City Center Church in Durgapur was crowded: বড়দিন মানেই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য এক মহা আনন্দের দিন। যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন উদযাপন করতে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে অবস্থিত সেন্ট তেরেসা ক্যাথলিক চার্চে উপচে পড়ল মানুষের ভিড়। বছরের এই সময়ে শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায় নয়, সব ধর্মের মানুষও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। চার্চের ভেতর এবং বাইরের সাজসজ্জা, বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনা, আর বাইরে বসা মেলা—সব মিলিয়ে এই দিনটি দুর্গাপুরবাসীর জন্য এক অসাধারণ উৎসবে পরিণত হয়েছে।সেন্ট তেরেসা ক্যাথলিক চার্চে বড়দিন উপলক্ষে শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। চার্চের ভেতরে যীশুখ্রীষ্টের জীবন তুলে ধরা বিশেষ প্রদর্শনী, আলোকসজ্জা, এবং ক্রিসমাস ট্রি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। চার্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাত ১২টার পর থেকে বিশেষ প্রার্থনা শুরু হয়। ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে আসতে শুরু করেন। চার্চে প্রবেশের জন্য লম্বা লাইন পড়ে, আর ভেতরে প্রবেশ করার পর সবাই প্রভু যীশুর সামনে প্রার্থনায় মগ্ন হন।
চার্চের বাইরেও ছিল উৎসবের আবহ। বসেছে ছোটখাটো মেলা, যেখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার, ক্রিসমাস সজ্জা, এবং শিশুদের জন্য খেলনা পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, “এই সময়টাতে আমাদের ব্যবসা খুব ভালো হয়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে, আর সবাই কিছু না কিছু কেনে।”বড়দিন উপলক্ষে ভিড় সামলানোর জন্য দুর্গাপুর থানার পুলিশ বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করেছে। চার্চের প্রবেশপথে এবং চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “চার্চের ভিড় এবং উৎসবকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”

বড়দিনে সেন্ট তেরেসা ক্যাথলিক চার্চে প্রার্থনা করতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা সুনন্দা দে বলেন, “প্রতি বছর আমরা এখানে আসি। এটি শুধু প্রার্থনার জায়গা নয়, বরং আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জায়গা।” অন্যদিকে, দূরদূরান্ত থেকে আসা এক দর্শনার্থী জানান, “এখানে এসে প্রার্থনা করার অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম। চার্চের পরিবেশ, সাজসজ্জা সবই মনমুগ্ধকর।”বড়দিন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে প্রভু যীশুখ্রীষ্টের জন্ম উদযাপনের দিন। তবে এই উৎসব আজ শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সর্বধর্মের মানুষের মধ্যে আনন্দ ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে এসেছে। চার্চে প্রার্থনার মাধ্যমে মানুষ নিজেদের দুঃখ-কষ্টের কথা ভাগ করে নেন এবং প্রভু যীশুর আশীর্বাদ কামনা করেদুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে বড়দিন উদযাপন শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বড়দিন উপলক্ষে মেলা, দোকানপাট, এবং পর্যটকদের ভিড় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আয় বাড়ায়। চার্চ কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এই উৎসব ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে পালিত হতে পারে।যীশুখ্রীষ্টের জন্মদিন উদযাপন করতে সেন্ট তেরেসা ক্যাথলিক চার্চে মানুষের ভিড় এবং আনন্দের এই ছবি দেখায়, কেমন করে ধর্মীয় অনুষ্ঠান সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে একত্রিত করে। এটি কেবল প্রার্থনার সময় নয়, বরং মিলনের, ভালোবাসার এবং সহানুভূতির সময়।