A young man risked his life to bathe the king of beasts!: বৈশাখের রোদের চোটে যখন মানুষ হাঁসফাঁস করছে, তখন একটি ভাইরাল ভিডিও গোটা নেট দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে—যেখানে এক তরুণ জল ঢেলে নিজ হাতে স্নান করাচ্ছেন সিংহকে! ভাবা যায়? জঙ্গলের রাজা, যার গর্জনেই স্তব্ধ হয়ে যায় বনজগৎ, সেই সিংহটিকে জলের পাইপ দিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ধুয়ে দিচ্ছেন এক যুবক, আর সিংহটি শান্তভাবে সেই স্নান উপভোগ করছে! ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা স্পষ্ট না হলেও ভিডিওটি সমাজমাধ্যমে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘এলিফ্যান্টস অব ওয়ার্ল্ড’ নামের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয় এবং তা নিমেষেই লক্ষাধিক ভিউ ছুঁয়ে যায়।ভিডিওতে দেখা যায়—গা ছড়িয়ে বসে থাকা এক প্রাপ্তবয়স্ক সিংহের গায়ে পাইপের সাহায্যে জল ঢালছেন এক তরুণ। তিনি অত্যন্ত যত্নসহকারে প্রথমে সিংহের পেটের কাছে জল ঢেলে হাত দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে থাকেন। সিংহটিও অবাক করা শান্ত স্বভাবে বসে থাকে। এরপর যখন তরুণটি তার মাথা ও মুখে জল ঢালতে শুরু করেন, তখন খানিকটা অস্বস্তি প্রকাশ করে সিংহটি মাথা সরিয়ে নেয়। কিন্তু এই অস্বস্তি কখনওই হিংস্রতায় রূপ নেয় না। বরং সিংহটির আচরণে স্পষ্ট সে যুবকটির সঙ্গে এক গভীর বন্ধন অনুভব করে।
এই ভিডিও দেখে বহু নেটিজেন মন্তব্য করেছেন—“এ যেন স্নেহে বাঁধা এক রাজা ও তার প্রজার গল্প।” কেউ বলেছেন, “মানুষ ও পশুর এই ভালোবাসা বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরায় মানবিকতায়।” আবার কেউ কেউ উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন—“এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যদি অপ্রশিক্ষিত কেউ করতে যায়, তা প্রাণঘাতী হতে পারে।”বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, সিংহ সাধারণত তার পরিবেশে নতুন কিছু বা কেউ দেখলে রক্ষণাত্মক বা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু এই ভিডিওর সিংহটি দেখে মনে হচ্ছে, সে এই তরুণের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই যোগাযোগে রয়েছে। সম্ভবত এটি কোনো রেসকিউ সেন্টার বা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে ঘটেছে, যেখানে পশুপালনকারীরা প্রাণীদের যত্ন ও পরিচর্যা করেন অত্যন্ত নিয়মিতভাবে।পশুচিকিৎসক ডাঃ প্রিয়ম সেন এই প্রসঙ্গে জানান, “সিংহ অত্যন্ত বুদ্ধিমান প্রাণী। একবার যদি সে কাউকে বিশ্বাস করতে শিখে, তবে তার প্রতি এক ধরনের স্নেহ গড়ে ওঠে। তবে এটি খুব সাবধানে ও প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে করতে হয়। ভুল করলে ফল ভয়াবহ হতে পারে।”সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওর সত্যতা নিয়ে অবশ্য কিছু প্রশ্ন উঠেছে। কেউ বলছেন এটি এআই বা গ্রাফিক্সের সাহায্যে বানানো হতে পারে, আবার কেউ বলছেন—এটি একটি চিড়িয়াখানার দৃশ্য। তবে ভিডিওর প্রেক্ষাপট যাই হোক না কেন, একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে এটি মানুষ ও পশুর মধ্যে ভালবাসা, বিশ্বাস আর সহাবস্থানের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত।
এই ঘটনাকে ঘিরে পশু অধিকার সংস্থাগুলিও মুখ খুলেছে। পেটা ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানায়, “যতই ভালবাসা থাকুক না কেন, বন্য প্রাণীদের সঙ্গে এই ধরনের সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ বিপজ্জনক। প্রশিক্ষণ ছাড়া বা পরিবেশ না বুঝে এমন কাজ করার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। এই ভিডিও থেকে মানুষের শিক্ষা নেওয়া জরুরি—ভালবাসা ও সুরক্ষার মধ্যে একটা স্পষ্ট সীমা থাকা উচিত।”একাধিক পশুপ্রেমী সংস্থা আবার এই ভিডিওকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তাদের মতে, এই ঘটনা মানুষকে পশুদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হতে শিখাবে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে যেসব চিড়িয়াখানায় পশুদের রাখা হয়, সেসব জায়গায় নিয়মিতভাবে ঠান্ডা জল ও স্নানের ব্যবস্থা করাটা জরুরি।