার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন যে, এই ধরনের দুর্ঘটনা শুধুমাত্র পাইলটদের নয়, স্থানীয় মানুষদেরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে। বায়ুসেনার পক্ষ থেকে জনসাধারণকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করারও কথা শোনা যাচ্ছে, যারা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ব্যবস্থা নেবে।

এই ঘটনাটি ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় শিক্ষা হয়ে থাকবে। প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং আধুনিক যুদ্ধবিমান থাকা সত্ত্বেও এই ধরনের দুর্ঘটনা আমাদের বারবার প্রমাণ করে দেয় যে, প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক না কেন, ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে এই সাহসী দুই পাইলটের দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আত্মরক্ষার কৌশল সত্যিই প্রশংসনীয়। তাদের সাহসিকতা আগামী প্রজন্মের বায়ুসেনা পাইলটদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.