Three homes burned to ashes in devastating fire:দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ বিধানসভার দক্ষিণ পুকুরবেড়িয়া এলাকায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, যেখানে পরপর তিনটি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেল। মঙ্গলবার গভীর রাতে আচমকাই একটি বাড়িতে আগুন লাগে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথমে ধোঁয়া বেরোতে দেখা গেলেও মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বাতাসের জোরে আগুন এতটাই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে পাশের আরও দুটি বাড়িকে গ্রাস করে ফেলে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা প্রথমে নিজেরাই জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন, কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় কাকদ্বীপ থানার পুলিশ এবং দমকল বিভাগকে।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। কিন্তু ততক্ষণে তিনটি বাড়িই সম্পূর্ণভাবে আগুনের গ্রাসে চলে যায়। দমকল কর্মীরা প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন, তবে ততক্ষণে ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ব্যাপক। বাড়ির মালিকরা অসহায়ভাবে দেখেন কীভাবে মুহূর্তের মধ্যে আগুন তাঁদের ঘরবাড়ি গ্রাস করছে। যাঁরা এতদিন ধরে নিজের পরিশ্রমের উপার্জনে ঘর বানিয়েছিলেন, তাঁরা আজ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন।এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পর গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন,
“আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল যে কিছু বোঝার আগেই বাড়িগুলো পুড়ে গেল। প্রথমে মনে হয়েছিল শট সার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে, কিন্তু পরে অনেকে সন্দেহ করছেন গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে যাওয়ার কারণেও এমনটা হতে পারে।”অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একজন বলেন, “আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে গেল। বাড়ির আসবাবপত্র, জামাকাপড়, নথিপত্র—সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মাথা গোঁজার আর কোনও ঠাঁই নেই আমাদের। এখন কোথায় যাবো জানি না।”অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। পুলিশ এবং দমকল বিভাগ যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগতে পারে। তবে স্থানীয়রা মনে করছেন, রান্নাঘরে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ার কারণেও এত বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও প্রশ্ন উঠেছে আগুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। কাকদ্বীপের মতো এলাকায় দমকল ব্যবস্থা যথেষ্ট নেই বলেই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, যদি আরও দ্রুত দমকল পৌঁছে যেত, তাহলে হয়তো এত বড় ক্ষতি হতো না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “গ্রামাঞ্চলে আগুন নেভানোর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।

প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে দমকল ইউনিট থাকা দরকার, যাতে বড় বিপর্যয় এড়ানো যায়।”ঘটনার পর কাকদ্বীপ বিধানসভার বিধায়ক আশ্বাস দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে দাঁড়াবে প্রশাসন। তিনি বলেন, “আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করছি এবং দ্রুত তাঁদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।”এই অগ্নিকাণ্ড আবারও মনে করিয়ে দিল, আগুন নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। গ্রামে যেখানে দমকলের ব্যবস্থা নেই, সেখানে বিকল্প হিসেবে জলাশয় এবং প্রাথমিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখা জরুরি। অন্যথায় ভবিষ্যতে এমন আরও অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।