The goat left the field and climbed onto the electric wire to eat grass!: ছাগল মানেই একরকমের শান্ত স্বভাবের প্রাণী, সারাদিন ঘাস খায়, মাঠে ঘোরে, আর মাঝে মাঝে একটু বাচ্চার মতো ডাকে – এই চেনা ছবিটাই যেন বদলে দিল এক আশ্চর্য ভিডিও, যেটা এখন ঘুরছে ইনস্টাগ্রামের পাতায়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে – এক ছাগল তার স্বাভাবিক গণ্ডি ছেড়ে উঠে পড়েছে… না কোনও টিলায় নয়, বা গাছে নয়… উঠে গেছে একেবারে বিদ্যুতের তারে! আর সেখানে দাঁড়িয়ে দিব্যি ঘাস খাচ্ছে! ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য! ‘ইলহানাতালায়’ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে, যেটি ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক মানুষ দেখে ফেলেছেন, কেউ কেউ মুগ্ধ, কেউ আবার চোখ কপালে তুলেছেন, আর কেউ তো সরাসরি এই ঘটনাকে বলছেন “AI-র কীর্তি”। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রাস্তার দু’ধারে বিদ্যুতের খুঁটি, আর সেই খুঁটির মাঝে থাকা একটি তারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি ছাগল। কোনও কষ্ট না করে দিব্যি ঘাস খাচ্ছে সে, যেন এটা তার নিত্যদিনের কাজ। কিন্তু আসল প্রশ্নটা এখানেই – বিদ্যুতের তারে ছাগল উঠবে কীভাবে? ভারসাম্য রাখবে কী করে? বিদ্যুতের তার তো এতটাও মোটা নয় যে ছাগলের মতো ভারী পশু এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে! সমাজমাধ্যমে এই নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কেউ বলেছেন, “ছাগলটা নিশ্চয়ই প্রশিক্ষিত সার্কাসের, নাহলে এটা সম্ভব নয়।” আবার কেউ লিখেছেন, “এটা ১০০% AI-generated, ছাগল বিদ্যুতের তারে উঠতে পারে? এত হালকা তারে দাঁড়িয়ে থাকবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা?” নেটিজেনদের একাংশ মজা করে বলছেন, “এই ছাগলকে দাও সুপারহিরোর পদবি, নাম হবে – GoatMan!” কিন্তু হাস্যরসের আড়ালে প্রশ্ন কিন্তু গুরুতর – ভিডিওটি সত্যি তো? খবর বাংলা এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি, এবং এখনও পর্যন্ত কোথায় এই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে সেটাও স্পষ্ট নয়। তবে ভিডিওতে জিনিসগুলো এত নিখুঁতভাবে দেখানো হয়েছে যে অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না – এটা বাস্তব না কি প্রযুক্তির কারসাজি।
বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এমন অনেক ভিডিও তৈরি করা যায় যা বাস্তবের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। বিশেষ করে Deepfake বা AI-generated video প্রযুক্তি এখন এত উন্নত যে বাস্তব ও ভুয়োর মাঝে পার্থক্য করাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভিডিওটিতে ছাগলের শরীরের ছায়া, তার নড়াচড়া, ঘাস খাওয়ার ভঙ্গিমা এতটাই স্বাভাবিক যে এক মুহূর্তের জন্য সত্যি বলে ভুল হয়। অনেক AI এক্সপার্ট বলছেন, “এই ভিডিওর মোশন স্ট্যাবিলিটি আর ফ্রেম ট্রানজিশন দেখে মনে হচ্ছে এটা ভাল কোনও AI ভিডিও টুল দিয়ে বানানো হয়েছে। সম্ভবত Midjourney বা Runway-এর মতো প্ল্যাটফর্মে তৈরি করা হয়েছে।” ভিডিওটি আপলোড হওয়ার পর থেকে হাসির ঝড় বয়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে। কেউ বলেছেন, “ছাগলও এখন 5G সংযোগ পেয়েছে”, আবার কেউ লিখেছেন, “এটা কি এলন মাস্কের Goat-X প্রোজেক্ট?” একদিকে যেমন ভিডিওটি মানুষকে আনন্দ দিচ্ছে, অন্যদিকে এর মাধ্যমে আবার এক নতুন আলোচনার দরজা খুলে যাচ্ছে – সোশাল মিডিয়াতে কোন জিনিস সত্যি আর কোনটা বানানো, সেটা বোঝার ক্ষমতা আমাদের কতটা আছে? ভিডিওটি যদি সত্যি হয়, তাহলে ছাগলটির অবিশ্বাস্য ব্যালেন্সিং ক্ষমতা ও দৃষ্টিশক্তির প্রশংসা করতেই হয়। আবার যদি ভিডিওটি বানানো হয়, তাহলে এর প্রযুক্তি ও ক্রিয়েটিভিটিরও প্রশংসা করা উচিত। তবে প্রশ্ন উঠছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে – যদি সাধারণ মানুষ এমন একটি ভিডিওকে সত্যি মনে করেন এবং তা ভাইরাল করতে থাকেন, তাহলে ভুল তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনাও থেকে যায়। এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে টেক এক্সপার্ট সৌরভ ঘোষ বলেন, “বর্তমানে সোশাল মিডিয়ায় প্রচুর Deepfake কনটেন্ট ছড়াচ্ছে। সবাই ভিডিও দেখে বিশ্বাস করে ফেলছে, যাচাই না করেই শেয়ার করছে।

এটা খুবই বিপজ্জনক।” ঠিক এই কারণেই খবর বাংলার পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার বার্তা দেওয়া হচ্ছে – যে কোনও ভিডিও ভাইরাল হলেই তার সত্যতা যাচাই না করে বিশ্বাস করা উচিত নয়। পাশাপাশি আমরা আবেদন জানাচ্ছি – সোশাল মিডিয়ার দায়িত্বশীল ব্যবহার করুন। পুরনো দিনে মানুষ বলত, “মুখে যা শুনেছি, সেটা সব সত্যি নয়”, আর এখন বলতেই হয় – “ভিডিওতে যা দেখছি, সেটাও সব সত্যি নয়।” AI এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার সীমানা ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। এমনকি AI ব্যবহার করে এখন মানুষের কণ্ঠস্বর, মুখের অভিব্যক্তি, কথোপকথনও তৈরি করা সম্ভব – তাই এই ‘তার-ছাগল’ নিয়ে যতই আলোচনা হোক, ততই বুঝে নিতে হবে প্রযুক্তির সীমা কতটা বিস্তৃত। শেষ কথা বলতে গেলে, ছাগলটির ঘাস খাওয়া হোক আসল বা নকল, সেটি মানুষের মনে আনন্দ দিয়েছে, একটা ব্যতিক্রমী কাহিনী হিসাবে ভাইরাল হয়েছে, হাসির খোরাক হয়েছে – তবে এর থেকে শিক্ষা নেওয়াও জরুরি। আমরা যেন ভবিষ্যতে প্রযুক্তিকে বুঝে ব্যবহার করি, সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করতে শিখি।