Queen’s Police to visit Ganj before Chhat Puja : বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে চলা ছট পুজোকে কেন্দ্র করে রানীগঞ্জে চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। ছট পুজো একান্তই ভক্তদের একটি বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেখানে সূর্য দেবতার আরাধনা ও জলাধারে পূজা করে পুণ্যার্থীরা তাঁদের ভক্তি প্রকাশ করে। তবে, এত বড় জনসমাবেশকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তা এবং অন্যান্য ব্যবস্থার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রানীগঞ্জের পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন ছট পুজোর আগে ঘাট পরিদর্শনে নেমেছে, বিশেষ করে বল্লভপুর পঞ্চায়েতের দামোদর নদী, এগারা পঞ্চায়েতের মথুরা চন্ডী, এবং বরদোহি ঘাটে। স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসনের এই উদ্যোগে এলাকাবাসীও ভীষণ সন্তুষ্ট এবং আশাবাদী।
রানীগঞ্জের ডিসিপি-র নির্দেশনায় পুলিশের একটি দল ঘাটগুলি ঘুরে দেখে কী কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করেছেন। ডিসিপি জানান, “ছট পুজোর সময় প্রচুর মানুষ ভিড় জমান, ফলে একটু অসাবধানতা থেকেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমরা সবরকম চেষ্টা করছি যাতে পুণ্যার্থীরা নিরাপদে পুজো করতে পারেন।” প্রশাসন ইতিমধ্যেই ঘাট পরিষ্কারের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে। পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য পুর ও নগর উন্নয়ন দফতর একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে, যার মধ্যে ঘাটের চারপাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত।

এবারের ছট পুজোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও কিছু নতুন সংযোজন দেখা যাচ্ছে। রানীগঞ্জের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটে পুলিশি নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো রাখা হবে, যাতে অপ্রতিকর ঘটনা এড়ানো যায়। বিশেষ করে বল্লভপুর এবং মথুরা চন্ডী ঘাটে প্রচুর ভিড় হয় বলে সেসব স্থানে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। ডিসিপি আরও জানান যে, “ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ফাঁকফোকর থাকলে তা দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।”
প্রসঙ্গত, ছট পুজো রানীগঞ্জ সহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি উৎসব। এই সময় বহু মানুষ বিভিন্ন নদী এবং জলাশয়ের ঘাটে ভিড় জমান সূর্য দেবতার আরাধনা করতে। তবে, জনসমাগমের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় প্রশাসনের তরফে সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এই বছরের বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে ঘাটগুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, যাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারির কাজে সুবিধা হয়।
এই ব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে রানীগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন যেমন পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়, তেমনই পুণ্যার্থীদেরও আবেদন করা হচ্ছে যাতে তাঁরা নিয়ম মেনে চলেন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সহযোগিতা করেন। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, যাতে পুণ্যার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সব সুবিধা উপস্থিত থাকে এবং ভক্তরা নির্বিঘ্নে তাঁদের পূজা-অর্চনা সম্পন্ন করতে পারেন।
রানীগঞ্জের বাসিন্দা মীনা দেবী, যিনি প্রতিবছর ছট পুজোতে অংশগ্রহণ করেন, বলেন, “আমরা অত্যন্ত খুশি যে প্রশাসন এবারে এত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা সবাই নির্বিঘ্নে ছট পুজো করতে পারব বলে আশাবাদী।” এদিকে স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধানও জানান যে, “প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা সবাই একসাথে কাজ করে এলাকাবাসীর জন্য এক সুন্দর ছট উৎসবের আয়োজন করতে চাই।”

পুলিশের এই তৎপরতা শুধু এক বছরের জন্য নয়, ভবিষ্যতেও এর একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন অনেকেই। এমন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে শুধুমাত্র ছট নয়, আগামী দিনের অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবগুলিও নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রানীগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারাও উৎসবে সামিল হচ্ছেন নিরাপত্তার সহিত।
এবছরের ছট পুজোর জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে নজরদারির মাধ্যমে যেকোনো অসুবিধা বা অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। স্থানীয় দোকানদার থেকে শুরু করে পুণ্যার্থী সকলেই প্রশাসনের এমন উদ্যোগে সন্তুষ্ট। অনেকেই মনে করছেন, এই ব্যবস্থাগুলি ভবিষ্যতে অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের জন্যও অনুসরণ করা যেতে পারে।