India vs New Zealand in the Champions Trophy final : রবিবার, ৯ মার্চ, দুবাইয়ের ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচটি ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে, কারণ দুই দলই তাদের সেরা ফর্মে রয়েছে। ভারতীয় দল টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত, যেখানে নিউজিল্যান্ডও তাদের প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে।
ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং কোচ গৌতম গম্ভীর দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। গম্ভীর বলেন, “আমাদের দল অত্যন্ত মনোযোগী এবং আত্মবিশ্বাসী। আমরা জানি ফাইনাল ম্যাচটি কঠিন হবে, কিন্তু আমরা প্রস্তুত।” অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, “ভারত একটি শক্তিশালী দল, তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে প্রস্তুত। আমাদের দলও ফাইনালের জন্য উদগ্রীব।”

দুই দলের মধ্যে আইসিসি ইভেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবসময়ই উত্তেজনাপূর্ণ। ২০১৯ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ভারত বিদায় নিয়েছিল। তবে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করে ফাইনালে পৌঁছেছিল। এই ফাইনাল ম্যাচটি তাই প্রতিশোধ নেওয়ার একটি সুযোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইনআপে বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, কেএল রাহুল এবং অক্ষর প্যাটেল রয়েছেন, যারা টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফরম্যান্স করেছেন। বোলিংয়ে মোহাম্মদ শামি, কুলদীপ যাদব এবং বরুণ চক্রবর্তী তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। নিউজিল্যান্ডের হয়ে রাচিন রবীন্দ্র এবং কেন উইলিয়ামসন সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি করে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বোলিংয়ে মিচেল স্যান্টনার এবং ট্রেন্ট বোল্ট প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখতে সক্ষম।
দুবাইয়ের পিচ সাধারণত স্পিনারদের সহায়তা করে, যা ভারতীয় দলের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে। তবে নিউজিল্যান্ডও তাদের স্পিন আক্রমণ শক্তিশালী করেছে, যা ম্যাচের ভারসাম্য রক্ষা করবে। ম্যাচের দিন আবহাওয়া পরিষ্কার থাকার পূর্বাভাস রয়েছে, তাই পূর্ণ ৫০ ওভারের ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ম্যাচটি হাড্ডাহাড্ডি হবে। ভারতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী বলেন, “দুই দলই তাদের সেরা ফর্মে রয়েছে। ম্যাচটি অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, এবং যে দল কম ভুল করবে, তারাই বিজয়ী হবে।” অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের সাবেক খেলোয়াড় ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম বলেন, “নিউজিল্যান্ডের দলটি অত্যন্ত সুসংগঠিত। তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে সক্ষম, যা তাদের শক্তি।”
ফাইনাল ম্যাচটি শুধুমাত্র দুই দলের জন্য নয়, বরং ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্যও একটি বিশেষ মুহূর্ত। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি দর্শক এই ম্যাচটি উপভোগ করবেন। দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকবেন হাজারো সমর্থক, যারা তাদের প্রিয় দলকে সমর্থন জানাবেন। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে, যা দর্শকদের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।

ফাইনাল ম্যাচের টিকিট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে, এবং স্টেডিয়ামের বাইরে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং কালোবাজারি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। দর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, এই ফাইনাল ম্যাচটি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন ধরে থাকবে। দুই দলের খেলোয়াড়রা তাদের সেরা পারফরম্যান্স প্রদর্শন করবেন, যা ক্রিকেটের সৌন্দর্যকে আরও বৃদ্ধি করবে। এখন শুধু অপেক্ষা রবিবারের, যখন বিশ্ব দেখবে কে হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নতুন চ্যাম্পিয়ন।