A beautiful nun is catching the attention of the crowd of pilgrims at the Kumbh Mela:প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভ মেলা প্রতিবারের মতো এবারও লাখ লাখ পুণ্যার্থী, সাধু-সন্ন্যাসী, এবং সাধারণ মানুষের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। তবে এই বছরের মেলায় একটি বিশেষ দৃশ্য সবার নজর কেড়েছে—এক সুন্দরী সন্ন্যাসিনী, যার নাম হর্ষা রিচারিয়া। গেরুয়া বসনে, পবিত্র স্নান পর্বে অংশগ্রহণকারী এই সন্ন্যাসিনী একদিকে যেমন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করছেন, তেমনই তিনি একটি নতুন বার্তা দিচ্ছেন—আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে আধুনিক জীবনের মেলবন্ধন।হর্ষা রিচারিয়া আদতে মধ্যপ্রদেশের মেয়ে। বর্তমানে তিনি উত্তরাখণ্ডে বসবাস করছেন। পেশাগতভাবে তিনি একজন সঞ্চালক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। ইনস্টাগ্রামে তার পোস্ট করা গান, নাচ, এবং নানা রিল তাকে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। তবে, এই মহাকুম্ভ মেলায় হর্ষার রূপান্তর অনেককেই অবাক করেছে। এখন তিনি শুধুমাত্র একজন ইনস্টাগ্রাম স্টার নন, বরং তিনি হয়ে উঠেছেন আধ্যাত্মিকতার প্রতীক।মহাকুম্ভ মেলার পবিত্র স্নানে অংশ নিয়ে হর্ষা বলেন,
“মহাকুম্ভ শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা। এখানে স্নান করলে মানুষের আত্মা শুদ্ধ হয় এবং আমরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা বৃদ্ধি করতে শিখি।”
হর্ষা আরও বলেন যে, তার সন্ন্যাসজীবন তাকে ত্যাগ ও মানবকল্যাণের গুরুত্ব শিখিয়েছে। তিনি তার ভক্তদের মধ্যে এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান যে, আধ্যাত্মিকতা কেবল ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য নয়, এটি সমাজের কল্যাণেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।মহাকুম্ভ মেলা প্রতি ১২ বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালের মেলা শুরু হয়েছে ১০ জানুয়ারি এবং চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জমায়েত হন। স্নান, ধর্মীয় আলোচনা এবং নানা আচার-অনুষ্ঠান এই মেলাকে একটি বিশাল উৎসবের রূপ দেয়।
২০২৫ সালের এই মেলায়, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হওয়ার পর, আরও বেশি পুণ্যার্থী ও পর্যটক সমাগম প্রত্যাশা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তা এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বিশেষ নজর দিয়েছে।হর্ষার মতো একজন জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের আধ্যাত্মিক রূপ দেখে অনেকেই অবাক। তিনি দেখিয়েছেন, আধ্যাত্মিকতা এবং আধুনিক জীবনের মধ্যে একটি সুন্দর সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব। হর্ষার এই পরিবর্তন সমাজের বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।

হর্ষার এক ভক্ত বলেন,
“তার এই পরিবর্তন আমাদের সবাইকে প্রেরণা দেয়। তিনি শিখিয়েছেন কিভাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিকতার প্রয়োগ করা যায়।”মহাকুম্ভ মেলার প্রভাব কেবল ধর্মীয় ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি স্থানীয় অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব ফেলে। অস্থায়ী দোকান, হোটেল, এবং পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রামপ্রসাদ তিওয়ারি বলেন,
“মহাকুম্ভ মেলা আমাদের ব্যবসার জন্য একটি বড় সুযোগ। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এবং পর্যটক এখানে আসেন, যা আমাদের আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।”হর্ষার উপস্থিতি মহাকুম্ভ মেলায় নারীর ক্ষমতায়নের একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি প্রমাণ করেছেন যে, নারী শুধু পারিবারিক জীবনে নয়, আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
হর্ষার বার্তা সমাজে নারীর অধিকারের পক্ষে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ। তার উপস্থিতি নারীদের আরও সাহসী হতে এবং তাদের ক্ষমতা উপলব্ধি করতে অনুপ্রাণিত করছে।মহাকুম্ভ মেলার মতো একটি বিশাল ধর্মীয় এবং সামাজিক সমাবেশ আমাদের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়।