TMC-BJP CONTRO IN DURGAPUR: দুর্গাপুরের সুকান্ত পল্লী এলাকায় নিকাশি নালাকে ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েন। ঘটনা কেন্দ্রে বিজেপি নেত্রী মনীষা শিকদারের একটি ম্যারেজ হল, যার মধ্য দিয়ে গিয়েছে একটি পুরোনো হাইড্রেন। বুধবার সকালে সেই হাইড্রেনের ওপর নির্মাণকাজ চালানোর সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন এবং অভিযোগ করেন, নিকাশি নালা বন্ধ করে নির্মাণকাজ করায় এলাকার জল নিকাশের সমস্যা হতে পারে।
বিজেপি নেত্রী মনীষা শিকদার অবশ্য দাবি করেছেন, জায়গাটি তাঁর এবং তিনি তা টাকা দিয়ে কিনেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি করার জন্যই তাঁকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “আমার জমি বৈধ। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা রাজনীতি করে আমাকে বাধা দিচ্ছেন। এটা শুধুমাত্র বিজেপি করার জন্য।”

এই ঘটনা ঘিরে দ্রুত এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। একদিকে তৃণমূল সমর্থকেরা অভিযোগ করেন, নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে গেলে বর্ষার সময় জল জমে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে, বিজেপি সমর্থকেরা এই ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুর্গাপুর নগর নিগমের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তাঁরা বিজেপি নেত্রীকে নির্দেশ দেন, জমি ও নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি নিয়ে দেখা করতে। আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, যদি জমি বৈধ হয় এবং হাইড্রেন বন্ধ না করা হয়, তবে নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
এই ঘটনার জেরে দুর্গাপুরের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিজেপি নেত্রী নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “এই এলাকায় জল নিকাশের সমস্যা দীর্ঘদিনের। নিকাশি নালা বন্ধ করে যদি নির্মাণ করা হয়, তাহলে এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়বেন। আমরা সাধারণ মানুষের পক্ষে রয়েছি।”
অন্যদিকে, বিজেপি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছে। বিজেপি নেতা সন্দীপ রায় বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক প্রতিহিংসা করে আমাদের কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। এই ঘটনা তারই প্রমাণ।”
এই ঘটনা শুধু স্থানীয় স্তরে সীমাবদ্ধ নেই। দুর্গাপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে এই ধরনের সমস্যা সামাজিক এবং পরিবেশগত প্রভাব ফেলতে পারে। এলাকাবাসীর একাংশ জানিয়েছেন, “নিকাশি নালা বন্ধ হয়ে গেলে বর্ষার সময় জল জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা।”
এই ঘটনার রাজনৈতিক রং আরও স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির পাল্টাপাল্টি মন্তব্যে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার দাবি তুলেছেন। তাঁদের মতে, “এলাকার মানুষের স্বার্থ আগে। রাজনৈতিক দলগুলির উচিত এই বিষয়টি নিয়ে অযথা চাপানউতোর না করে সমাধানের পথ খোঁজা।”
দুর্গাপুর শহরের মতো শিল্পাঞ্চলে নিকাশি নালার মতো বিষয় স্থানীয় পরিবেশ এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর বড় প্রভাব ফেলে। এই ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকারিতা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ববোধকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।