BJP workers protested at Abas alleging corruption: নামখানার বিডিও অফিস চত্বরে চরম উত্তেজনা ছড়াল, যখন আবাস যোজনার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভে সামিল হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবাস যোজনার লিস্ট তৈরিতে চরম অসংগতি রয়েছে। অনেকেরই দাবি, যাঁদের ইতিমধ্যেই পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁদের নাম নতুন বাড়ি পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। এই দুর্নীতির প্রতিবাদে বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে অফিস চত্বরে প্রবেশ করেন এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে দ্রুত তালিকা সংশোধনের দাবি জানান।স্থানীয় বিজেপি নেতা রমেশ পাল বলেন, “এটি সাধারণ মানুষের অধিকার হরণের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। যাঁরা প্রকৃতপক্ষে এই আবাস প্রকল্পের জন্য যোগ্য, তাঁদের নাম বাদ পড়েছে। অথচ যাঁদের বড় বাড়ি রয়েছে, তারাই এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এভাবে আর চলতে পারে না।” স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, প্রকৃত গরিবদের বাদ দিয়ে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা আবাস যোজনার সুবিধা ভোগ করছেন।
অঞ্জনা দাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “আমার স্বামীর রিকশা চালানোর সামান্য রোজগারে কোনো রকমে দিন চলে। আমরা একটি টিনের চালার ঘরে থাকি, অথচ আমাদের নাম নেই তালিকায়। যারা পাকা বাড়িতে থাকে, তাদেরই নাম রয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে বিডিও অফিসে প্রবেশ করেন এবং বিডিওর সাথে সাক্ষাতের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, অবিলম্বে আবাসের তালিকায় দুর্নীতির তদন্ত করতে হবে এবং প্রকৃত যোগ্যদের নাম তালিকায় যুক্ত করতে হবে।
বিক্ষোভের জেরে নামখানা বিডিও অফিস চত্বর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কর্মীদের দাবি ছিল, যতক্ষণ না প্রশাসন সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেবে, তাঁরা সেখান থেকে সরবেন না।অবশেষে নামখানার বিডিও কয়েকজন বিক্ষোভকারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁদের অভিযোগ শোনেন। বিডিও আশ্বাস দেন, “যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের নাম পুনরায় পর্যালোচনা করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ব্লক প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।” এই আশ্বাসের পর বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন এবং বিক্ষোভ স্থগিত করেন।এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তৃণমূল নেতা শ্যামল মণ্ডল বলেন, “বিজেপি শুধু রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য এ ধরনের নাটক করছে। আবাস যোজনার তালিকা সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়েছে।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতারা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “এটি সরকারের ব্যর্থতার স্পষ্ট উদাহরণ।”এই ঘটনার পর স্থানীয় মানুষদের মধ্যে প্রশাসনের প্রতি আস্থা কমেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের দুর্নীতি বন্ধ না হলে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি তালিকা সংশোধন না হয়, তবে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজেপি কর্মীরা জানিয়েছেন, “আমরা এখানে শুধু নিজের জন্য নয়, গরিব মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করছি। যদি প্রশাসন এই দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারে, তবে আমরা আরও বড় আন্দোলন করব।”এই ঘটনা সরকারের জনমুখী প্রকল্পগুলির স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতার ওপর বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রশাসন যদি দ্রুত এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে এর রাজনৈতিক প্রভাবও হতে পারে।