Woman dies while dancing at wedding:বিয়ে মানেই খুশির মুহূর্ত, নাচ-গান, আনন্দ-উৎসব। কিন্তু এই আনন্দ যে কখন শোকে পরিণত হয়, তা কেউই জানে না। এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটল মধ্যপ্রদেশের বিদিশা জেলার এক রিসোর্টে, যেখানে বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচতে নাচতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো ২৩ বছরের তরুণী পরিণীতা জৈনের। মুহূর্তের মধ্যে হাসি-আনন্দ বদলে গেল কান্নার রোলে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরিণীতা ছিলেন পরিবারের অত্যন্ত চঞ্চল ও প্রাণোচ্ছল একজন মেয়ে। তিনি ইন্দোরে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন এবং সদ্য এমবিএ সম্পন্ন করেছিলেন। বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে সবার সঙ্গে তিনি আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। স্টেজের মধ্যে নাচতে নাচতে আচমকাই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে কেউ কিছু বুঝতে পারেননি, ভেবেছিলেন হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বা পা পিছলে পড়েছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের লোকজন ছুটে আসেন এবং তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকদের ধারণা, হৃদরোগেই মৃত্যু হয়েছে পরিণীতা জৈনের। পরিবারের জন্য এটা যেন এক অপ্রত্যাশিত ধাক্কা। মাত্র ২৩ বছর বয়সে হৃদরোগে মৃত্যু—এটা মেনে নেওয়া তাঁদের জন্য খুবই কঠিন। বিশেষ করে যখন কয়েক বছর আগেই তাঁর ছোট ভাই মাত্র ১২ বছর বয়সে একইভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল।
বিয়ের মঞ্চ, যেখানে কয়েক মুহূর্ত আগেও সবাই আনন্দে আত্মহারা ছিলেন, মুহূর্তের মধ্যে সেখানে নেমে এল শোকের ছায়া। পরিণীতার আকস্মিক মৃত্যুতে গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরাও হতবাক হয়ে যান।বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক আত্মীয় বলেন, “আমরা ভাবতেই পারিনি এত আনন্দের মুহূর্তে এমন কিছু ঘটতে পারে। ও তো হাসছিল, নাচছিল, মজা করছিল। হঠাৎ কী হয়ে গেল, কেউ কিছু বুঝতে পারলাম না।”পরিণীতার আকস্মিক মৃত্যু আবারও এক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—আজকাল কমবয়সিদের মধ্যেও কেন এত বেশি হৃদরোগ দেখা যাচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়া, পর্যাপ্ত ব্যায়ামের অভাব এবং জেনেটিক কারণে তরুণদের মধ্যেও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষত, হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এখন আর কেবল বয়স্কদের রোগ নয়, কমবয়সিদের মধ্যেও এটি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।

একজন কার্ডিওলজিস্ট বলেন, “এই ধরনের আকস্মিক মৃত্যু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটে যখন শরীরে থাকা ছোট্ট কোনো অজানা হৃদরোগ হঠাৎ করে প্রকট হয়ে ওঠে। অনেক সময় শরীরে কোনো লক্ষণ দেখা না দিলেও এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই নিয়মিত হার্ট চেকআপ করা খুবই জরুরি।”পরিণীতার মৃত্যুর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই অনেকেই শোকপ্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলছেন, হৃদরোগ সংক্রান্ত সচেতনতা আরও বাড়ানো উচিত।একজন কমেন্টে লিখেছেন, “এই ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক! আমরা কেউ জানি না, আমাদের শরীরে কখন কী হতে পারে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।”অন্য একজন লিখেছেন, “কত কমবয়সে এখন হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে! আমাদের সবাইকে সাবধান হতে হবে। জীবনযাত্রা পরিবর্তন করতে হবে।”