Women-run railway station starts in Cooch Behar:উত্তরবঙ্গের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শহর কোচবিহার এবার নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিনে কোচবিহার রেলওয়ে স্টেশনকে সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত রেল স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করল ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের অধীনস্থ এই স্টেশনটি এক নজিরবিহীন পদক্ষেপের সাক্ষী হল, যেখানে স্টেশনের সমস্ত কাজকর্ম শুধুমাত্র মহিলা রেলকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হবে।একসময় কোচবিহার রাজ আমলে সি-আর-বি (CRB) এর অধীনে থাকা এই স্টেশন ছিল আন্তর্জাতিক ট্রেন চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। সেই সময় এই স্টেশন হয়ে বাংলাদেশের লালমনিরহাট পর্যন্ত ট্রেন যাতায়াত করত। তবে দেশভাগের পর এই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যা আজও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এক বিষাদময় ইতিহাস। পরবর্তীতে বিভিন্ন মহল থেকে পুনরায় রেল সংযোগ চালুর দাবি উঠলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
বর্তমানে এই স্টেশন দিয়ে বামনহাট-শিলিগুড়ি, বামনহাট-আলিপুরদুয়ার এবং বামনহাট-শিয়ালদহ রুটে ট্রেন চলাচল করে।এই বিশেষ উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অভয় গণপত সনদ। তিনি জানান,“কোচবিহার স্টেশনকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মধ্যে প্রথম মহিলা পরিচালিত স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হলো। আজ থেকে স্টেশনের সমস্ত কাজ মহিলারা পরিচালনা করবেন।”এই স্টেশনের চিফ রিজার্ভেশন সুপারভাইজার তনুশ্রী দাস বলেন,এত বড় দায়িত্ব পেয়ে আমি গর্বিত। আমরা আমাদের কাজ যথাযথভাবে পালন করব এবং যাত্রীদের সর্বোত্তম পরিষেবা দেওয়ার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকব।”এই উদ্যোগ শুধুমাত্র নারীর ক্ষমতায়ন নয়, বরং সমাজে একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে যে মহিলারা যে কোনও দায়িত্ব দক্ষতার সাথে সামলাতে পারেন।
উত্তর-পূর্ব ভারতের মতো অঞ্চলে, যেখানে এখনো পর্যন্ত বহু ক্ষেত্রে নারীদের কাজের সুযোগ সীমিত, সেখানে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন, এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে অন্যান্য স্টেশনেও কার্যকর করা হবে এবং মহিলাদের কর্মসংস্থান আরও বৃদ্ধি পাবে।এদিকে কোচবিহারের নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী মহল ও সিনিয়র সিটিজেনদের একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন, বামনহাট-শিলিগুড়ি জংশন ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেন পুনরায় চালু করা হোক।একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন,এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের দৈনন্দিন যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। স্টেশন এখন মহিলা পরিচালিত হচ্ছে, এটি খুব ভালো উদ্যোগ, তবে পুরনো ট্রেন ফের চালুর দাবিও পূরণ হওয়া দরকার।”