Saturday, April 26, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যআবহাওয়াদক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা

দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা

Rain likely in several districts of South Bengal:ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠেছে গোটা রাজ্যবাসী, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। দিনের পর দিন ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাওয়া পারদ আর বাতাসে আর্দ্রতার কারণে জনজীবন হয়ে উঠেছে রীতিমতো দুর্বিষহ। শহরের রাস্তায় বের হওয়া মানেই যেন ঘামে ভিজে একাকার অবস্থা। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, নদীয়া সহ একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। অফিসযাত্রী থেকে বাজারে বেরোনো মানুষজন সকলেই এই প্রচণ্ড গরমের সামনে কার্যত নতিস্বীকার করেছিলেন। তবে অবশেষে একটু স্বস্তির খবরে প্রাণ জুড়াচ্ছে রাজ্যবাসী। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, উত্তর বাংলাদেশ এবং উত্তর-পূর্ব আসামের উপর তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত এবং উত্তর বাংলাদেশ থেকে উত্তর ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত নিম্নচাপ অক্ষরেখার কারণে দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করতে চলেছে জলীয় বাষ্পে ভরা মেঘের দল। শনিবার থেকেই পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় হালকা ঝড়-বৃষ্টির

সম্ভাবনা রয়েছে, তবে সেটি সাময়িক স্বস্তি দিলেও গরমের প্রকোপ কমাবে না। বরং বিকেলের দিকে মেঘ জমে গরমের অস্বস্তি আরও বাড়বে। শহরের রাস্তায় লু বইবে, বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে। তবে রবিবার থেকে ছবিটা বদলাতে শুরু করবে। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় শুরু হবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত। তারপর টানা পাঁচদিন বজ্র-সহ ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই বৃষ্টিতে তাপমাত্রা ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “গরমের এই অস্বস্তিকর আবহাওয়া থেকে মুক্তি পেতে এই বৃষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” স্থানীয় কৃষকরাও এই বৃষ্টির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন, কারণ খরার হাত থেকে ফসল বাঁচাতে এই সময়ের বৃষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হুগলির এক কৃষক কিশোর মালি জানান, “যদি এই বৃষ্টি ঠিকঠাক হয়, তাহলে আম, লিচু, পেঁপে সহ একাধিক ফলের চাষে প্রাণ ফিরে আসবে।” তবে অতিরিক্ত বজ্রপাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরা। তারা সতর্ক করেছেন, “বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে দাঁড়ানো যাবে না, জল জমা রাস্তা এড়িয়ে চলতে হবে, ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে।” স্বাস্থ্য দপ্তরও জানিয়েছে, গরমে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে যথাসম্ভব বাইরে বেরোনো বন্ধ রাখতে হবে, প্রচুর জলপান করতে হবে এবং সুতির হালকা পোশাক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দোকানপাট, রেস্তোরাঁর মালিকরাও একটু স্বস্তির খোঁজে। হাওড়ার এক দোকানদার বললেন, “এই গরমে দোকানে কেউ আসতেই চাইছে না। একটু বৃষ্টি হলে অন্তত বিক্রিবাটা বাড়বে।” পাশাপাশি, স্কুলগুলিতেও শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, গরমের দিনে পড়ুয়াদের জলপান করাতে এবং হালকা খাবার খাওয়াতে। পরিবহন দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, অতিরিক্ত গরমে বাস চালকদের পর্যাপ্ত জলপানের সুবিধা রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টির এই সম্ভাবনা মানুষের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। যদিও আগামী কয়েকদিন গরমের প্রকোপ কিছুটা থাকবে, তবুও রবিবার থেকে শুরু হওয়া সম্ভাব্য ঝড়বৃষ্টি কিছুটা হলেও প্রাণ জুড়াবে রাজ্যবাসীর। আবহাওয়াবিদ সৌমেন মণ্ডল জানিয়েছেন, “গ্রীষ্মের এই ভরদুপুরে এমন একটা স্বস্তির বৃষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বজ্রবিদ্যুৎ থেকে সাবধান থাকা প্রয়োজন।” শেষ পর্যন্ত প্রকৃতির এই সামান্য আশীর্বাদ দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জীবনে কিছুটা হলেও সুরাহা এনে দেবে, এমনটাই আশা করা যায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments