Funny video of a viral baby elephant!:ইন্টারনেট দুনিয়ায় আজকাল কিছু কিছু মুহূর্ত এমনভাবে ভাইরাল হয় যে তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। আর এইবার সেই ভাইরাল ট্রেন্ডের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এক নিরীহ, নির্ভয়, আর বড্ডই মজার এক হস্তিশাবক। মেঝেতে খড় বিছানো এক স্নিগ্ধ পরিবেশে চোখ বন্ধ করে আরাম করে ঘুমোচ্ছে একটি হাতির বাচ্চা, আর সেই ঘুম এমন এক গভীরতায় পৌঁছে গিয়েছে যে ঘুমের ঘোরেই শুরু হয়ে গেছে নাক ডাকা। এমন মজার দৃশ্যই সম্প্রতি ঝড় তুলেছে নেটদুনিয়ায়। ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল ‘Elephants of World’ থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট হতেই শুরু হয়ে যায় শেয়ার, রিয়্যাকশন, আর মন্তব্যের ঢল। যদিও খবর বাংলা ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি এবং ঘটনাস্থল কোথায় তা স্পষ্ট নয়, তবুও ভিডিওটির আবেগ, সারল্য আর খাঁটি প্রাণীর অভিব্যক্তি মন ছুঁয়ে গেছে লাখ লাখ দর্শকের।
ভিডিওটি শুরু হচ্ছে একটি খড়ের বিছানায় আরাম করে ঘুমিয়ে পড়া এক হস্তিশাবকের দৃশ্য দিয়ে। একেবারে অচেতন ঘুমে রয়েছে সে, চোখ বন্ধ, কান নিস্তরঙ্গ, আর মুখের পাশে অল্প অল্প করে ওঠানামা করছে শ্বাস-প্রশ্বাস। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল, হঠাৎই শুরু হয় তুমুল নাক ডাকা! এমন জোরালো আর ছন্দবদ্ধ নাক ডাকা, যে প্রথম শুনলে বোঝার উপায় নেই এটা কোনো হাতির ছানার আওয়াজ! পাশেই তখন গলার কাছে সেঁটে ঘুমিয়ে আরেক শাবক, সে কিন্তু পুরোপুরি নির্বিকার — যেন প্রতিদিনই এমন “কনসার্ট” শুনে অভ্যস্ত সে। এই মজার মুহূর্তটি ক্যামেরায় ধরা পড়তেই তা ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটের আনাচে-কানাচে।
নেটিজেনদের একাংশ মজা করে লেখেন, “এটা তো আমার ভাইয়ের ঘুমের রেকর্ড!”, কেউ আবার বলেন “অফিস থেকে ফিরে আমিও এমনভাবেই পড়ে থাকি।” এমনকি কেউ কেউ বলেন, “হাতির ছানার ঘুম যেন একেবারে জীবনের রিফ্রেশ বোতাম টিপে দিলো।” পশুপ্রেমীরা ভিডিওটি দেখে উচ্ছ্বসিত — “এমন নির্ভার ঘুমে পড়ে থাকা দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেল,” বলেন এক ব্যবহারকারী। অন্যজন লিখেছেন, “এই জন্যই আমি প্রাণীদের বেশি ভালোবাসি, ওদের মধ্যে কোনো কৃত্রিমতা নেই, সব অনুভূতিই খাঁটি।”
এই ভিডিও আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতি আর প্রাণীর মধ্যে যে নির্ভেজাল সম্পর্ক, তা আজকের যান্ত্রিক জীবনে কতটা প্রয়োজন। হাতির ছানা মানেই একরাশ কিউটনেস, আর সেই সঙ্গে এমন একটা ভয়হীন, নির্ভার মুহূর্ত, যা আমাদেরও ক’মিনিটের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেয় নিজের ক্লান্তি, দুঃখ কিংবা উদ্বেগ।
