Salute to the brave martyrs of Nadia in song:-নদীয়ার পাথরঘাটা গ্রাম আজ সাক্ষী থাকল এক করুণ অথচ গর্বের ইতিহাসের, যেখানে বীর শহীদ ঝন্টু আলী শেখের মৃতদেহ গান স্যালুটের মাধ্যমে শেষকৃত্য সম্পন্ন হলো, আর সকাল থেকেই গোটা গ্রাম যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল এই বীর সন্তানকে শেষবারের জন্য দেখতে, এদিন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ সেনাবাহিনীর গাড়িতে মোড়ানো ভারতের জাতীয় পতাকায় আবৃত অবস্থায় শহীদ ঝন্টু আলী শেখের মৃতদেহ তার বাড়িতে এসে পৌঁছায়, বাড়ির সামনের মঞ্চে প্রথমে তার দেহ রাখা হয় এবং তখনই পরিবার,

আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামবাসীদের কান্নার রোল আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তোলে, এরপর স্থানীয় ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে শহীদের বাড়িতে সমস্ত নিয়ম পালন করা হয়, স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেব এসে দোয়া পাঠ করেন, এরপর আবার মৃতদেহ মঞ্চে নিয়ে আসা হয় যেখানে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, তেহট্টের বিধায়ক ও নাকাশিপাড়ার বিধায়ক সহ একাধিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব উপস্থিত থেকে পুষ্পমালা অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান, সেনাবাহিনীর তরফ থেকে পরিপূর্ণ সামরিক মর্যাদায় গান স্যালুট প্রদান করা হয়, তখন গোটা এলাকা যেন আরও একবার বিষণ্নতার চাদরে মোড়া পড়ে,
সেনাদের কাঁধে চাপিয়ে বীর শহীদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কবরস্থানের দিকে, সেখানে ইসলামী রীতিনীতি মেনে তাকে সমাধিস্থ করা হয়, পুরো এলাকায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় ছিল, প্রায় সবাই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি, জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে বজায় রাখা হয়, ঝন্টু আলী শেখের মৃত্যুর খবরে কেবল তার পরিবার নয়, গোটা নদীয়া জেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ হাসান বলেন, “ঝন্টু আমাদের গর্ব, সে নিজের প্রাণ দিয়ে দেশকে রক্ষা করেছে, আজ সে আমাদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে,” শহীদের বাবা আহমেদ আলী শেখ চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, “ছেলেকে হারালাম, কিন্তু দেশের জন্য এই আত্মত্যাগে আমি গর্বিত,”

গোটা পাথরঘাটা গ্রাম আজ একবাক্যে বলছে, “আমরা গর্বিত ঝন্টুকে পেয়ে,” সামনের দিনগুলিতে ঝন্টু আলী শেখের স্মৃতিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানে তাদের মাটির ছেলেরা কিভাবে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিল, পাশাপাশি প্রশাসনের তরফ থেকেও শহীদ পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, গান স্যালুটের মুহূর্তে উপস্থিত জনতার চোখে জল আর বুকের ভেতর দেশপ্রেমের গর্জন মিলেমিশে এক অভূতপূর্ব আবেগের সৃষ্টি করেছিল, শহীদ ঝন্টু আলী শেখ আমাদের দেখিয়ে গেলেন, দেশের প্রতি ভালবাসা কীভাবে প্রমাণ করতে হয়, তাঁর এই আত্মত্যাগ অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে হাজার হাজার তরুণের হৃদয়ে, আর পাথরঘাটা থেকে দেশবাসী একসুরে বলবে – “বীর শহীদ ঝন্টু আলী শেখ অমর রহে।”