Friday, April 18, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যগঙ্গাসাগরের মেলা স্বস্তির মেলা

গঙ্গাসাগরের মেলা স্বস্তির মেলা

The fair of Gangesagar is a fair of relief: গঙ্গাসাগরের মেলা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি বহু পূণ্যার্থীর জন্য এক আশীর্বাদস্বরূপ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এখানে আসেন মকর সংক্রান্তির পূর্ণ স্নান করতে। এবার সাগরমেলার আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক পরিষেবার একাধিক সুবিধা, যা পূণ্যার্থীদের জন্য মেলাকে আরও বেশি স্বস্তিদায়ক করে তুলেছে।রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, এমনকি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকেও হাজার হাজার পূণ্যার্থী এই মেলায় যোগ দেন। এবছর জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। পূণ্যার্থীদের সুবিধার্থে সাগরতটে ফ্রি মোবাইল ফোন চার্জিং পয়েন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই নতুন পরিষেবা নিয়ে ভক্তরা অত্যন্ত খুশি। রাজস্থানের পূণ্যার্থী রঘুবীর সিং বলেন, “আগে আমাদের ফোন চার্জ করার জন্য অনেক অসুবিধার মুখে পড়তে হতো। এবার এই পরিষেবা পেয়ে আমরা অত্যন্ত স্বস্তিতে রয়েছি।”

এছাড়া মেলায় ডিজিটাল টোকেন সিস্টেম চালু করা হয়েছে, যা ভিড় সামলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি বুথে পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা, এবং নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রথমবারের মতো, পূণ্যার্থীদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আরও সহজ করতে মোবাইল অ্যাপ এবং হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।গঙ্গাসাগরের মেলা শুধুমাত্র ধর্মীয় দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি স্থানীয় অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলে। মেলায় স্থানীয় হস্তশিল্প, খাবারের স্টল এবং পরিবহন সেক্টরে ব্যস্ততা বেড়েছে। মেলার সময় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়, যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আয় বাড়াতে সাহায্য করে। সাগরতটের নিকটবর্তী হোটেল এবং আশ্রমগুলিতেও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে স্থানীয় মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়াও, মেলার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন জানা বলেন, “গঙ্গাসাগর মেলা আমাদের জীবনের একটি বড় অংশ। এটি শুধু পূণ্যার্থীদের জন্য নয়, আমাদের গ্রামবাসীদের জন্যও একটি বড় উৎসব।”মেলায় আসা ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ প্রশাসন এবং কোস্টগার্ড যৌথভাবে কাজ করছে। ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বলয়, এবং চিকিৎসা শিবির স্থাপন সবই এই মেলাকে আরও সুরক্ষিত করে তুলেছে।

1641427759 ganga

অপরদিকে, পরিবেশ সংরক্ষণেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে বেশ কয়েকটি স্থানীয় এনজিও কাজ করছে।গঙ্গাসাগরের মেলা শুধু পূণ্যার্থীদের পূর্ণ অর্জনের স্থান নয়, এটি স্থানীয় ঐতিহ্য, উন্নয়ন, এবং ভক্তদের সঙ্গে প্রশাসনের একযোগে কাজ করার এক অনন্য উদাহরণ। ভক্তদের মুখের হাসি এবং তাঁদের তৃপ্তিই প্রমাণ করে, এই মেলা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি ভারতের সংস্কৃতি এবং ঐক্যের একটি উজ্জ্বল প্রতীক।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments