India’s World Cup campaign started with a loss : মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪-এর প্রথম ম্যাচেই অপ্রত্যাশিতভাবে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলকে। হরমনপ্রীত কৌর নেতৃত্বাধীন এই দল প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হলো পরাজয় দিয়ে। ৪ঠা অক্টোবর, শুক্রবার ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামা নিউজিল্যান্ড দলটি টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই সিদ্ধান্তটি তাদের জন্য সঠিক প্রমাণিত হয়। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক সোফি ডিভাইনের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ভারতীয় বোলারদের বেশ বিপাকে ফেলে দেয়। ৫৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন তিনি, যার ফলে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে নিউজিল্যান্ড ১৬০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর তুলতে সক্ষম হয়।
ভারতীয় দল তাদের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নামতেই ভক্তদের মধ্যে ছিল দারুণ উত্তেজনা। সবাই আশা করেছিল, স্মৃতি মান্ধানা, শেফালি ভার্মা, দীপ্তি শর্মাদের মতো খেলোয়াড়রা দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। তবে মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন হয়ে ওঠে। ১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইনআপ একের পর এক ধসে পড়ে। ওপেনার শেফালি ভার্মা ২ রানে ও স্মৃতি মান্ধানা ১২ রানে আউট হন। অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরও ব্যর্থ হন দলের বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করতে। তাঁর ১৮ রানের ইনিংসটি যথেষ্ট ছিল না। ভারতীয় দল মাত্র ১০২ রানে অলআউট হয়ে যায় এবং নিউজিল্যান্ড ৫৮ রানে বিশাল জয় তুলে নেয়।
এই হারের পর ভারতীয় শিবিরে স্বাভাবিকভাবেই হতাশা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় দল শুরু থেকেই কিছুটা অগোছালো লাগছিল। ওপেনাররা দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ায় চাপের মুখে পড়ে বাকি ব্যাটাররাও নিজেদের স্থির রাখতে পারেননি। দীপ্তি শর্মা ও পূজা ভাস্ত্রাকার কিছুটা চেষ্টা করলেও তা দলের জন্য যথেষ্ট ছিল না। বোলিং বিভাগেও দলটি তেমন কোনো সাফল্য পায়নি। মেঘনা সিং এবং রাজেশ্বরী গায়কোয়াড় কিছুটা লড়াই করলেও ডিভাইন ও সুজি বেটসের মতো ব্যাটারদের সামনে তা যথেষ্ট ছিল না।
ক্রীড়া বিশ্লেষকরা বলছেন, দলগত পারফরম্যান্সের অভাবে ভারতীয় দলকে এই হার দেখতে হয়েছে। ক্রীড়া বিশেষজ্ঞ সুনীল গাভাস্কার মন্তব্য করেন, “এই হারে ভারতীয় দলের মনোবল কিছুটা নষ্ট হয়েছে, তবে এটি শুধুমাত্র একটি ম্যাচ। পুরো টুর্নামেন্ট এখনও বাকি রয়েছে। আশা করছি, পাকিস্তানের বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচে দলটি শক্তিশালীভাবে ফিরে আসবে।”
ভারতীয় দলের জন্য বড় পরীক্ষা আসছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই। কারণ তাদের পরবর্তী ম্যাচ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনার তুঙ্গে থাকা। তবে এই হারের ফলে ভারতীয় দল যে কিছুটা চাপে থাকবে তা স্পষ্ট। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি শুধুমাত্র একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি ভারতীয় দলের জন্য মানসিক দৃঢ়তারও পরীক্ষা।

ভারতীয় দলের প্রধান কোচ রমেশ পাওয়ার এই ম্যাচের আগে দলের ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে কিছু পরিবর্তন আনতে চাইছেন। তিনি বলেন, “আমাদের ব্যাটিং লাইনআপে কিছু নতুন কৌশল আনতে হবে। প্রথম ম্যাচের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা পরবর্তী ম্যাচে ভালো পারফর্ম করার চেষ্টা করব। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের জয় প্রয়োজন, তাই আমরা সবাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করছি।”
এই পরাজয়ের পর ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা হতাশা দেখা গেলেও, তারা এখনও দলের প্রতি আশাবাদী। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের হতাশা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু সেইসঙ্গে দলের পরবর্তী ম্যাচের জন্য শুভকামনাও জানিয়েছেন। মুম্বাইয়ের এক ভক্ত বলেন, “এই হারে আমরা হতাশ, কিন্তু এখনও আশা হারাইনি। ভারতীয় দল শক্তিশালী, এবং আমি নিশ্চিত তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ী হবে।”
এই হারটি অবশ্যই ভারতীয় দলের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে, তবে এটি টুর্নামেন্টের শুরুর দিকের ঘটনা। দলটি যদি তাদের পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ভালো পারফর্ম করতে পারে, তবে এই পরাজয়টি তাদের জন্য বড় কোনো সমস্যা হবে না। তবে এটি স্পষ্ট যে, ভারতীয় দলের ব্যাটিং এবং বোলিং বিভাগে কিছু গুরুতর পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে। পরবর্তী ম্যাচে দল যদি আরও দৃঢ়ভাবে ফিরে আসে, তবে এই হারের প্রভাব কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “এটি টুর্নামেন্টের শুরু, এবং ভারতীয় দল এখনও বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার। তবে তাদের ব্যাটিং লাইনআপে আরও কিছু স্থিতিশীলতা আনতে হবে, বিশেষ করে ওপেনারদের কাছ থেকে ভালো পারফরম্যান্স প্রয়োজন। পরবর্তী ম্যাচগুলোতে দলটির সঠিক কৌশল ও মানসিক দৃঢ়তা প্রয়োজন।”
মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের হারে দলটি কিছুটা চাপের মধ্যে পড়েছে। তবে ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে একদিনের পারফরম্যান্সে কিছুই নির্ধারিত হয় না। এখনও অনেক ম্যাচ বাকি রয়েছে, এবং ভারতীয় দল তাদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী ম্যাচে আরও ভালো পারফর্ম করার আশা রাখে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি ভারতের জন্য একটি বড় পরীক্ষা, এবং সমর্থকরা আশা করছেন, দলটি তাদের সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়ে এই প্রতিপক্ষকে পরাজিত করবে।