Afghanistan in tough ‘equation’ to reach semis : ক্রিকেটের অনিশ্চয়তার গল্পে আরও একটি অধ্যায় যোগ হলো ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ বি তে। আফগানিস্তানের ভাগ্য এখন নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর। ২৮ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যাওয়ায় আফগানদের সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জিততে পারলেই আফগানিস্তান সরাসরি শেষ চারে চলে যেত, কিন্তু প্রকৃতির খেলায় সব হিসাব ওলটপালট হয়ে গেছে।

শুক্রবার টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ব্যাটিং লাইনআপ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭৩ রানের লড়াই করার মতো স্কোর গড়ে তোলে। রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ট্রাভিস হেড বিধ্বংসী ব্যাটিং করে আফগানদের চাপে ফেলে দেন। মাত্র ১২ ওভারের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া ১০৯ রান তুলে ফেলে, তখনই হঠাৎ করে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও মাঠ খেলার উপযোগী না হওয়ায় ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করা হয়। ফলাফল, দুই দলকেই এক-এক পয়েন্ট দেওয়া হয়, আর এই এক পয়েন্টই সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করে দিল অস্ট্রেলিয়ার। বিপরীতে আফগানিস্তানের নামের পাশে থাকলো মাত্র ৩ পয়েন্ট।
এখন গ্রুপ বি তে অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ইংল্যান্ড প্রথম দুটি ম্যাচেই হারার ফলে তারা ইতিমধ্যেই ছিটকে গেছে টুর্নামেন্ট থেকে। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে রয়েছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের শেষ ম্যাচ। এখানেই আফগানদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। যদি দক্ষিণ আফ্রিকা এই ম্যাচ জিতে, তাহলে তারা সরাসরি সেমিফাইনালে চলে যাবে। কিন্তু যদি ইংল্যান্ড অবিশ্বাস্যভাবে ২০০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পায়, তাহলে আফগানিস্তানের জন্য সুযোগ তৈরি হবে। আর যদি ইংল্যান্ড পরে ব্যাট করে এবং ৮ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায়, তাহলেও আফগানিস্তানের সেমিফাইনালের স্বপ্ন সত্যি হতে পারে।
ক্রিকেট বিশ্বে আফগানিস্তানের উত্থান রূপকথার মতো। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে উঠে এসে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে আফগানরা। ২০২৩ সালের ওডিআই বিশ্বকাপ এবং ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে তারা বড় দলগুলোর সামনে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও তারা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। তবে সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য ভাগ্যের সাহায্য দরকার তাদের।
এই পরিস্থিতিতে আফগান দলের তারকা অলরাউন্ডার রশিদ খান বলেন, “আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছি, কিন্তু কিছু ব্যাপার আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। এখন শুধু অপেক্ষা করতে হবে এবং দেখেতে হবে কী হয়।” দলের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি বলেন, “আমরা চাই ইংল্যান্ড আমাদের জন্য লড়ুক। ক্রিকেটে সবকিছু সম্ভব, আমরা এখন ভাগ্যের ওপর নির্ভর করছি।”

এদিকে, আফগানিস্তানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। তারা চাইছে কোনোভাবে তাদের দল শেষ চারে পৌঁছাক। ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন, “সমীকরণ কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। ইংল্যান্ড যদি ঐতিহাসিক কিছু করতে পারে, তবে আফগানিস্তানের দরজা খুলে যেতে পারে।”
তবে ক্রিকেট শুধুমাত্র অঙ্কের খেলা নয়, এটা আবেগেরও খেলা। আফগানিস্তানের জন্য এই টুর্নামেন্ট শুধু একটি ট্রফির লড়াই নয়, বরং নিজেদের আরও প্রতিষ্ঠিত করার একটি সুযোগ। তাই গোটা ক্রিকেট বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে, এই কঠিন সমীকরণ কি আফগানদের স্বপ্ন সত্যি করতে পারবে? নাকি ভাগ্যের খেলা তাদের হতাশ করবে?