Australia is dusty Pakistan : অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক গাব্বা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই একেবারে ধুলিস্যাৎ হয়ে গেল বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দল। ওডিআই সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে পরাস্ত করার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের উপর ভরসা ছিল অনেক। কিন্তু সাত ওভারের এই বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া তাদের শক্তি এবং গভীরতা দিয়ে প্রমাণ করল কেন তারা বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা দল। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে নির্ধারিত এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানকে ২৯ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল।

পাকিস্তান টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা পরবর্তীতে তাদের জন্য একেবারে ভুল প্রমাণিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংসের শুরুতেই ঝড় তোলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১৯ বলে ৪৩ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলে তিনি অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৭ ওভারে ৯৩ রানে পৌঁছে দেন। ম্যাক্সওয়েলের এই ইনিংস পাকিস্তানের বোলারদের একেবারে বিধ্বস্ত করে দেয়। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে বারটেল এবং নাথান এলিসও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন, যা পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেয়।
অস্ট্রেলিয়ার ৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের অবস্থা হয়ে যায় একেবারে “ছেড়ে দে রে মা কেঁদে বাঁচি।” সাত ওভারের ম্যাচ হলেও পাকিস্তানের পুরো দল একসময় অলআউট হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে ছিল। বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাদাব খানদের মতো ব্যাটসম্যানরা একের পর এক উইকেট হারাতে থাকেন। পাকিস্তান নির্ধারিত সাত ওভারে ৬৪ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে। ব্যাটসম্যানদের এই ব্যর্থতা সমর্থকদের হতাশা আরও বাড়িয়ে তোলে।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিং লাইনআপ পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের এক মুহূর্তের জন্যও সুযোগ দেয়নি। বারটেল এবং নাথান এলিস দু’জনে মিলে তিনটি করে উইকেট নেন, যা পাকিস্তানের ব্যাটিংকে পুরোপুরি ভেঙে দেয়। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং পরিকল্পনা এবং ফিল্ডিং দক্ষতা পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের জন্য এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে।
এই ম্যাচটি পাকিস্তানের জন্য এক বড়ো শিক্ষা। ওডিআই সিরিজ জয়ের পর পাকিস্তান দল টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ভালো পারফরম্যান্সের আশা করেছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে তাদের ব্যাটিং লাইনআপের এমন বিপর্যয় অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পাকিস্তানের ব্যাটিং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দলের ব্যাটসম্যানদের আরও কৌশলী এবং স্থিতিশীল হওয়া দরকার।
ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম বলেন, “আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারিনি এবং এর জন্যই এই বড়ো হার। তবে আমাদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং পরবর্তী ম্যাচে আরও ভালো পারফরম্যান্স দিতে হবে।”

অস্ট্রেলিয়া এই জয়ের মাধ্যমে তাদের দলের গভীরতা এবং দক্ষতা আবারও প্রমাণ করেছে। বিশেষ করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিধ্বংসী ইনিংস এবং বারটেল-এলিসের বোলিং দাপট তাদের শক্তিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। অস্ট্রেলিয়ার কোচ জানান, “এই জয় দলের মনোবল বাড়াবে এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য আমাদের আরও আত্মবিশ্বাসী করবে। আমাদের দল যেভাবে এই ম্যাচটি খেলেছে, তাতে আমরা খুবই সন্তুষ্ট।”
পাকিস্তানের সমর্থকদের মধ্যে এই হারের পরে হতাশা স্পষ্ট। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে তাদের দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা এই জয় উদযাপন করছেন এবং তাদের দলের প্রশংসা করছেন।
এই ম্যাচটি পাকিস্তানের জন্য একটি সতর্ক সংকেত। আন্তর্জাতিক মঞ্চে শক্তিশালী দলগুলির বিরুদ্ধে জিততে হলে কেবল দক্ষতা নয়, বরং সঠিক পরিকল্পনা এবং মানসিক দৃঢ়তার প্রয়োজন। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার দল প্রমাণ করেছে যে তারা এখনও বিশ্ব ক্রিকেটে শীর্ষে থাকার জন্য যথেষ্ট সক্ষম।