CongressWorker Tied to Tree and Beaten toDeath:পুরনো বিবাদের জেরে এক কংগ্রেস কর্মীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এলাকার তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের নাম। জানা গেছে, বুধবার রাতে মানিক রায় নামে এক সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী ময়নাগুড়ির কলোনির বাসিন্দাকে এলাকার তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ জন মিলে গাছে বেধে মারধর করে বলে অভিযোগ। মানিকের স্ত্রী জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের ঝামেলা চলছে। তাঁদের ভয়ে মানিক পরিবার নিয়ে পাঁচ বছর শিলিগুড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পরেই এই ঘটনা। যদিও পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে রাতেই তার মৃত্যু হয়। এদিন মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।। ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোন যোগ নেই বলে দাবি তৃণমূল,বিজেপির।পুরনো বিবাদ কে কেন্দ্র করে এই ঘটনা বলে দাবি।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক ভীতির সঞ্চার হয়েছে। একজন দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখ, যে কিনা তাঁর পরিবারের সুরক্ষার জন্য পাঁচ বছর শিলিগুড়িতে ছিলেন, তাঁর এমন মর্মান্তিক পরিণতি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে গভীর শোকের সঞ্চার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “আমাদের এলাকায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব অনেকদিন ধরেই চলছে। মানিকবাবুর মৃত্যু সেই দ্বন্দ্বেরই ফল। আমরা সবাই আতঙ্কিত।”
অপরদিকে, মানিক রায়ের স্ত্রী জানিয়েছেন, “আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল কর্মীদের অত্যাচার সয়ে আসছিলেন। আমরা শিলিগুড়িতে আশ্রয় নিয়েও শান্তিতে থাকতে পারিনি। মানিক ফিরতেই তাঁকে গাছে বেঁধে এমনভাবে মারা হলো। এটা মানা যায় না। আমরা ন্যায় বিচার চাই।”
পুলিশ জানিয়েছে, “ঘটনার তদন্ত চলছে। পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা আরও তদন্ত করে দেখছি, এর পেছনে আরও কারা জড়িত থাকতে পারে।”
তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়েই দাবি করেছে, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো রাজনৈতিক যোগ নেই। তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, “মানিকবাবুর সাথে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিবাদের ফল।” অন্যদিকে বিজেপির এক প্রতিনিধি বলেন, “আমরা রাজনৈতিক হিংসার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আমাদের দলের কোনো কর্মী জড়িত থাকলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।”
এই ঘটনার ফলে ময়নাগুড়িতে রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা ভয় পাচ্ছেন যে, এই ঘটনা আরও রাজনৈতিক হিংসার জন্ম দিতে পারে। স্থানীয় প্রশাসনও সতর্ক অবস্থানে আছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ঘটনার ভবিষ্যৎ পরিণতি নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন। এক স্থানীয় বিশ্লেষক জানিয়েছেন, “যদি এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে, তাহলে ময়নাগুড়ির শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে। আমাদের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সম্প্রতি যে সহমর্মিতার পরিবেশ ছিল, তা নষ্ট হতে পারে।”
ময়নাগুড়ির এই ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি আমাদের সমাজে রাজনৈতিক হিংসার বিপদ এবং সাধারণ মানুষের জীবনে তার প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে।