Bengali tourist killed in terrorist attack in Pahalgaon: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের পাটুলির বাসিন্দা বিতান অধিকারী। এই হামলায় মোট ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। বিতান অধিকারী, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS)-এর একজন কর্মী ছিলেন, স্ত্রী ও তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁদের ২৪ এপ্রিল কলকাতায় ফেরার কথা ছিল, কিন্তু ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বাইসারান মেদিনায় জঙ্গিদের গুলিতে তাঁর মৃত্যু ঘটে। এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং বিতান অধিকারীর স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকার বিতান অধিকারীর মরদেহ কলকাতায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
হামলার স্থান বাইসারান, যা ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত, পহেলগাঁও থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এই স্থানে চারজন সশস্ত্র জঙ্গি পর্যটকদের উপর গুলি চালায়, যার ফলে ২৬ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। এই হামলার দায়িত্ব ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামক একটি জঙ্গি গোষ্ঠী স্বীকার করেছে। এই ঘটনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন এবং একটি উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হামলার শিকারদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এই হামলার ফলে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে বড় ধাক্কা লেগেছে। পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেকেই তাঁদের সফর বাতিল করছেন। কাশ্মীরের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা, যারা পর্যটনের উপর নির্ভরশীল, এই পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিতান অধিকারীর মতো একজন প্রতিভাবান তরুণের অকাল মৃত্যু শুধু তাঁর পরিবারের জন্য নয়, সমগ্র জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হয়েছে যে, সন্ত্রাসবাদ মানবতার শত্রু এবং এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে।