Enforcement team’s market operation continues in Tripura: ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে উদয়পুর মহকুমায়, এনফোর্সমেন্ট টিমের বাজার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বুধবারের বাজারবারে মির্জা বাজারে একটি বড় আকারের অভিযান চালায় খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকদের দল। এই অভিযানে ব্যাপক পরিমাণে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়, যা স্থানীয় জনগণের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। সুরক্ষিত খাদ্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এড়াতে এই পদক্ষেপকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এনফোর্সমেন্ট টিমের নেতৃত্বে ছিলেন মুখ্য খাদ্য পরিদর্শক দেবজ্যোতি চক্রবর্তী, যিনি জানান, “আমরা চেষ্টায় রয়েছি ত্রিপুরার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি বাজারে এমন অভিযান চালিয়ে যাব। জনগণের সুরক্ষায় এই ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।” এছাড়া অভিযানে অংশ নেন খাদ্য দপ্তরের আরও অনেক কর্মকর্তারা, যেমন বাবুল দেবনাথ, লিটন দাস, শেখর মজুমদার ও রাজেশ ভৌমিক। তাঁরা প্রত্যেকেই জনস্বার্থে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জানান।
এই অভিযানের সময় জনৈক ঠাকুর চন্দ্র সাহার দোকানে প্রচুর পরিমাণে মেয়াদ উত্তীর্ণ ভোজ্য তেলের বোতল পাওয়া যায়। এছাড়াও ঐ দোকানে পেঁয়াজের দাম অত্যাধিক রাখা হচ্ছিল, কিন্তু বেশি মূল্য চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানদার কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। আরেক দোকানদার, সংখ্যার মজুমদার, মেয়াদ উত্তীর্ণ পাপড়ের প্যাকেট এবং চা পাতার প্যাকেট বিক্রি করছিলেন। এছাড়া রাম ঠাকুর স্টোর, শ্রী গুরু ভান্ডার এবং মনোরঞ্জন নন্দীর দোকান থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী যেমন চা পাতা, সস এবং কেক উদ্ধার করা হয়। এইসব দোকানদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য খাদ্য দপ্তর এবং ওজন মাপের দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট টিম জানিয়েছে, জনস্বার্থে তারা এমন অভিযান চালিয়ে যাবে এবং সারা ত্রিপুরা জুড়ে বিভিন্ন বাজারে পরিদর্শন চালিয়ে খাদ্য পণ্যের সঠিক মান এবং মূল্য নির্ধারণ নিশ্চিত করবে। মুখ্য খাদ্য পরিদর্শক দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য জনগণের কাছে বিশুদ্ধ এবং সুরক্ষিত খাদ্য পণ্য পৌঁছে দেওয়া। যদি কেউ নিয়ম ভাঙে তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
এই অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দারা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা জানতাম না যে এত মেয়াদ উত্তীর্ণ সামগ্রী আমাদের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য ভীষণ বিপজ্জনক। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ খুব প্রয়োজন ছিল।” স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও অভিযানের ফলে সতর্ক হয়েছেন এবং অনেকেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তারা ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল করবেন না।

এই অভিযান সাধারণ মানুষের জন্য যেমন এক স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে, তেমনি বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এই ধরনের অভিযান চালানো হলে ব্যবসায়ীরা আরও সতর্ক থাকবেন এবং খাদ্য সামগ্রীর মান বজায় রাখতে বাধ্য হবেন। খাদ্য দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী অভিযানে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং সমস্ত দোকানদারদের লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় নথি বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও মহকুমা শাসকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অভিযানের সমস্ত রিপোর্ট বৃহস্পতিবার পেশ করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রশাসন আশাবাদী যে, এই পদক্ষেপগুলি ভবিষ্যতে বাজারে খাদ্য সামগ্রীতে মান বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং মানুষ সুরক্ষিত খাদ্য ক্রয় করতে পারবেন।
ত্রিপুরার বিভিন্ন বাজারে এমন অভিযান চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই ধরনের পদক্ষেপ বাজারের মান উন্নত করতে এবং জনগণের খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। এনফোর্সমেন্ট টিমের এমন প্রচেষ্টা রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে, এবং মানুষ তাদের খাদ্য সামগ্রীর গুণগত মানের বিষয়ে আরও সচেতন হতে উৎসাহিত হবেন।