Akhil giri: তৃণমূল কংগ্রেসের ২৮তম প্রতিষ্ঠা দিবসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর বিধানসভা এলাকায় বিজেপির বড় ভাঙন লক্ষ্য করা গেল। কাদুয়া পঞ্চায়েতে আয়োজিত তৃণমূলের এক বিশাল মঞ্চে বিধায়ক অখিল গিরির হাত ধরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিল ৫০টি পরিবার। এই দলবদল তৃণমূলের জন্য যেমন একটি বড় রাজনৈতিক সাফল্য, তেমনই বিজেপির জন্য এটি একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই আয়োজন ছিল কেবল তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের জন্য নয়, বরং এটি ছিল একটি শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্র। প্রাক্তন বিজেপি নেতা অসীম দাস বলেন, “বিজেপির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শেষ। আমরা এখন তৃণমূলের পাশে থেকে কাজ করব।” তাঁর কথায়, বিজেপির কার্যকলাপ এবং মতাদর্শের সঙ্গে একমত না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রামনগর বিধানসভার বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, “বিজেপি থেকে আসা এই পরিবারগুলি তৃণমূলকে আরও শক্তিশালী করবে। নতুন বছরে আমরা নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং তৃণমূল কংগ্রেস সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়া সত্ত্বেও, আমরা আমাদের দলের ভিত মজবুত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন নেতৃত্ব এবং নতুন কর্মীরা সেই প্রচেষ্টাকে বাড়তি শক্তি জোগাবে।”
তৃণমূলের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের কাঁথি সাংগঠনিক সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, কাদুয়া অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নির্লিপ্ত মাইতি এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নেতৃত্ব। প্রায় ৫০০ জনের বেশি তৃণমূল সমর্থক এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপি থেকে তৃণমূলে এই দলবদল রামনগর অঞ্চলের রাজনৈতিক ভারসাম্যকে বদলে দিতে পারে। বিশেষ করে কাদুয়া অঞ্চলে তৃণমূলের সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে। এই দলবদলের ফলে তৃণমূলের মধ্যে নবীন ও প্রবীণ নেতৃত্বের মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, “২০২৫ থেকেই আমাদের ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এই দলবদল আমাদের সেই লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। নতুন কর্মীরা আমাদের দলের নতুন শক্তি।”
বিজেপির নেতারা এই ঘটনায় খুব একটা প্রতিক্রিয়া না দিলেও, তাদের মধ্যে এই দলবদল নিয়ে উদ্বেগ স্পষ্ট। তারা বলছেন, “আমরা নিজেদের সংগঠন নতুন করে সাজিয়ে তুলব এবং এই দলবদল আমাদের পথে কোনো প্রভাব ফেলবে না।” তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এই দলবদল বিজেপির জন্য একটি বড় ধাক্কা।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাফল্য শুধুমাত্র রামনগর বিধানসভা অঞ্চলে নয়, বরং সারা রাজ্যে দলের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনবে। এই ধরনের দলবদল তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের রাজনৈতিক কৌশলকে আরও কার্যকর করবে।