Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যমাল্লাগুড়ির হনুমান মন্দিরে পুজো দিলেন মেয়র গৌতম দেব

মাল্লাগুড়ির হনুমান মন্দিরে পুজো দিলেন মেয়র গৌতম দেব

Gautam Deb: আজ সারা দেশের মতো শিলিগুড়িতেও সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে হনুমান জয়ন্তী, আর এই উৎসবের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল হিলকার্ট রোডের মাল্লাগুড়ি এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক হনুমান মন্দির, যেখানে সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড়, ঢাকের বাদ্যি, ফুলের গন্ধ, প্রসাদের সুবাস আর সানাইয়ের মেলায় যেন মিলেমিশে গিয়েছিল ধর্ম ও সংস্কৃতির এক অনন্য মেলবন্ধনে, আর এই শুভ দিনে শহরের প্রাণকেন্দ্র শিলিগুড়ির মেয়র তথা প্রাক্তন রাজ্য মন্ত্রী গৌতম দেব নিজে উপস্থিত হয়ে এই পবিত্র স্থানে পূজো দিলেন, যা শুধু রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক দিক থেকে নয়, বরং এক সামাজিক সংহতির বার্তা হিসেবেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক গভীর প্রভাব ফেলেছে, কারণ এই মন্দির শুধুই ধর্মীয় স্থান নয়, এটি মাল্লাগুড়ি এলাকাবাসীর আবেগ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যেখানে প্রতি বছর হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন ভগবান বজরংবলীর আশীর্বাদ নিতে, আর এই বছরে ভোরবেলা থেকেই শুরু হয়েছিল পুজো-অর্চনা, মহামৃত্যুঞ্জয় জপ, রাম নাম সংকীর্তন ও বিশেষ প্রসাদ বিতরণ, সঙ্গে ছিল ভক্তদের জন্য খিচুড়ি ভোগ ও ফল বিতরণ, যা একটি ছোট খাটো ধর্মীয় মেলায় পরিণত হয়, আর এই আবহে গৌতম দেব যখন মন্দিরে প্রবেশ করেন, তখন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভক্তকুল, সবাই তাঁকে ঘিরে ধরেন, কেউ আশীর্বাদ চান, কেউ ছবি তোলেন, আবার কেউ নিজের সমস্যার কথা বলেন — আর এই মুহূর্তে একজন রাজনৈতিক নেতার বদলে তাঁকে যেন দেখা যায় এক স্নেহশীল অভিভাবকের ভূমিকায়, যিনি বলেন, “প্রতিবছর এই দিনে মাল্লাগুড়ির হনুমান মন্দিরে আসা হয়, এখানে এসে একটা শান্তি পাই, আজও ভগবান বজরংবলীর কাছে প্রার্থনা করলাম, আমাদের শিলিগুড়ি শহর যেন সবসময় সুখী, সুস্থ ও নিরাপদ থাকে, আর মানুষের জীবন হোক শান্তিময়,” —

1709755811 1690431931 goutam

মেয়রের এই সহজ, আন্তরিক বক্তব্য যেন সকলের মন জয় করে নেয়, আর পুজো শেষে তিনি কিছু সময় ভক্তদের সঙ্গে বসে কথা বলেন, ছোটদের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেন, প্রবীণদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন, আর সব মিলিয়ে একটা প্রাণবন্ত সামাজিক সংযোগ তৈরি হয়, যেটা আজকের দিনে রাজনীতির বাইরে গিয়ে সমাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, বিশেষত বর্তমান সময়ে যখন ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি প্রায়ই রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে চলে যায়, তখন গৌতম দেবের এই ভক্তিভরে উপস্থিতি যেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যেটা শুধুই একজন জনপ্রতিনিধির কর্তব্য নয়, বরং একজন মানুষের নিজের সংস্কৃতির সঙ্গে আত্মিক সংযোগের প্রতিফলন, উল্লেখযোগ্যভাবে, হনুমান জয়ন্তী প্রতি বছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয়, আর এটি সেই দিন যেদিন বজরংবলী বা মহাবলী হনুমানের জন্মদিন হিসেবে গণ্য করা হয়, হিন্দু পুরাণ অনুসারে, তিনি রুদ্র অবতার হিসেবে পরিচিত এবং ভগবান শিবের এক বিশেষ রূপ, যিনি রামচন্দ্রের প্রতি তাঁর একনিষ্ঠ ভক্তি ও সেবার জন্য হিন্দু ধর্মে এক অনন্য স্থান অধিকার করেন, তাই এই দিন ভক্তরা বিশেষ ভাবে উপবাস পালন করেন, সিঁদুরে রঙের প্রসাদ দেন, হনুমান চালিসা পাঠ করেন এবং মন্দিরে গিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন — ঠিক তেমনই চিত্র দেখা যায় মাল্লাগুড়িতেও, যেখানে বহু পুরনো এই মন্দিরটি শুধু শিলিগুড়ির নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত, স্থানীয় বাসিন্দা রমাকান্ত পাণ্ডে বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকে এখানেই পুজো দিতে আসি, কিন্তু আজ যখন দেখলাম মেয়র নিজে এসে পুজো দিচ্ছেন, তখন মনে হল উনি শুধু প্রশাসকের ভূমিকায় নয়, সাধারণ মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছেন,” —

আরেকজন প্রবীণ নাগরিক চন্দ্রা সাহা জানান, “বজরংবলীর আশীর্বাদে আমি আমার ছেলে-মেয়েদের মানুষ করেছি, এই মন্দিরের সঙ্গে আমাদের প্রাণ জড়িয়ে, আজ এমন দিনে শহরের মেয়র নিজে এসে পুজো দিলেন, এটা খুব আনন্দের ও গর্বের,” — এইভাবেই এই ধর্মীয় উৎসব এক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনের উৎসব হয়ে ওঠে, যেখানে ধর্ম শুধু আচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং মানুষের হৃদয়ের স্পর্শে এক সম্প্রীতির বন্ধনে পরিণত হয়, এদিকে শিলিগুড়ি পুরসভা ও স্থানীয় প্রশাসন এই উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে, পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স, হোমগার্ড ও স্বেচ্ছাসেবকরা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য মন্দির প্রাঙ্গণে নিয়োজিত ছিলেন, মন্দিরের ভিতরে ও বাইরে স্থাপন করা হয় সিসিটিভি ক্যামেরা, এবং মেডিকেল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল কোনও রকম অসুবিধার জন্য, এমনকি আশেপাশে ট্রাফিক ব্যবস্থাও ছিল চমৎকার, যেটা ভক্তরা প্রশংসা করেন, অনেকেই বলছেন, এই ধরনের প্রশাসনিক সহযোগিতা না থাকলে এত বড় উৎসব সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হতো না — এখানেই দেখা যায় এক প্রকৃত সমন্বয়, যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি, প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ একসঙ্গে মিশে গিয়েছে, যা এই শহরকে আরও মানবিক করে তোলে, শেষ পর্যন্ত, মেয়র গৌতম দেবের এই মন্দির সফর শুধু একটি পুজোর আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং এটি ছিল মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক নিঃশব্দ প্রতিশ্রুতি, তাঁর এই উপস্থিতি ভক্তদের কাছে আশার প্রতীক হয়ে ওঠে, এবং মাল্লাগুড়ি এলাকাবাসীর কাছে এই দিনটি আরও স্মরণীয় হয়ে থাকে — এইভাবেই ‘খবর বাংলা’-র ক্যামেরায় বন্দি হয়ে রইল এক শান্তিপূর্ণ, ভক্তিভরা, আন্তরিক, এবং সম্প্রীতির দিন, যা শুধু এই বছরে নয়, আগামী দিনেও শহরবাসীর স্মৃতিতে রয়ে যাবে এক উজ্জ্বল আলোকচিত্র হয়ে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments