Saturday, April 12, 2025
Google search engine
HomeUncategorisedট্রাইবেকারে বাজিমাত করলো বাঁশড়া এফসি

ট্রাইবেকারে বাজিমাত করলো বাঁশড়া এফসি

Banshra FC played at Tribeca :শিল্পাঞ্চলের ফুটবল মানচিত্রে আবারো নিজের জায়গা নিশ্চিত করলো বাঁশড়া এফসি। শিশু বাগান অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের উদ্যোগে শিশু বাগান ফুটবল ময়দানে অনুষ্ঠিত নকআউট ফুটবল প্রতিযোগিতার গত শুক্রবারের ম্যাচে বাঁশড়া এফসি এবং মিশন রানীগঞ্জের উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ের সাক্ষী হলো হাজারো দর্শক। ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এই ম্যাচে বাঁশড়া এফসি ট্রাইবেকারে ৪-৩ গোলে মিশন রানীগঞ্জকে পরাজিত করে তাদের দক্ষতা এবং সংহতির প্রমাণ দিল।

প্রথম থেকেই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে ছিল। বাঁশড়া এফসির শক্তিশালী ডিফেন্স এবং মিশন রানীগঞ্জের গতিশীল আক্রমণ পুরো ম্যাচ জুড়ে সমর্থকদের মুগ্ধ করেছে। প্রথমার্ধে দুই দলই একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা পায়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মিশন রানীগঞ্জের স্ট্রাইকার শচীন বাউরি দুর্দান্ত গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। এর ঠিক কয়েক মিনিট পরে বাঁশড়া এফসির ডিফেন্ডার রাহুল কর নাটকীয় এক ফ্রি-কিক থেকে গোল করে ম্যাচ সমতায় ফেরান। নির্ধারিত সময় শেষে ফলাফল দাঁড়ায় ১-১।

ফলাফল নির্ধারণে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। এই পর্যায়ে বাঁশড়া এফসির গোলরক্ষক প্রদীপ মাঝি অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেন। তিনি দুটি গুরুত্বপূর্ণ পেনাল্টি সেভ করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। বাঁশড়া এফসির অধিনায়ক অরুণ পাল বলেন, “এই জয় শুধু দলের নয়, গোটা বাঁশড়া এলাকার মানুষের গর্ব। আমাদের সমর্থকরা সব সময় আমাদের পাশে থেকেছেন। এই জয় তাদের জন্য।”

শিশু বাগান ফুটবল ময়দান শুক্রবার সন্ধ্যায় যেন একটি উৎসবের চেহারা নিয়েছিল। বাঁশড়া এবং রানীগঞ্জ উভয় দলের সমর্থকরা গ্যালারিতে উপস্থিত থেকে তাদের প্রিয় দলকে উৎসাহিত করেন। স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীদের মতে, এমন উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ অনেক দিন দেখা যায়নি। গ্যালারিতে থাকা দর্শক রামেশ্বর দাস বলেন, “আমরা এমন খেলা দেখতে চাই, যেখানে দুই দল নিজেদের সেরাটা দেয়। বাঁশড়া এবং রানীগঞ্জ ঠিক সেটাই করেছে।”

এই জয়ের ফলে বাঁশড়া এফসি আগামী পর্বে প্রবেশ করলো এবং তাদের ফাইনালের স্বপ্ন আরও শক্তপোক্ত হলো। তবে এই জয়ের প্রভাব কেবল খেলার মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়। বাঁশড়া এবং তার আশপাশের এলাকায় এই জয়কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে উৎসব। স্থানীয় তরুণ ফুটবলারদের অনুপ্রাণিত করতে এই জয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে, মিশন রানীগঞ্জ দলের কোচ রমেশ শর্মা বলেন, “আমাদের ছেলেরা তাদের সেরাটা দিয়েছে। এটা ঠিক যে আমরা আজ জিততে পারিনি, কিন্তু আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি গর্বিত। আগামী দিনে আমরা আরও ভালো করে ফিরে আসব।”

বাঁশড়া এফসির এই জয়ের পেছনে রয়েছে দলের দীর্ঘদিনের অনুশীলন, পরিকল্পনা, এবং স্থানীয় মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন। এই ধরনের ম্যাচ শুধু দুই দলের নয়, গোটা এলাকার ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে নতুন উদ্যম সঞ্চার করে। শিশু বাগান অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দিনেও তারা এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় ফুটবল প্রতিভাদের তুলে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

এই জয়ের একটি বড় প্রভাব পড়তে চলেছে স্থানীয় কমিউনিটির উপর। তরুণ প্রজন্ম ফুটবলের প্রতি আরও আগ্রহী হবে এবং পেশাদার ফুটবলে নাম লেখানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করবে। স্থানীয় ক্লাবগুলোও এই সাফল্যের অনুপ্রেরণায় নতুন প্রতিভাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আরও বেশি উদ্যোগী হবে।

ফুটবলের প্রতি মানুষের ভালোবাসা যে বাংলার মাটিতে চিরকাল থাকবে, তার আরেকটি প্রমাণ মিলল শিশু বাগান ফুটবল মাঠের গ্যালারিতে থাকা হাজারো সমর্থকের চিৎকারে। ফুটবল কেবল একটি খেলা নয়, এটি আবেগ, সংস্কৃতি এবং একত্রিত হওয়ার একটি মাধ্যম। বাঁশড়া এফসির জয় কেবল একটি ট্রফি জেতার গল্প নয়, এটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাফল্য অর্জনের একটি অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments