Elderly man emerges from burning concern! Viral video:সম্প্রতি একটি বিরল ঘটনা ভাইরাল হয়ে উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে, যা দেখে সবাই হতবাক। এটি একটি ভিডিও, যা দেখাচ্ছে এক তরুণের সাহসিকতা এবং তার সঙ্গে এক চিতার অদ্ভুত সম্পর্ক। কিন্তু এটি শুধু একটি সাধারণ ভিডিও নয়, বরং এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে, যেখানে একটি স্ত্রী চিতা তার চারটি শাবকসহ গাছের তলায় বসেছিল। তার পাশেই ছিল একটি তরুণ, সত্যনারায়ণ গুরজার, যিনি শান্তভাবে ওই চিতাদের কাছে গিয়ে তাদের জল খেতে দিলেন। ঘটনাটি এতটাই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে যে, এটি খুব দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটির শুরুতেই দেখা যায়, তরুণটি চিতাদের কাছে একটি থালায় জল নিয়ে এসে রেখেছে। স্ত্রী চিতাটি এবং তার শাবকরা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে জল খেতে এগিয়ে আসে, এবং তারা একেবারে অশান্তি না করে তরুণের কাছ থেকে জল খেয়ে নেয়। বিষয়টি এতটাই চমকপ্রদ যে, ভিডিওটি মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তরুণটি তার প্রাণের ঝুঁকি না নিয়ে শান্তভাবে ওই চিতাদের খাবার ও জল দেওয়ার দৃশ্য দেখে সকলেই অবাক। তিনি শুধু জল দেয়নি, বরং তাদের শান্তভাবে তৃষ্ণা মেটাতে সহায়তা করেছেন, এবং তারপর হাসিমুখে সেখান থেকে সরে গিয়েছেন। ভিডিওটির পোস্টিং এর পরেই সেটি ছড়িয়ে পড়ে, এবং হাজার হাজার মানুষ এই সাহসিকতা দেখে অবাক হয়েছেন।
তবে, ভিডিওটির সত্যতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ওঠে। এই ভিডিওটি ‘ফিল্মিমন্ত্রমিডিয়া’ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। সঠিক তথ্য যাচাই না করা পর্যন্ত খবর বাংলা এই ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। যদিও ভিডিওটি বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তবে এর প্রকৃততা নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি যদি সত্যিই ঘটে থাকে, তবে সেটি একটি বড় সাহসিকতার পরিচয় হতে পারে, তবে একই সঙ্গে তা ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে। সাফারি পার্ক বা জাতীয় উদ্যানের মধ্যে এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটে না, কারণ চিতারা সাধারণত তাদের শিকার এবং নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
এছাড়া, একজন বিশেষজ্ঞ জানান, চিতাদের প্রতি মানুষের এ ধরনের সহযোগিতা সাধারণত বিরল, কারণ এই প্রাণীগুলি বন্য এবং তাদের কাছাকাছি যাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। অনেক সময়, মানুষের উপস্থিতি তাদের আচরণে পরিবর্তন আনতে পারে। তবে এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণটি যে খুবই শান্তভাবে এবং সতর্কভাবে চিতাদের কাছ থেকে সরে আসছে, সেটি একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি বিপদকে সামনে রেখে চিতাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করেছেন, যা মানবিকতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
কুনো জাতীয় উদ্যানে এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। এটি একটি বিশেষ প্রকৃতি সংরক্ষণ এলাকা, যেখানে বন্যপ্রাণী বিশেষত চিতা, বাঘ, গাই, এবং অন্যান্য বিরল প্রাণী সংরক্ষণ করা হয়। মধ্যপ্রদেশ সরকারের উদ্যোগে এই উদ্যানে বেশ কিছু বছরের মধ্যে চিতাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। চিতারা এখানে তাদের নতুন আবাসস্থলে অনায়াসে বাস করতে শিখছে। তবে, চিতার মতো বন্য প্রাণীর মধ্যে মানুষের উপস্থিতি নিয়ে গবেষণা চলছে, এবং এর ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
এই ভিডিওটির ভাইরাল হওয়ার পর থেকে স্থানীয় জনগণের মধ্যে এক নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এই ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং এতে কিছুটা অবিশ্বাসও সৃষ্টি হয়েছে। তবে, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় স্থানীয় সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের মনোযোগ বাড়ছে। তারা এখন আরো সচেতন হচ্ছেন যে, এই ধরনের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্যোগ এবং মানুষের সহানুভূতির প্রয়োজনীয়তা কতটা। চিতার মতো বন্য প্রাণী সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণের আরো আগ্রহ এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হতে পারে।
তবে এই ভিডিওটি যে শুধু সামাজিক মাধ্যমেই জনপ্রিয় হয়নি, তার প্রভাব আরও বিস্তৃত। নানা ধরনের মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই ভিডিওটি উঠে এসেছে। বিশেষ করে ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এটি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া, এই ভিডিওটি বেশ কিছু উদাহরণ তুলে ধরছে, যেখানে মানুষ এবং প্রাণী একে অপরকে সহায়তা করতে পারে। এটা একটি বড় প্রশ্ন তুলছে যে, আমাদের সমাজে বন্য প্রাণীদের প্রতি দয়ার দৃশ্যটি কি আরও বৃদ্ধি পাবে, এবং কীভাবে আমাদের আচরণ প্রকৃতির প্রতি আরও সদয় হতে পারে।
ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটির প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া মিশ্রিত। কেউ এটি সাহসিকতা বলে প্রশংসা করেছে, আবার কেউ কেউ এটিকে খারাপ উদাহরণ হিসেবে দেখছে, কারণ বন্যপ্রাণীকে এভাবে কাছাকাছি আসা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে যে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, এই ঘটনা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। একদিকে, এই ভিডিওটি সমাজের মধ্যে একটি নতুন ধারার সংবেদনশীলতা এবং সচেতনতা তৈরি করেছে, আর অন্যদিকে এটি সামাজিক মাধ্যমে মানুষকে আরো একত্রিত করতে এবং ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়তে সহায়ক হতে পারে।