Naga nuns also appeared in Mahakumbh:মহাকুম্ভ মেলা—ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অপার মহিমার প্রতীক। প্রতি ১২ বছরে একবার অনুষ্ঠিত এই মেলা শুধুমাত্র ধর্মীয় তাৎপর্যের কারণে নয়, বরং এটি ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের এক জীবন্ত উদাহরণ। ২০২৫ সালের মহাকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হবে প্রয়াগরাজে। এই মেলা শুরু হয়ে গেছে ১০ জানুয়ারি এবং শেষ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। লক্ষ লক্ষ ভক্ত, সাধু-সন্ন্যাসী এবং নাগা সন্ন্যাসিনী এই মহামেলায় উপস্থিত থাকবেন।মহাকুম্ভ মেলার এক অন্যতম আকর্ষণ হলো নাগা সন্ন্যাসীরা। তবে, এবারের মেলায় বিশেষ চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে নাগা সন্ন্যাসিনীদের উপস্থিতি। এই নারীরা শুধুমাত্র আধ্যাত্মিকতার প্রতীক নন, বরং তারা নারীর ক্ষমতায়নের এক অসাধারণ উদাহরণ। অনেকেই মনে করেন যে, নারীদের এই সাহসী ভূমিকা সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।নাগা সন্ন্যাসিনীদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন। শৈশবেই তারা সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন।
কঠোর তপস্যা, যোগাসন, এবং ধ্যান তাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। এই মেলায় তারা উপস্থিত হয়ে এক অনন্য বার্তা প্রদান করেন—ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতায় নারীর সমান ভূমিকা থাকা উচিত।মহাকুম্ভ মেলা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়; এটি স্থানীয় অর্থনীতির জন্য একটি বিশাল সুযোগ। মেলার সময় লক্ষাধিক তীর্থযাত্রী, দেশি-বিদেশি পর্যটক, এবং সন্ন্যাসীদের সমাগম ঘটে। তবে, মেলার এত বড় আয়োজনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বিশাল দায়িত্ব পালন করতে হয়। স্যানিটেশন, নিরাপত্তা, এবং পরিবহন ব্যবস্থা যাতে মসৃণ হয়, সেদিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।মহাকুম্ভ মেলা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়; এটি স্থানীয় অর্থনীতির জন্য একটি বিশাল সুযোগ। মেলার সময় লক্ষাধিক তীর্থযাত্রী, দেশি-বিদেশি পর্যটক, এবং সন্ন্যাসীদের সমাগম ঘটে।
স্থানীয় হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট থেকে শুরু করে পরিবহন ব্যবস্থা পর্যন্ত এই মেলার ওপর নির্ভরশীল।মহাকুম্ভ মেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো শাহী স্নান। মেলার নির্দিষ্ট দিনে এই শাহী স্নানে অংশগ্রহণ করেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত। তাদের বিশ্বাস, এই স্নান পাপমোচন এবং আধ্যাত্মিক মুক্তি এনে দেয়।মহাকুম্ভ মেলা শুধু ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের জন্যই বিখ্যাত নয়। এটি ভারতের জাতীয় ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো এই মেলাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি প্রদান করে।
এটি ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং বহুত্ববাদের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তরা এখানে একত্রিত হন এবং ধর্মের সীমানা ছাড়িয়ে একে অপরের সঙ্গে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলেন।নাগা সন্ন্যাসিনীদের এই উপস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আধ্যাত্মিকতা এবং ধর্মের ক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণ জরুরি। মেলা শেষে তাদের জীবনধারা এবং বক্তব্য সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।