A special species of penguin in Africa is facing extinction:আফ্রিকার বিশেষ প্রজাতির পেঙ্গুইন বর্তমানে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে, যা বিশ্ব পরিবেশবিদদের কাছে একটি গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ইউনিয়নের (IUCN) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পৃথিবীতে মোট ১৮টি পেঙ্গুইন প্রজাতির মধ্যে এই আফ্রিকান প্রজাতিটি বিলুপ্তির পথে এগোচ্ছে দ্রুত। সংস্থার মতে, পেঙ্গুইনদের প্রজনন স্থান এবং খাদ্য উৎস বিপন্ন হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বনভূমি, মৎস্য এবং পরিবেশ সংরক্ষণ মন্ত্রণালয়ের শিথিল ব্যবস্থাপনার জন্য সেখানে প্রাণীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, এবং ক্রমশ তারা সংখ্যায় কমে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত কয়েক দশকে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। গবেষকরা বলছেন, এই প্রজাতির পেঙ্গুইনের ৯৭ শতাংশই হারিয়ে গেছে এবং অবিলম্বে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, বাকি পেঙ্গুইনগুলোও ৪০০০ দিনের মধ্যেই পৃথিবী থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সংরক্ষণ সংস্থা SANCCOB এবং BirdLife South Africa দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের বনভূমি এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের দাবি, সরকারের মৎস্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা খুবই দুর্বল, যা পেঙ্গুইনদের খাদ্য সংগ্রহে সমস্যা সৃষ্টি করছে। এই প্রজাতির পেঙ্গুইনদের খাদ্যতালিকায় প্রধানত ছোট মাছ যেমন স্যাডিন, আ্যঙ্কোভি ইত্যাদি থাকে। কিন্তু মৎস্যব্যবসার কারণে এই মাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যা পেঙ্গুইনদের খাদ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
SANCCOB-এর সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ জনাথন লুইস বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে আফ্রিকান পেঙ্গুইনদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত অন্ধকারময়। সরকারের শিথিল ব্যবস্থাপনায় তাদের খাদ্য সংগ্রহ এবং প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই সরকার দ্রুত কঠোর পদক্ষেপ নিক, যাতে পেঙ্গুইনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।” এছাড়াও BirdLife South Africa-এর প্রধান বলেন, “আমরা আমাদের প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সই সংগ্রহ করছি যাতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে মৎস্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর আইন তৈরি করা হয়।”
আফ্রিকার এই বিশেষ প্রজাতির পেঙ্গুইন সাধারণত দক্ষিণ আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলে বসবাস করে এবং সেখানেই তাদের প্রজনন ঘটে। তবে খাদ্যের ঘাটতির কারণে তারা উপকূলের বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছে, যা তাদের প্রজনন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করছে। পেঙ্গুইনদের বাঁচাতে হলে প্রজনন স্থলে মৎস্যব্যবসা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা জরুরি, কিন্তু সরকারের বর্তমান নিয়মাবলীতে সেই ব্যবস্থা খুবই সীমিত।
এছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এই পেঙ্গুইন প্রজাতির বসবাসের উপযুক্ত আবহাওয়া ক্রমশ পরিবর্তিত হচ্ছে, যা তাদের বাস্তুসংস্থানকে ভঙ্গুর করে তুলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি বাণিজ্যিক মৎস্যশিল্প এবং পরিবেশ দূষণ এই প্রজাতির অস্তিত্বকে আরও বিপন্ন করে তুলছে। পরিবেশবিদদের মতে, অবিলম্বে সঠিক পদক্ষেপ না নিলে এই প্রজাতির পেঙ্গুইন চিরতরে হারিয়ে যাবে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশের ভারসাম্যে বিশাল পরিবর্তন আসবে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা ও পেঙ্গুইন সংরক্ষণ কর্মী বলেন, “পেঙ্গুইন আমাদের স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই প্রাণীদের হারালে আমাদের পরিবেশের উপরেও তা প্রভাব ফেলবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এই প্রজাতির পেঙ্গুইন দেখানোর সুযোগ না পেলে সেটা খুবই কষ্টের হবে।”

এখন প্রশ্ন উঠছে, কত দ্রুত এবং কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে সরকার এই পেঙ্গুইন প্রজাতির বিলুপ্তি রোধ করবে। আন্তর্জাতিক স্তরে মানুষ এখন পেঙ্গুইন রক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছে, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই প্রজাতির পেঙ্গুইন সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণের আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং তাদের পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে হবে।
বিশ্বব্যাপী পেঙ্গুইনপ্রেমীরা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ কর্মীরা আশা করছেন যে সরকার দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে এবং এই বিশেষ প্রজাতির পেঙ্গুইন সংরক্ষণে যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।