The end of the life of the sun? What NASA said!:পৃথিবীর শক্তির মূল উৎস সূর্য, যে আমাদের জীবনধারণকে সম্ভব করেছে, একদিন তার নিজের জীবনচক্রের শেষ পর্বে পৌঁছবে, আর এই বিষয়টি সম্প্রতি নাসা আরও পরিষ্কার করে জানিয়েছে। পৃথিবী থেকে সূর্যকে প্রায় মাঝবয়সী মনে হলেও, আসলে এ তারকা প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর ধরে শক্তি বিকিরণ করছে। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, এই বিশাল আকাশমণ্ডলীর পরিসরে সূর্যের এখনো প্রায় ৫০০ কোটি বছর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সূর্য ধীরে ধীরে তার নিজের জীবনের শেষের দিকে যাচ্ছে, যখন একদিন এটি আমাদের মতো জীবন-সংলগ্ন গ্রহের অস্তিত্বকেও প্রভাবিত করতে পারে।
কীভাবে শেষ হবে সূর্যের এই জীবনচক্র? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সূর্য তার শক্তির প্রধান উৎস হাইড্রোজেন থেকে ধীরে ধীরে হিলিয়াম উৎপাদন করে, আর এই প্রক্রিয়াতেই প্রচুর শক্তি নির্গত হয়। একদিন, এই হাইড্রোজেনের অভাব ঘটবে, এবং তখন সূর্য এক বিশাল “লাল দৈত্য” তারায় পরিণত হবে। তখন সূর্য তার বৃহৎ আকারে স্ফীত হবে এবং ধীরে ধীরে এর বাইরের স্তরগুলোকে মহাশূন্যে ছড়িয়ে দেবে। এই স্তর হারানোর পর, সূর্যের মূল অংশ সংকুচিত হয়ে এক “শ্বেত বামন” তারায় পরিণত হবে এবং অবশেষে এটি “কালো বামন” নামে পরিচিত একটি ঠান্ডা মহাজাগতিক অবশেষ হয়ে যাবে।
বিজ্ঞানীদের মতে, যদিও এই প্রক্রিয়া কয়েক বিলিয়ন বছর পরে ঘটবে, কিন্তু এটি আমাদের জীবনের ওপর একটি বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে। সূর্য যখন “লাল দৈত্য” পর্যায়ে যাবে, তখন এর ব্যাপক বিকিরণ পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহের উপর বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তবে এর আগেই পৃথিবীর প্রাণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলেই বিজ্ঞানীরা মনে করেন।নাসার তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে পৃথিবীতে আমরা সূর্যের জ্বলন্ত শক্তির ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু আমাদের সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করতে পারবে না। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মহাবিশ্বের বর্তমান বয়সের বিবেচনায় এই ধরণের নক্ষত্রের শেষ পর্ব প্রত্যক্ষ করার জন্য আরও অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে।
আলোচনা প্রসঙ্গে মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. অরিন্দম চক্রবর্তী বলেন, “সূর্যের এই পরিবর্তন পৃথিবীর জীবন চক্রের জন্যও এক বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। মহাবিশ্বে কোনো কিছুর আয়ু চিরকাল থাকে না। কিন্তু আমাদের সৌরজগতে সূর্য একটি বিশাল প্রভাব বিস্তার করে। আর তাই সূর্যের এই ধীর পরিবর্তনও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”মহাবিশ্বের শেষ ও সূর্যের মৃত্যু নিয়ে মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা থাকলেও, এমন ভবিষ্যৎ উপলব্ধি আমাদের জীবন ও মহাকাশ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে মহাজাগতিক ঘটনাগুলি সম্পর্কে জানা সম্ভব হলেও, সূর্যের শেষের সেই দিনের জন্য এখনো অপেক্ষা করতে হবে।