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, হস্তিশাবকরা সাধারণত দিনে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা ঘুমায়। ছোট ছানারা নিরাপদ পরিবেশে পড়লে বেশিরভাগ সময় মাটিতে শুয়ে ঘুমাতে পছন্দ করে। এরা যখন আরাম অনুভব করে, তখন মানুষ বা অন্য প্রাণীর মতোই ঘুমের মধ্যে আওয়াজ করতে পারে, এমনকি নাক ডাকাও স্বাভাবিক। তবে এই ভিডিওর বিশেষত্ব হল সেটি এতটাই নাটকীয় ও মানবিক, যে মুহূর্তেই মানুষ নিজেকে তার সঙ্গে রিলেট করতে পারছে। আর এটাই সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তি— যেখানে বাস্তব জীবনের খুদে মুহূর্তগুলো মানুষকে এনে দেয় এক অনন্য আনন্দ।
এই ধরণের ভিডিও আমাদের আরও একবার বোঝায় যে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহারের দিক যেমন আছে, তেমনই আছে ভালোবাসা ছড়ানোর সুযোগ। একটি সাধারণ, সুন্দর, প্রাণবন্ত মুহূর্ত সারাদিনের স্ট্রেস ভোলাতে পারে — এটাই তো তার সৌন্দর্য। এই ভিডিও দেখে বহু মানুষ নিজের বাচ্চাদের দেখিয়েছেন, অনেক স্কুল শিক্ষকরাও এটি শেয়ার করেছেন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রকৃতি ও পশুদের প্রতি ভালোবাসা শেখাতে।
একদিকে যখন জঙ্গলের প্রাণীরা ক্রমশ বনাঞ্চল হারিয়ে ফেলছে, যখন হাতি-মানুষের সংঘর্ষের ঘটনা সংবাদে বারবার উঠে আসে, তখন এমন একটি ভিডিও একটি মানবিক বার্তা দেয় — প্রকৃতি যত বেশি নিরাপদ হবে, তত বেশি প্রাণীরাও হবে নিশ্চিন্ত, নির্ভয়, আর হাস্যকর মুহূর্তের অংশ।
উল্লেখযোগ্য যে, গত কয়েক বছরে হাতির ছানাদের মজার ভিডিও, যেমন জলকেলি করা, বল খেলা, গাছে মাথা ঠোকানো বা কাদা মেখে থাকা — সবই ভাইরাল হয়েছে এবং মানুষের মন জয় করেছে। কিছু ভিডিও যেমন কর্নাটকের ‘দুবারে এলিফ্যান্ট ক্যাম্প’-এর, কিছু আবার কেরালার বন্যপ্রাণী রক্ষা কেন্দ্র থেকে ভাইরাল হয়েছে। তবে আজকের এই ভিডিওটি আলাদা — এটি শুধুই হাসির নয়, এটি হৃদয় ছোঁয়ারও।
এই রিপোর্ট লেখার সময় অবধি ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটির ভিউ সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৫ লক্ষ, আর মন্তব্যের সংখ্যা ৩০ হাজারের কাছাকাছি। শেয়ার হয়েছে বহু জনপ্রিয় পেজে, যেখানে ক্যাপশন লেখা হয়েছে— “Never underestimate the power of a sleepy elephant!” আবার কেউ লিখেছেন “This baby snores better than my grandpa!”
এই ভিডিওর মাধ্যমে যেমন প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা ছড়াচ্ছে, তেমনই আবার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিবেশ সচেতনতার আলোচনাও শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভিডিওগুলো যদি সচেতনভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে পরিবেশ রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।
সবশেষে, বলা যেতেই পারে — এই হাতির ঘুম, এই নাক ডাকা — কেবল একটা ভিডিও নয়, এটা হল স্ট্রেস ফ্রি জীবনের এক খোলা জানালা। এমন মুহূর্তই আমাদের শেখায় — খাঁটি আনন্দ, নিঃস্বার্থ ঘুম, আর প্রাণবন্ত জীবন — এখনো পৃথিবীতে আছে, শুধু দেখতে জানতে হয়।