Friday, April 18, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যবীরভূমের চার ব্লকে ফাইলেরিয়ার জীবাণু!

বীরভূমের চার ব্লকে ফাইলেরিয়ার জীবাণু!

Filaria germs found in four blocks of Birbhum!:বীরভূমের চারটি ব্লক—খয়রাশোল, দুবরাজপুর, সিউড়ি ও রাজনগর—এ এবার ফাইলেরিয়ার জীবাণু শনাক্ত হয়েছে, যা স্বাস্থ্য দপ্তরকে নতুন করে উদ্বেগে ফেলেছে। সম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উদ্যোগে রাত্রিকালীন শিবিরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যেখানে এই চারটি ব্লককে ফাইলেরিয়া প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের বিষয় হলো, সিউড়ি ১ ব্লকের লাঙ্গুলিয়ায় ৩ জন এবং দুবরাজপুরে ৪ জনের শরীরে ফাইলেরিয়ার জীবাণু ধরা পড়েছে। ফলে সংক্রমণ রুখতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর, ইতিমধ্যেই এই এলাকায় ‘গণ ওষুধ সেবন’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।ফাইলেরিয়া একটি মশাবাহিত রোগ, যা পরজীবী ‘ওয়ুচেরেরিয়া ব্যাঙ্ক্রফটি’ বা ‘ব্রুগিয়া ম্যালায়ি’ দ্বারা সংক্রমিত হয়। সংক্রমিত মশার কামড়ের মাধ্যমে এই রোগ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, এরপর লসিকা গ্রন্থিকে আক্রান্ত করে শরীরের বিভিন্ন অংশে অস্বাভাবিক ফোলা সৃষ্টি করে। এই রোগের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে গোদ (Elephantiasis) এবং হাইড্রোসিল (Hydrocele) প্রধান।

তবে, এবার বীরভূমের এক যুবকের শরীরে পাওয়া গেল ফাইলেরিয়ার এক বিরলতম উপসর্গ।সিউড়ির এক ৩২ বছর বয়সী যুবকের ডান কানের পাশের প্যারোটিড গ্রন্থিতে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, যা চিকিৎসকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। সাধারণত ফাইলেরিয়ার সংক্রমণে পা বা অণ্ডকোষ ফোলা দেখা যায়, কিন্তু মুখের প্যারোটিড গ্রন্থিতে সংক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অর্ণব দত্ত জানিয়েছেন, “এটি একটি বিরলতম ফাইলেরিয়ার কেস। সফল চিকিৎসা করা গেলে এটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হতে পারে।”জেলা প্রকল্প আধিকারিক মৃণাল ঘোষ জানিয়েছেন, “সরকারিভাবে প্যারোটিড ফাইলেরিয়া নিয়ে এখনো কোনো নির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, ফাইলেরিয়া নির্মূলকরণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হবে এবং জনগণকে মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

1608122092 5fd9feec4ad8d 8

ফাইলেরিয়া নির্মূল করতে ‘গণ ওষুধ সেবন’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, যেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওষুধ প্রদান করছেন। সাধারণত ডাইক্লোরোবেনজিমিডাজল এবং আইভারমেকটিনের মতো ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা ফাইলেরিয়ার পরজীবী ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এই কর্মসূচি সফল হলে ভবিষ্যতে বীরভূম থেকে ফাইলেরিয়ার সংক্রমণ অনেকটাই কমতে পারে।এলাকার মানুষ এই সংক্রমণের খবর শুনে আতঙ্কিত হলেও, তাঁরা সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন। সিউড়ির এক বাসিন্দা রবি ঘোষ বললেন, “আগে এই রোগ সম্পর্কে এত কিছু জানতাম না। এখন বুঝতে পারছি, মশার কামড় থেকে বাঁচা কতটা জরুরি। প্রশাসনের এই উদ্যোগ ভালো, তবে আমাদেরও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments