Saturday, April 12, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসমালদায় সিভিকের দাদাগিরি!

মালদায় সিভিকের দাদাগিরি!

Civic’s grandstanding in Malda!:-মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দাদাগিরির অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিসের অনুপস্থিতিতে অবৈধভাবে টাকা আদায়, গাড়ি আটকে হয়রানি এবং চালকদের মারধরের ঘটনা সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেলাবাড়ি নাকা পয়েন্টে এক গাড়িচালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে তিন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। জখম চালকের নাম রুহুল আমিন, যিনি বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, রুহুল আমিন ব্যবসায়ীদের গরু ডালখোলা হাট থেকে নিয়ে আসছিলেন, সঙ্গে ছিলেন গাড়ির মালিকও। ঠিক সেই সময় নাকা পয়েন্টে কর্তব্যরত তিন সিভিক ভলান্টিয়ার গাড়ি আটকান এবং চালকের কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন। চালক পাঁচশো টাকা দিতে চাইলে তারা সেই টাকা নিতে অস্বীকার করেন এবং গাড়ির মালিক-চালককে হুমকি দিতে থাকেন। এরপর জোরপূর্বক চালককে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে নাকা পয়েন্টের ভেতরে একটি ঘরে ঢুকিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। চালকের হাত গুরুতর জখম হয় এবং রোজা থাকার কারণে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আহত চালককে স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

Screenshot 2025 03 08 221125 1

স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। অভিযোগ উঠছে, দীর্ঘদিন ধরেই মালদার বিভিন্ন নাকা পয়েন্টে এভাবে চালকদের থেকে জোর করে টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে সিভিকদের বিরুদ্ধে, কিন্তু প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী মহম্মদ ইকবাল বলেন, “প্রতিদিন এই ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় চালকদের। আমাদের গাড়ি থেকে অহেতুক টাকা নেওয়া হয়, না দিলে গালিগালাজ এমনকি মারধরও করা হয়। পুলিস থাকে না, আর সিভিকরা নিজেদের রাজা মনে করে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই তিন সিভিক ভলান্টিয়ার দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের কার্যকলাপে যুক্ত। নাকা চেকিংয়ের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলার একাধিক অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এক বাসিন্দা বলেন, “কর্তব্যরত পুলিসদের না থাকার সুযোগ নিয়ে সিভিকরা নিজেদের ইচ্ছে মতো টাকা তোলে। যারা টাকা দিতে অস্বীকার করে তাদের মারধর করা হয়। কিছুদিন আগে এক ট্রাকচালকের থেকেও এভাবেই টাকা তোলা হয়েছিল।”

গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চালকের পরিবারের তরফ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। চালকের আত্মীয়েরা বলেন, “এটা কি ধরনের আইন-শৃঙ্খলা? পুলিশের কাজ কি কেবল চোখ বন্ধ করে থাকা? সাধারণ মানুষ কি ন্যায়বিচার পাবে না?” অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় থানার পুলিস বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, “অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনার জেরে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের কি সত্যিই এত ক্ষমতা রয়েছে? তারা কি আইনের ঊর্ধ্বে? প্রশাসনের গাফিলতিতেই কি তারা এতটা বেপরোয়া? তবে এই প্রথম নয়, মালদার বিভিন্ন এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আগেও উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রেই চালকরা লোকলজ্জার ভয়ে বা হয়রানির ভয়ে অভিযোগ দায়ের করেন না, কিন্তু এই ঘটনার পর পরিস্থিতি অন্য মোড় নিতে পারে।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে এবং প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই। স্থানীয় বিজেপি নেতা বলেন, “সিভিকরা এখন নিজেদের পুলিস ভাবতে শুরু করেছে। তাদের হাতে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এর অবসান দরকার। আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা জানান, “যদি কেউ দোষী হয়, সে যে-ই হোক, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বিরোধীরা বিষয়টিকে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা করছে।”

Screenshot 2025 03 08 221157 1 1

এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই বলছেন, “সাধারণ মানুষের জীবন কি তবে এতটাই সস্তা? যদি প্রশাসন সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে জনগণ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।”

মোটের ওপর, মালদার সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ এক গভীর সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করছে, যেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। প্রশাসন কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে এক জখম চালকের কান্না গোটা মালদা জেলাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। জনগণের দাবি, এ ধরনের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments