2 tourists from Durgapur died after bathing in the sea at Mandarmani:মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে রবিবার বিকেলে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনার ফলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্গাপুর থেকে ছয়জনের এক বন্ধুদের দল মন্দারমণিতে বেড়াতে আসেন। তাঁরা গোল্ডেন বিচ রিসোর্টে উঠেছিলেন। মঙ্গলবার রিসোর্টের কাছাকাছি সমুদ্র সৈকতে স্নান করতে নামেন তাঁরা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় তিনজন তলিয়ে যান। স্থানীয় নুলিয়ারা দ্রুত তাদের উদ্ধারে নামেন এবং পাঁচজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। তবে একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধারকৃতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা কৌশিক মণ্ডল ও সমর চক্রবর্তীর মৃত্যু ঘোষণা করেন।

মন্দারমণি কোস্টাল থানার ওসি দেবব্রত বেরা জানান, “আমরা পর্যটকদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। দেহ দু’টি উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মন্দারমণির সমুদ্রে নামার সময় কলকাতার কয়েকজন পর্যটকের বিপর্যয় ঘটে। সেই ঘটনায় ডুবে এক পর্যটক, নাভেদ আখতার (২৮), মারা যান। এছাড়াও, দুই যুবক সিদ্ধার্থ সাহা ও শেখ আব্দুস আহত অবস্থায় উদ্ধার হন। তাঁরা কলকাতার তালতলা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
আরেকটি অনুরূপ ঘটনা ঘটে গত মে মাসে, যখন রিমেল ঘূর্ণিঝড়ের সময় দিঘায় বেড়াতে এসে এক পর্যটক সমুদ্রে তলিয়ে যান। দুই বন্ধু মিলে দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং ঘটনাটি ঘটে নিউ দিঘার ক্ষণিকা ঘাটে। রিমেল ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমুদ্র আগে থেকেই উত্তাল ছিল। দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা তল্লাশির পর নিখোঁজ যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত যুবকের নাম ছিল প্রকাশ সাউ (২২)।
মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে ঘটে যাওয়া এই ধরণের দুর্ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ জানিয়েছে যে তারা সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। পর্যটকদের উদ্দেশ্যে তাঁরা সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছেন।

এই ধরণের দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন সমুদ্র সৈকতে আরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। নুলিয়াদের আরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং পর্যটকদের সুরক্ষার জন্য আরও নজরদারি বাড়ানো হবে। তবে পর্যটকদেরও সচেতন থাকা এবং সমুদ্রের উত্তাল অবস্থার প্রতি নজর রাখা উচিত।
মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে স্নানের সময় দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্থানীয় প্রশাসন এবং কোস্টাল থানার পুলিশ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এ ধরণের দুর্ঘটনা পর্যটকদের জন্য এক দুঃখজনক ঘটনা হলেও স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর এবং সুরক্ষার পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে।

পরিশেষে, মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের এই বিপর্যয় স্থানীয় জনগণের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ ধরণের দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।