Finally, the bear grabbed the bird by the neck and came down:জঙ্গলের রহস্যময়তা আর তার বন্য প্রাণীদের আচরণ সব সময়ই আমাদের বিস্ময়ে ভরিয়ে তোলে। কিন্তু সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও আমাদের চেনা ভাবনাকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল। ইগল, যাকে আমরা আকাশের রাজা বলে জানি, সে-ই কিনা এক ভালুকের শিকার হয়ে গেল গাছের ডালে বসে থাকার সময়! হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। ভিডিওটি দেখলে বোঝা যায়, একটি বিশাল আকৃতির ভালুক ধীরে ধীরে একটি গাছে চড়ে উপরে উঠে যায়। সেই গাছের একেবারে উঁচু ডালের শেষপ্রান্তে বসে ছিল একটি ইগল, যার মনোযোগ ছিল চারপাশ পর্যবেক্ষণে। একটুও আঁচ করতে পারেনি সে যে, নিচ থেকে একধরণের ধূর্ত হিংস্রতা নিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে এক হিংস্র প্রাণী। আর ঠিক তখনই ঘটে যায় অবিশ্বাস্য ঘটনাটি—ভালুকটি মুহূর্তের মধ্যে ইগলের ঘাড়ে কামড় বসিয়ে তাকে একেবারে থামিয়ে দেয়। ইগলটি প্রাণপণে ছটফট করছিল, ডানা ঝাঁপটাচ্ছিল, চেষ্টা করছিল উড়ে পালানোর। কিন্তু ততক্ষণে তার শিকার হওয়া নিশ্চিত। ভালুকটি তার শিকারের ঘাড় চেপে ধরে গাছ বেয়ে আবার নিচে নামতে শুরু করে। ইগলের মৃত্যু তখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ‘FerociousPlanet’ নামক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে, যার ক্যাপশনেও লেখা হয়েছে—“Nature is brutal!”। ভিডিওটি ঠিক কোথায় তোলা হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে আন্দাজ করা হচ্ছে এটি আফ্রিকার কোনো গভীর অরণ্যে বা আমেরিকার রকি মাউন্টেন জাতীয় পার্ক অঞ্চলে তোলা। কারণ এই ধরনের বড় মাপের ভালুক ও ঈগল উভয়ই এই অঞ্চলে দেখা যায়।
ভিডিওটি ইতিমধ্যেই কয়েক মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ মন্তব্যে বিস্ময়, হতবাক ভাব ও কষ্টের বহিঃপ্রকাশ জানিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, “জীবন মানেই সংগ্রাম”, আবার কেউ লিখেছেন, “এতটা নিষ্ঠুরভাবে প্রকৃতি কখনও কখনও আমাদের বুঝিয়ে দেয়—এখানে দয়া চলে না”। তবে অনেকেই আবার এই ঘটনার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন এটা হয়তো CGI বা এডিট করা ভিডিও, কারণ ভালুক সাধারণত এত উপরে ওঠে না শুধু একটি পাখির জন্য। তবে বিপরীতপথেও মত রয়েছে—প্রকৃতির কাছে কিছুই অসম্ভব নয়। বন দপ্তরের একজন আধিকারিক নাম প্রকাশ না করে জানান, “ভালুক সাধারণত ফল, মধু এবং কখনও প্রাণী শিকার করে, তবে এমনভাবে গাছে উঠে পাখি শিকার করার ঘটনা একেবারেই বিরল। ভিডিওটি যদি সত্যি হয়, তবে এটা প্রাকৃতিক আচরণের একটি অসাধারণ উদাহরণ।” তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়, কিভাবে শিকারী ও শিকার—দু’জনেই প্রকৃতির নিয়মে বাঁধা।” জঙ্গলের পর্যটনে যাঁরা এই ভিডিও ধারণ করেছেন, তাঁদের বক্তব্যও বেশ চমকপ্রদ। তাঁদের মধ্যে একজন জানান, “আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম ভালুকটি গাছে কোনও ফল খুঁজছে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখের সামনে যা দেখলাম, তা যেন কোনও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ডকুমেন্টারির থেকেও বেশি নাটকীয়।” এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে এতটাই প্রভাব ফেলেছে যে, পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে প্রাণী আচরণ বিশারদ, সবাই এর বিশ্লেষণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ বলছেন, বনাঞ্চলে খাবারের অভাবই হয়তো ভালুককে এমন শিকারের পথে ঠেলেছে। আবার অনেকে বলছেন,

এই ভিডিওটি আমাদের একটি বার্তা দেয়—প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হলে বন্য প্রাণীদের স্বভাবও পাল্টে যায়। এই ঘটনার সামাজিক প্রভাবও অনুধাবনযোগ্য। সাধারণ মানুষ যেমন প্রাকৃতিক আচরণের এই দিকগুলো নিয়ে সচেতন হচ্ছেন, তেমনি অনেকেই প্রাণী অধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকেও বিষয়টি দেখছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই ভিডিও প্রচার করার ফলে মানুষ প্রাণীদের প্রতি আরেকটু সহানুভূতিশীল হবে, আবার কেউ বলছেন, শিকার দৃশ্যকে ভাইরাল করে দেওয়া আসলে হিংস্রতা উসকে দেয়। আগামীতে এই ধরনের ভিডিও হয়তো আরও দেখা যাবে, কারণ সমাজমাধ্যমে এখন প্রতিনিয়তই কেউ না কেউ নানা প্রান্তের জঙ্গলে মোবাইল বা ড্রোন দিয়ে নজর রাখছেন। তবে এই ঘটনার একটি দিক বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়—তা হল বন্য প্রাণীদের আচরণের অনিশ্চয়তা। মানুষ যতই আধুনিক হোক, জঙ্গলে গেলে সাবধানতা ও সচেতনতা ছাড়া কিছুই নিরাপদ নয়। আর এই ভিডিও যেন প্রকৃতির পাঠশালায় আমাদের নতুন করে ভর্তি করে দেয়। এটি শুধু একটি শিকার নয়, বরং প্রকৃতি কিভাবে প্রতিদিন নিজের নিয়মে চলে তা মনে করিয়ে দেওয়া এক নিখুঁত মুহূর্ত। সংবাদমাধ্যম ‘খবর বাংলা’ এই ভিডিওর সত্যতা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি, তবে সামাজিক আলোচনার প্রেক্ষিতে এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলা যায়—এটি যদি বাস্তব হয়, তবে নিঃসন্দেহে এটি এই দশকের অন্যতম প্রাকৃতিক আচরণের বিরলতম নজির। এই ঘটনা আমাদের শেখায়, প্রকৃতির মাঝে লুকিয়ে থাকে অজস্র অজানা কাহিনি—কখনো রোমাঞ্চকর, কখনো নির্মম, কিন্তু সব সময়ই শিক্ষণীয়।