Friday, April 18, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য সন্তোষপুর স্টেশনে ভয়াবহ আগুন

 সন্তোষপুর স্টেশনে ভয়াবহ আগুন

Massive fire breaks out at Santoshpur station: বজবজ শিয়ালদা শাখার সন্তোষপুর রেল স্টেশনে আজ সকালে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যা পুরো এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল প্রায় ৭টা নাগাদ ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপরে অবস্থিত বেশ কিছু দোকানে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই সেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে এবং একে একে অনেক দোকান পুড়ে যায়। স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে দ্রুত দমকল বিভাগ ও রবীন্দ্রনগর থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের চারটি ইঞ্জিন এবং পুলিশ বাহিনী।প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। আগুন এতটাই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে, দোকানদাররা তাদের জিনিসপত্র সরানোর কোনো সুযোগই পাননি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অন্তত ১৫-২০টি দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ব্যবসায়ী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেল! দোকানে থাকা সমস্ত মাল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমি এখন কী করব?”আগুন লাগার ফলে সন্তোষপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় এবং ট্রেন চলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়। বহু যাত্রী সমস্যায় পড়েন এবং অফিসযাত্রীরা আটকে পড়েন। পরে দমকল বাহিনীর দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়, তবে ততক্ষণে বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন দোকানগুলিতে বৈদ্যুতিক তার এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকত এবং বেশ কয়েকবার দোকানদারদের সতর্ক করা হয়েছিল। তবে সঠিকভাবে নজরদারি না থাকায় এই বিপত্তি ঘটে গেল। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা আগেও অভিযোগ করেছি যে এখানে অবৈধভাবে অনেক দোকান তৈরি হয়েছে, এবং বিদ্যুতের সংযোগও ঠিক মতো নেই। অবশেষে সেই দুর্যোগ আজ আমাদের সামনেই ঘটল।”সন্তোষপুর স্টেশন এলাকায় আগুন লাগার এই ঘটনায় বহু ব্যবসায়ী তাদের জীবিকা হারিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও সরকার কোনো ঘোষণা করেনি। তবে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দমকল বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “আগুন লাগার কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিটকেই দায়ী করা হচ্ছে। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”

1200 675 23700871 thumbnail 16x9

এই ঘটনার পর স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি এবং সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, স্টেশনের আশেপাশে দোকানগুলোর বৈধতা ও নিরাপত্তার বিষয়ে রেল প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে ব্যবসা করছি, কিন্তু কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। যদি এখানে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকত, তাহলে এত বড় ক্ষতি হতো না।”প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য স্টেশন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও দোকান ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নতুন বিধি চালু করা হবে।এই দুর্ঘটনার ফলে সন্তোষপুর স্টেশন সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অনেকেই এখন বিকল্প ব্যবসার কথা ভাবছেন, আবার কেউ কেউ সরকার ও রেল প্রশাসনের সহায়তার আশায় আছেন। কিন্তু আদৌ তারা কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments