Surma Para wins over Rocky Bauri’s leg magic : শিশুবাগান অ্যাথলেটিক্স ক্লাব আয়োজিত ২০২৫ সালের নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতা এক উত্তেজনাপূর্ণ অধ্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে গতকাল সুরমা পাড়া বনাম ভারত সংঘ বগরা মধ্যকার খেলা ফুটবলপ্রেমীদের মনে একটি স্মরণীয় দিন হিসেবে থেকে যাবে। বিশু বাগান ফুটবল ময়দানে দর্শকদের ভিড়, ঢাক-ঢোলের আওয়াজ এবং উচ্ছ্বাসে পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর।
দুই দলের খেলোয়াড়রা যখন মাঠে নামেন, তখন তাদের চোখে-মুখে ছিল জয়ের আকাঙ্ক্ষা। খেলার প্রথম থেকেই সুরমা পাড়া ভারত সংঘ বগরার রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে সুরমা পাড়ার স্ট্রাইকার রকি বাউরী মাঠের পরিস্থিতি পাল্টে দেন। খেলার ৫৫ মিনিটে তার দুর্দান্ত ফ্রি-কিক গোল করে দলকে এগিয়ে দেয়। তার পর মাঠে সমর্থকদের উল্লাস যেন এক আনন্দের ঢেউ বয়ে আনে।
এরপর ৭৮ মিনিটে রকি আবারও নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন, যখন ডিফেন্স ভেঙে দ্বিতীয় গোলটি করেন। তার অসাধারণ ড্রিবলিং এবং শারীরিক দৃঢ়তা গোটা ম্যাচে সবার নজর কাড়ে। ২-০ ব্যবধানে ভারত সংঘ বগরাকে হারিয়ে সুরমা পাড়া পরবর্তী রাউন্ডে জায়গা করে নেয়। ম্যাচ শেষে রকি বলেন, “এই জয় শুধু আমার নয়, পুরো দলের। আমাদের কষ্টের ফল আজ মাঠে দেখা গেল। সমর্থকদের ভালোবাসা আমাদের সেরাটা দিতে অনুপ্রাণিত করে।
” এই জয় শুধু সুরমা পাড়ার নয়, পুরো এলাকার গর্বের বিষয়। রানীগঞ্জের মানুষেরা এমন একটি প্রতিযোগিতায় দলকে সমর্থন দিয়ে নিজেদের ফুটবলপ্রেম প্রমাণ করেছেন। বিশু বাগান ফুটবল ময়দানে প্রায় ৫,০০০ দর্শকের উপস্থিতি ছিল, যাদের উৎসাহ পুরো ম্যাচ জুড়ে বিরাজমান ছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ধরনের প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র খেলাধুলার বিকাশে নয়, স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে আশপাশের দোকান ও খাবারের স্টলগুলোতে বিক্রির বৃদ্ধি দেখা গেছে। এই ধরনের ইভেন্টে এলাকার প্রতিভা উঠে আসে, এবং রকি বাউরীর মতো খেলোয়াড়রা সেই প্রতিভার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। রকির অসাধারণ পারফরম্যান্স শুধু স্থানীয় স্তরে নয়, জাতীয় পর্যায়েও তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। তার ফ্রি-কিক এবং বল নিয়ন্ত্রণ দক্ষতা অনেকের মনে করিয়ে দেয় জাতীয় দলের তারকা সুনীল ছেত্রীর কথা।
রানীগঞ্জের ফুটবলপ্রেমীরা আশাবাদী যে, রকি যদি সঠিক দিকনির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণ পায়, তবে তিনি জাতীয় পর্যায়ে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন। শিশুবাগান অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্যই স্থানীয় প্রতিভাদের উৎসাহিত করা। প্রতিযোগিতার জোরে রানীগঞ্জের ফুটবল সংস্কৃতি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এমন ম্যাচগুলি শুধু ক্রীড়াপ্রেমীদের নয়, গোটা এলাকাকে ঐক্যবদ্ধ করে। রকি বাউরীর পায়ের জাদু যেন সুরমা পাড়ার জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তার জয়ের গল্প প্রতিটি উঠতি খেলোয়াড়ের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।