After Dum Dum, Shantipur, miscreants loot empty houses: নদিয়ার শান্তিপুরে ফাঁকা বাড়ির সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব অব্যাহত। দমদমের ঘটনার পর এবার শান্তিপুরের আরবলদা গ্রামে এক মহিলার বাড়িতে চুরির ঘটনা সামনে এলো। শনিবার রাতে এই চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জানা গেছে, বাড়ির মালিক শিবানী দত্ত মজুমদার কিছুদিনের জন্য তার মেয়ের কাছে গিয়েছিলেন। যাওয়ার আগে তিনি সব দরজায় তালা লাগিয়ে যান। কিন্তু তার এই অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়েই দুষ্কৃতীরা গভীর রাতে তিনটি দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে চম্পট দেয়।শিবানীদেবী বাড়ি ফিরে দেখেন প্রধান দরজার তালা ভাঙা। সন্দেহ হওয়ায় তিনি ভেতরে ঢুকে দেখেন ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে, আলমারির দরজা খোলা এবং টেবিলের ড্রয়ার তছনছ করা হয়েছে। তিনি বুঝতে পারেন, বাড়িতে থাকা নগদ টাকা এবং মূল্যবান সামগ্রী চুরি হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। খবর পেয়ে শান্তিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেছে।
বাড়ির মালিক শিবানী দত্ত মজুমদার বলেন, “আমি মাঝে মাঝে মেয়ের কাছে যাই, সেটাই হয়তো দুষ্কৃতীরা জেনে গিয়েছিল। তাই সুযোগ বুঝে আমার বাড়িতে চুরি করেছে। আমার কিছু টাকা এবং দামি জিনিস ছিল, সেগুলো সব নিয়ে গেছে। আমি এখন খুবই আতঙ্কে রয়েছি, এই বাড়িতে একা থাকতে ভয় লাগছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, যারা এই কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।”স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এটি প্রথম ঘটনা নয়, আগেও ফাঁকা বাড়ি টার্গেট করে চুরি হয়েছে। পুলিশের টহলদারির অভাবেই অপরাধীরা এত সাহস পাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। একজন প্রতিবেশী বলেন, “আমাদের এলাকায় মাঝে মাঝেই এমন ঘটনা ঘটে। পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হলে হয়তো এই ধরনের চুরি কমতে পারে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি, রাত্রিকালীন নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হোক।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, শহর ও শহরতলিতে ফাঁকা বাড়ি টার্গেট করে চুরি-ডাকাতির প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। অনেক দুষ্কৃতী আগে থেকেই নজরদারি চালায়, তারপর সুযোগ বুঝে পরিকল্পিতভাবে চুরি করে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং স্থানীয়দের সাহায্যে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। শান্তিপুর থানার এক আধিকারিক বলেন, “আমরা তদন্ত শুরু করেছি, আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারব। সাধারণ মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে এবং অজানা ব্যক্তিদের চলাফেরার বিষয়ে পুলিশকে দ্রুত খবর দিতে হবে।”এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অনেকেই নিজেদের বাড়ির নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য সিসিটিভি লাগানোর কথা ভাবছেন। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যারা দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়ির বাইরে থাকেন, তারা প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যান, যাতে সন্দেহজনক কিছু দেখলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। পুলিশেরও উচিত, বিশেষ করে উৎসবের সময় বা ছুটির দিনে এলাকায় নজরদারি আরও কঠোর করা।ফাঁকা বাড়িতে চুরি-ডাকাতির ঘটনা নতুন কিছু নয়, কিন্তু একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। প্রশাসনের এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে অপরাধীরা আর সাহস না পায় এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে আস্থা ফিরে আসে।