ADDA launches a series of projects in Asansol:আসানসোলবাসীর কাছে এই সপ্তাহান্ত যেন উন্নয়নের উৎসব হয়ে উঠেছে, কারণ শনিবারের পর রবিবারও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখল আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ADDA)। শনিবার রানীগঞ্জে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন ADDA-র চেয়ারম্যান অভি দত্ত, আর রবিবার মন্ত্রী মলয় ঘটকের হাত ধরে আরও কিছু নতুন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন হল আসানসোলে। একদিকে রাস্তা, অন্যদিকে স্ট্রিট লাইট, সব মিলিয়ে এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায় শুরু হল। সাধারণ মানুষ যেমন এই উদ্যোগে খুশি, তেমনি স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে এক আলাদা আত্মবিশ্বাস। এদিন আসানসোল পৌরনিগমের ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের আমবাগানে স্ট্রিট লাইটের উদ্বোধন করা হয়, যার ফলে এলাকার অন্ধকার গলিগুলোর আলোয় আলোকিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উদ্বোধনও করা হয়, যা এলাকার মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের সুবিধা অনেকটাই বাড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইন ও বিচার দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কবি দত্ত, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, প্রশাসনিক আধিকারিক এবং এলাকার বহু সাধারণ মানুষ। মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “উন্নয়ন কোনও দিনের বিষয় নয়, এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমরা সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই।
আজকের এই প্রকল্পগুলো এলাকার মানুষের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই করা হয়েছে। আগামী দিনেও এরকম আরও অনেক উন্নয়ন হবে।” অন্যদিকে ADDA-র চেয়ারম্যান কবি দত্ত জানান, “এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুটি রাস্তা এবং স্ট্রিট লাইট মিলিয়ে মোট প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আমরা চাই আসানসোল ও দুর্গাপুরের প্রতিটি এলাকা উন্নয়নের ছোঁয়া পাক।” এলাকার মানুষজনের মুখে এখন শুধুই প্রশংসা। এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, “এই রাস্তাগুলো আগে খুব খারাপ ছিল, বৃষ্টিতে হাঁটা যেত না। এখন পাকা রাস্তা হয়েছে, আমাদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারবে ভালোভাবে।” অন্য একজন বলেন, “রাতে বাইরে বেরোতে ভয় করত, এখন আলো লাগানো হয়েছে, নিরাপদ লাগছে।” Saturday-এর উন্নয়নের খবরের রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবারের এই ঘোষণা যেন একরকম উপহার হয়ে এল শহরবাসীর জন্য। অভি দত্তের নেতৃত্বে শনিবার রানীগঞ্জে যে প্রকল্পগুলি উদ্বোধন হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নতুন পার্ক উন্নয়ন, নিকাশি ব্যবস্থা মেরামত এবং কিছু সামাজিক কল্যাণমূলক ভবন নির্মাণ। মোট বাজেট ছিল প্রায় ১.২ কোটি টাকা। রবিবারের প্রকল্পগুলি ছিল তুলনায় ছোট হলেও মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাব পড়বে সরাসরি। এইভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ছোট ছোট প্রকল্পের মাধ্যমে বৃহৎ উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগগুলি আগামীদিনে শহরের পরিকাঠামোগত মানচিত্র অনেকটাই বদলে দিতে পারে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে শিল্পাঞ্চল হিসেবে একসময়ের গৌরব ফিরে পেতে পারে আসানসোল-দুর্গাপুর অঞ্চল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আসন্ন পঞ্চায়েত ও পৌরসভা নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি হিসেবেও ধরা যেতে পারে। তবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে যদি এই প্রকল্পগুলি সত্যিই মানুষের জীবনে বদল আনে, তাহলে তা অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্য উন্নয়ন সংস্থাগুলি শহরাঞ্চলের পাশাপাশি উপশহর এবং প্রান্তিক এলাকাগুলিতেও উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। এবং এই উদ্যোগের এক বাস্তব প্রমাণ হল ADDA-র নেতৃত্বে এই সদ্য চালু হওয়া প্রকল্পগুলি। উল্লেখ্য, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠিত হয় ১৯৮০ সালে, যার মূল উদ্দেশ্য হল আসানসোল, দুর্গাপুর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলিতে সুপরিকল্পিত উন্নয়ন ঘটানো। বর্তমানে সংস্থাটি আবাসন প্রকল্প, রাস্তা, নিকাশি, পরিবেশবান্ধব পার্ক, বাজার এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ সহ নানা প্রকল্পে যুক্ত। অভি দত্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সংস্থাটির কর্মকাণ্ডে গতি এসেছে বলে অনেকে মনে করছেন। তাঁর মতে, “উন্নয়ন মানে শুধু বড় বড় প্রকল্প নয়, ছোট ছোট কিন্তু মানুষের দরকারি কাজগুলিও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।” মন্ত্রী মলয় ঘটকের পাশাপাশি স্থানীয় কাউন্সিলররাও জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কিছু রাস্তা ও নিকাশি প্রকল্প চালু হবে। বিশেষ করে বর্ষার আগে এই কাজগুলো শেষ করার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন। এক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে, যাতে কাজের গুণমান ও সময়মতো সম্পূর্ণ হওয়া নিশ্চিত করা যায়।