41 families leave BJP and join Trinamool Congress:বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ময়দানে ব্যাপক রদবদল চলছে, আর তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর ১ ব্লকে। সম্প্রতি ৪১টি পরিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছে, যা নিঃসন্দেহে শাসকদলের জন্য এক বড় সাফল্য। শুধু সাধারণ কর্মী নন, ভগবানপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের খাগা বুথের সুবুদপুরের বিজেপি প্রতীকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য কালি শংকর মাইতি-ও তার অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে, এই দলবদল নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন চর্চা শুরু হয়েছে।

কীভাবে ঘটল এই দলবদল?
ভগবানপুর ১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে এক বিশাল যোগদান সভার আয়োজন করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন ব্লক সভাপতি রবিন চন্দ্র মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন ভগবানপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অরূপ সুন্দর পন্ডা। এই যোগদান সভায় যোগ দেওয়া মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো।

যোগদানকারীদের মতে, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের উন্নয়নমূলক কাজই তাদের দলে ফেরার অন্যতম কারণ। বিজেপিতে থাকার ফলে তাদের উপেক্ষা করা হচ্ছিল এবং সাংগঠনিক দুর্বলতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। ফলে, তারা ঠিক করেন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই তারা রাজনীতিতে নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখতে চান।
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া
এই দলবদলের পর তৃণমূল নেতৃত্ব আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রবিন চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এটি শুধু মাত্র একটি শুরু, আগামী দিনে আরও বহু মানুষ বিজেপি ছেড়ে আমাদের দলে আসবেন।”
ভগবানপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অরূপ সুন্দর পন্ডা বলেন, “মানুষের উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। যারা বুঝতে পেরেছেন যে বিজেপি উন্নয়নের পথে অন্তরায়, তারা আজ আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।”

বিজেপির প্রতিক্রিয়া
তবে এই দলবদলকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি বলেন, “এটি তৃণমূলের পুরনো কৌশল। ভয় দেখিয়ে, প্রলোভন দিয়ে কর্মীদের দলে টানা হচ্ছে।” বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এই যোগদান রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দলবদল তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি আরও বাড়িয়ে তুলবে, বিশেষ করে বিধানসভা নির্বাচনের আগে।
📌 তৃণমূল কংগ্রেস এই যোগদানকে তাদের দলের প্রতি আস্থার প্রতিফলন হিসেবে দেখছে।
📌 বিজেপি এটিকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করছে, তবে বাস্তবে তৃণমূলের দিকেই জনসমর্থন বাড়ছে।
📌 স্থানীয় স্তরে বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা এখানকার দলত্যাগের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।

জনগণের প্রতিক্রিয়া
এই দলবদলের পর ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
✅ একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস উন্নয়নের কাজ করছে, তাই আমরা চাই আমাদের নেতা-নেত্রীরা সেই দলে থাকুক।”
✅ অন্যদিকে, বিজেপির এক কর্মী বলেন, “আমাদের দল কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে, তবে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব।”
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/11/tmc-bjp-759.jpg)
ভবিষ্যতে কী প্রভাব পড়বে?
📌 তৃণমূলের জন্য: এই দলবদল তাদের নির্বাচনী প্রচারে আরও শক্তিশালী করবে।
📌 বিজেপির জন্য: এটি একটি বড় ধাক্কা হতে পারে, কারণ তাদের স্থানীয় সংগঠনের উপর এর প্রভাব পড়বে।
📌 ভোটের সমীকরণ: পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি ও তৃণমূলের লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে, তবে তৃণমূলের জন্য এটি এক ইতিবাচক দিক।
উপসংহার
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে দলবদল কোনো নতুন ঘটনা নয়, তবে বিধানসভা ভোটের আগে ৪১টি পরিবারের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান নিঃসন্দেহে বড় ইঙ্গিত বহন করে। এটি প্রমাণ করে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি মানুষের আস্থা এখনও অটুট এবং বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি কোথাও যেন দুর্বল হয়ে পড়ছে। তবে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।