Monday, December 8, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসদীঘায় বর্ষবরনে অলিম্পিকের ধাঁচে হবে আতশবাজি প্রদর্শন

দীঘায় বর্ষবরনে অলিম্পিকের ধাঁচে হবে আতশবাজি প্রদর্শন

Olympic-style fireworks display to be held in Digha on New Year’s Eve : নতুন বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে বাঙালির সেরা সমুদ্রতীর শহর দীঘা যেন নতুন আলোয় ঝলমল করছে। বর্ষবরণকে সামনে রেখে এবার অন্যরকম সাজে, অন্যরকম উৎসবে মেতে উঠছে নিউ দীঘা, ওল্ড দীঘা ও শংকরপুর। প্রতি বছরই পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে এই সময়ে, তবে এ বছর আয়োজনের ব্যাপকতা ও বৈচিত্র দেখে অনেকেই বলছেন—“এ যেন সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানের নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন।

‘দিঘা ফেস্টিভ্যাল’ এবং ‘নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন’-কে ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। চোখ ধাঁধানো আলোর রোশনাইতে সাজছে শহরের প্রতিটি কোণা—রিসোর্ট, হোটেল, সমুদ্রপাড়, বাজার—সবই যেন নতুন দীঘাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে।
নতুন ও পুরনো দীঘার সমস্ত হোটেল মালিকদের নিজের হোটেল সাজিয়ে তুলতে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে পুরো শহরটাই হয়ে ওঠে আলোর উৎসবের মঞ্চ।সবচেয়ে বড় আকর্ষণ নিঃসন্দেহে সমুদ্রের উপর আতশবাজির প্রদর্শনী—যা হবে একেবারে অলিম্পিক বা আন্তর্জাতিক উৎসবের ধাঁচে। দীঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ এবং দিঘা-শংকরপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো সমুদ্রের মাঝে দুটি জলযান অবস্থান করবে, সেখান থেকেই ছুটবে আতশবাজির রঙিন আলো।
৩১ ডিসেম্বর রাত ঠিক ১২টা বাজতেই শুরু হবে এই বিশেষ আতশবাজি প্রদর্শনী। সমুদ্রতীরেও থাকবে আলোর খেলা। ব্যবহৃত হবে দূষণহীন গ্রীন ক্যাকার, ফলে পরিবেশের ওপর প্রভাবও কমবে।

ID%CB%90 Digha Gate at Night

দুদিন ধরে চলা এই উৎসবে হাজির হচ্ছেন নামিদামি শিল্পীরা। থাকছে লাইভ মিউজিক, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান, যার ফলে আগত পর্যটকদের বর্ষবরণ হবে আরও আনন্দমুখর।উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই আন্তর্জাতিক মানের প্রদর্শনী ‘নিউ দীঘা’র আগামী পর্যটন পরিকল্পনারও অংশ। নিরাপত্তা নিয়ে কোনোরকম শিথিলতা থাকবে না। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন, নজরদারি ব্যবস্থা ও সমুদ্রপাড়ে বিশেষ টহল—সবকিছুই নিশ্চিত করা হচ্ছে।দীঘা-শংকরপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সুশান্ত পাত্র জানান, “এই প্রথম সমুদ্রের মাঝে আতশবাজির প্রদর্শনী হতে চলেছে। পরিবেশবান্ধব আতশবাজি দিয়ে আমরা এমন এক অভিজ্ঞতা দিতে চাই যা পর্যটকরা সারা জীবন মনে রাখবেন।”

দীঘার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এর ফলে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভিড় চোখে পড়ার মতো বাড়বে। রেস্তরাঁ মালিকরা থেকে শুরু করে হোটেল, অটোচালক—সবাইই আশা করছেন এবার আয় হবে আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, দীঘার এই পরিবর্তন ও উন্নয়ন শহরের ভাবমূর্তি বদলে দেবে। জগন্নাথ মন্দির তৈরি হওয়ার পর থেকেই শহরে পর্যটনের নতুন দিগন্ত খুলেছে, এবার বর্ষবরণ উৎসব সেই পথকে আরও উজ্জ্বল করবে।

দীঘাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে আরও উঁচুতে তোলার প্রকৃত সুযোগ তৈরি হচ্ছে এ বছরের বর্ষবরণ উৎসবকে কেন্দ্র করে। সমুদ্রের উপর আতশবাজির প্রদর্শনী ভারতের সমুদ্রতীরবর্তী শহরগুলোর মধ্যে অনন্য উদ্যোগ।
এতে যেমন বাড়বে পর্যটকের আকর্ষণ, তেমনই বাড়বে আয়ের সম্ভাবনাও। দূষণহীন গ্রীন ক্যাকার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত পরিবেশবান্ধব পর্যটনের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই আয়োজন সফল হলে ভবিষ্যতে দীঘা আরও বড় আকারে আন্তর্জাতিক উৎসব আয়োজন করতে পারবে। নববর্ষের পাশাপাশি বড়দিনের সময়ও এখানকার পর্যটন আরও জমে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী দিনে দীঘা শুধুমাত্র ছুটি কাটানোর জায়গা নয়—বরং ‘ইভেন্ট ট্যুরিজম’-এর বড় কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। আলোকসজ্জা, শিল্পীদের পরিবেশনা, আর সমুদ্রের নীল জলে রঙিন আতশবাজির আলো—দীঘার বর্ষবরণ উৎসব এ বছর নিঃসন্দেহে নতুন ইতিহাস গড়তে চলেছে। পর্যটক, স্থানীয় মানুষ এবং প্রশাসন—সবাই মিলেই এক অনন্য উৎসবের অপেক্ষায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments