MAOIST ENCOUNTER IN BOKARO: ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার লুগু পাহাড়ের গভীর জঙ্গলে সোমবার ভোরে নিরাপত্তা বাহিনীর এক যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছেন ৮ জন মাওবাদী, যাদের মধ্যে একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা। এই অভিযানে অংশ নেয় সিআরপিএফ-এর জঙ্গল ওয়ারফেয়ার ইউনিট, কোবরা কম্যান্ডো ব্যাটেলিয়ন এবং ঝাড়খণ্ড পুলিশ। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ শুরু হওয়া এই গুলির লড়াইয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো জওয়ান হতাহত হননি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একে-৪৭ রাইফেল, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, পিস্তল এবং দেশি বন্দুকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র।
এই অভিযানের প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য যে, কয়েক সপ্তাহ আগে মাওবাদীদের পক্ষ থেকে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। মাওবাদী পলিটব্যুরোর সদস্য মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে অভয়ের নামে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে, এই প্রস্তাবের পরেও ছত্তীসগঢ় এবং ঝাড়খণ্ডে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশকে ‘মাওবাদী মুক্ত’ করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। তিনি মাওবাদীদের অস্ত্র ত্যাগ করে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন এবং আত্মসমর্পণকারীদের জন্য পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের মতে, এই অভিযানে নিহতদের মধ্যে একজন শীর্ষ মাওবাদী নেতা, যার মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা। তবে, তাঁর পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এই অভিযানের ফলে বোকারো এবং আশেপাশের এলাকায় মাওবাদীদের প্রভাব হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে মনে করছেন, এই অভিযান মাওবাদী হুমকি হ্রাসে সহায়ক হবে, আবার অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন যে, এর ফলে মাওবাদীরা প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে। তবে, প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে যে, এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে সরকার মাওবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও এমন অভিযান চালানো হতে পারে। তবে, মাওবাদী সমস্যা সমাধানে শুধুমাত্র সামরিক পদক্ষেপ নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের আস্থা অর্জন করাও জরুরি।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক পরিবেশেও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারের নীতির সমালোচনা করছে এবং মাওবাদী সমস্যার সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে।
সর্বশেষে, এই অভিযান মাওবাদী দমনে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন হলেও, সমস্যার মূল কারণগুলি চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য একটি সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে, এই অভিযানের মাধ্যমে বোকারো এবং আশেপাশের এলাকায় মাওবাদী কার্যকলাপ হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।